আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৭৫ শতাংশে পৌঁছাবে
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ৩০ জুন ২০২৪, ০০:০৫
আগামী অর্থবছর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬.৭৫ শতাংশ এবং মধ্যমেয়াদে ৭.২৫ শতাংশে পৌঁছাবে বলে সংসদে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। তিনি বলেন, আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট আমরা এমন এক সময়ে প্রণয়ন করছি যখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য সংকটসহ নানা বৈশ্বিক সঙ্কটের কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও মূল্যস্ফীতিসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে। তাই এবারের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণসহ সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নকে আমরা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছি। এ ছাড়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নেমে আসবে আগামী অর্থবছর।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে গতকাল অনুষ্ঠিত বাজেট অধিবেশনে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সমাপনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে মুদ্রানীতিতে ইতোমধ্যে সঙ্কোচনমূলক নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। নীতি সুদহার (রেপো) উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। ব্যাংক সুদের হার সম্পূর্ণরূপে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। তা ছাড়া রফতানি উৎসাহিতকরণ এবং প্রবাস আয়ে গতি সঞ্চারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডলারের বিনিময় হারের ক্ষেত্রে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি প্রবর্তন করা হয়েছে। মুদ্রানীতির সঙ্কোচনমূলক উদ্যোগের সাথে সঙ্গতি রেখে আমরা রাজস্ব নীতিতেও সহায়ক নীতিকৌশল অবলম্বন করেছি। আমাদের গৃহীত এসব নীতি-কৌশলের ফলে আশা করছি আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থমন্ত্রী সংসদে বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে সঙ্কোচনমূলক নীতি গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা থাকলেও এ কথা অনস্বীকার্য যে দীর্ঘমেয়াদে এ পন্থা অবলম্বন করা হলে প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়ে যেতে পারে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে আমাদের প্রয়োজন ধারাবাহিক উচ্চ প্রবৃদ্ধি। এমতাবস্থায়, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন এবং প্রবৃদ্ধির গতি ধরে রাখা- এ দু’টি আপাতত বিপরীতমুখী লক্ষ্যের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার কঠিন চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে আমরা এবারের বাজেট প্রণয়ন করেছি।
সমাপনী বক্তব্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে ইতোমধ্যে আমরা নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। গত দেড় দশকে জিডিপির গড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬.৭ শতাংশেরও বেশি। জিডিপির মানদণ্ডে ২০২৩ সালের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৩তম বৃহৎ অর্থনীতি। এই ভিত্তির উপর ভর করে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘উন্নত-সমৃদ্ধ-স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার সাজিয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের তুলনায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মোট বরাদ্দ বৃদ্ধির হার ১১.৬ শতাংশ হলেও শিক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং স্বাস্থ্য খাতে বাড়ানো হয়েছে ৩৯ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্য নিয়ে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইত্যাদি খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ প্রদানের চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপর আমরা যথাযথ গুরুত্ব প্রদান করেছি। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) মাধ্যমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছি। তা ছাড়া, ব্যবসা সহজীকরণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়ন কর্মসূচি এর অধীনে আগামী ২০২৪-২৫ থেকে ২০২৬-২৭ পর্যন্ত সময়ে ১১০টি সংস্কার বাস্তবায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা