১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

১০ বছর পর ফাইনালের স্বপ্নে বিভোর ভারত

-


চতুর্থবারের মতো টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলার লক্ষ্য নিয়ে আজ দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড। অন্য দিকে ১০ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুবর্ণ সুযোগ ভারতের সামনে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২০১৪ সালের পর আবারো ফাইনাল খেলতে মরিয়া টিম ইন্ডিয়া। আজ গায়ানার প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে ম্যাচটি।
এখন পর্যন্ত টি-২০তে ২৩ বার মুখোমুখি হয়েছে ভারত-ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ভারতের জয় ১২ ম্যাচে। ইংল্যান্ডের ১১। বিশ্বকাপের মঞ্চে জয় ও হারের দিক দিয়ে দুই দলই সমান সমান। চারবারের দেখায় দু’টি করে জয় পেয়েছে ভারত ও ইংল্যান্ড।
২০০৭ সালে শুরু হওয়া টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম আসরেই চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ রানে হারিয়েছিল তারা। এরপর ২০১৪ সালে বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপের ফাইনালে শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় টিম ইন্ডিয়া। ২০১৪ সালের পর দু’বার সেমিফাইনালে উঠলেও আর কখনো টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারেনি ভারত। ১০ বছর পর আবারো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ভারতের সামনে।

এ সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না ভারত। দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেন, ‘দীর্ঘ দিন পর ফাইনালে খেলার সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের সামনে। এ সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া করতে রাজি নই আমরা। ফাইনালে খেলার লক্ষ্য নিয়েই সেমির লড়াইয়ে নামবে দল।’
২০২২ সালে বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরের সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে ফাইনাল খেলার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ভারতের। ইংলিশদের কাছে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হেরেছিল তারা। প্রথমে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৬৮ রান করে ভারত। জবাবে ৪ ওভার বাকি রেখে বিনা উইকেটে টার্গেট স্পর্শ করে ইংল্যান্ড।
টানা দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে ইংল্যান্ডকে পেয়েছে ভারত। আগের আসরে ইংল্যান্ডের কাছে হারের প্রতিশোধ নেয়ার দারুণ সুযোগ এখন ভারতের সামনে। কিন্তু প্রতিশোধ নিয়ে ভাবতে রাজি নন রোহিত। প্রতিপক্ষ কে, সেটিও ভাবতে চান না তিনি, ‘আমরা আলাদা কিছু করতে চাই না। যে ক্রিকেট খেলছি সেটিই খেলতে চাই। কে প্রতিপক্ষ সেটি দেখার দরকার নেই। ছেলেদের বলেছি, চাপ না নিয়ে নিজেদের মতো খেলতে। এই রকম ক্রিকেট খেললেই আমরা সফল হবো।’

বিশ্বকাপের গ্রুপ ও সুপার এইট পর্বে দারুণ দাপট দেখিয়েছে ভারত। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচ ও সুপার এইট পর্বে তিন ম্যাচ জিতেছে তারা। গ্রুপ পর্বে ভারতের একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। আগের ম্যাচগুলোর মতো পারফরম্যান্স করতে পারলে, ইংল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হারানোর ব্যাপারে আশাবাদী রোহিত। তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত পুরো টুর্নামেন্টেই আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। ছেলেরা কোনো রকম চাপ নেয়নি। মাঠে নিজেদের সেরাটা দিতে মরিয়া ছিল তারা এবং ঠিকঠাক সেগুলোর বাস্তবায়নও করেছে। আশা করি, সেমিতেও একই টার্গেট থাকবে।’
২০১০ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের তৃতীয় আসরে প্রথমবারের মতো ফাইনালে খেলার সুযোগ পেয়ে শিরোপা ঘরে তুলে ইংল্যান্ড। শিরোপানির্ধারণী ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়েছিল ইংলিশরা। এরপর ২০১৬ সালের আসরে ফাইনালে উঠলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ৪ উইকেটে হেরে যায় ইংল্যান্ড। মূলত ম্যাচের শেষ ওভারে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ের সামনে হারে ইংলিশরা। শেষ ওভারে ১৯ রানের প্রয়োজনে ইংল্যান্ডের পেসার বেন স্টোকসের প্রথম চার বলে চার ছক্কায় ২৪ রান তুলে উইন্ডিজকে শিরোপা এনে দেন ব্র্যাথওয়েট।
২০২২ সালে তৃতীয়বারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠে ইংল্যান্ড। নিজেদের তৃতীয় ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারায় ইংলিশরা। তাই ২০১০, ২০১৬ ও ২০২২ সালের পর চতুর্থবারের মতো বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার সুযোগ ইংল্যান্ডের সামনে। ফাইনালে খেলার লক্ষ্য সেমিফাইনালে জয় ছাড়া অন্য কিছুই ভাবছে না ইংলিশরা। দলের অধিনায়ক জশ বাটলার বলেন, ‘আমাদের সামনে চতুর্থ ফাইনাল খেলার সুযোগ। মনস্তাত্ত্বিক এ খেলায় নার্ভ যারা সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারবে তাদেরই সুযোগ রয়েছে ফাইনালে যাওয়ার। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে সুযোগটি ইংলিশদের কেউ মিস করতে চাইবে না। ফাইনালে যেতে দলের সবাই মুখিয়ে আছে।’

তবে এবারের বিশ্বকাপের শুরুটা ভালো হয়নি ইংল্যান্ডের। গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল তারা। কিন্তু ভাগ্যের জোরে গ্রুপ পর্বের বাধা টপকাতে পারে ইংলিশরা। গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম দুই ম্যাচে স্কটল্যান্ডের সাথে বৃষ্টির কারণে পয়েন্ট ভাগাভাগি এবং অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে মহাবিপদে পড়ে। পরের দুই ম্যাচ জিতে সুপার এইটে খেলার লড়াইয়ে ফিরে। ৪ ম্যাচে ৫ পয়েন্ট ছিল তাদের। একই অবস্থা ছিল স্কটল্যান্ডেরও। কিন্তু রান রেটে এগিয়ে থাকায় সুপার এইটে জায়গা করে নেয় ইংলিশরা। এই পর্বেও চাপে পড়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু নিজেদের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হেরে যাওয়ায় সেমির টিকিট পায় তারা। তবে আগের ম্যাচগুলো নিয়ে ভাবতে চান না ইংল্যান্ডের অধিনায়ক বাটলার। ‘গ্রুপ পর্ব ও সুপার এইটের ম্যাচ এখন অতীত। আমরা সামনের ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। সেমিফাইনালে বাধা টপকাতে ভারতের বিপক্ষে নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে চাই। কাজটি কঠিন হলেও সেরা ক্রিকেট খেলার সামর্থ্য ও যোগ্যতা আমাদের আছে।’
একটা বড় ফ্যাক্টর হতে পারে আবহাওয়া। ভেস্তে যেতে পারে দ্বিতীয় সেমিফাইনালটি। বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা-আফগানিস্তান ম্যাচে রিজার্ভ ডে রাখা হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে রাখা হয়নি কোনো রিজার্ভ ডে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে গায়ানায় ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচে ৮৮ শতাংশ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। দ্বিতীয় সেমিফাইনালে রিজার্ভ ডে রাখেনি রাখা না হলেও ওই ম্যাচের জন্য অতিরিক্ত ৪ ঘণ্টা ১০ মিনিট রেখেছে আইসিসি। ভারত-ইংল্যান্ড ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলে সুবিধা পাবে টিম ইন্ডিয়া। কারণ সুপার এইটে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠেছে ভারত। সুপার এইটে গ্রুপ রানার্সআপ হয়েছে ইংল্যান্ড। এ জন্য খেলা পরিত্যক্ত হলে ফাইনালে খেলবে ভারত।


আরো সংবাদ



premium cement
ভারতে মা ও শিশুদের মৃত্যুকে বাংলাদেশে হিন্দু নির্যাতন বলে প্রচার বিপরীত মেরুতে দাঁড়িয়ে মাহমুদউল্লাহ-লিটন দাস চেন্নাইয়ের হাসপাতালে আগুন, মৃত্যু শিশুসহ ৬ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌ-রুটে ৬ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল শুরু শহীদ দেলোয়ারের কবর ছুঁয়ে প্রতিদিনই আর্তবিলাপ করেন মা টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি! টি-টোয়েন্টি সিরিজের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা ওয়েস্ট ইন্ডিজের তেঁতুলিয়ায় মৌসুমের সর্বনিম্ন তাপমাত্রার রেকর্ড রাশিয়ার চেচনিয়া অঞ্চলে ইউক্রেনের ড্রোন আঘাত : দাবি করছেন চেচনিয়ার নেতা এবার ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাবে ইসরাইল! পাকিস্তান দলের দায়িত্ব ছাড়লেন গিলেস্পি

সকল