ভারতের সাথে রেল ট্রানজিট চুক্তি বাতিলের দাবিতে আইনি নোটিশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৭ জুন ২০২৪, ০১:০৪
বাংলাদেশের সাথে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সংযোগকারী রেল ট্রানজিট সমঝোতা চুক্তি বাতিলের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। রেল মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে। গতকাল বুধবার রেজিস্ট্রি ডাকে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো: মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠান।
আইনি এ নোটিশে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রণীত সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয় নীতি অনুসরণ করে আসছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সংঘাত ও সহিংসতা থেকে নিজেকে সুরক্ষার জন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলোর সাথে ব্যালেন্স অব পাওয়ার নীতি অনুসরণ করে আসছে। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারের সাথে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের রেল ট্রানজিট সংক্রান্ত সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে বাংলাদেশের ব্যালেন্স অব পাওয়ার নীতি হুমকির মুখে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে ভারতের অভ্যন্তরীণ সংঘাতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণœ হওয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে চীনের সাথে বাংলাদেশের সামরিক সংঘাতের ঝুঁকি দেখা দিয়েছে।
নোটিশে বলা হয়েছে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর অবস্থা স্বাভাবিক নয়। সেখানে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী রয়েছে যারা ভারত থেকে স্বাধীনতা চায়। এছাড়া ভারতের অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে চীনের সাথে ব্যাপক বিবাদ রয়েছে। অরুণাচল প্রদেশ নিয়ে ভারত ও চীনের নিয়মিত সংঘাত লেগেই থাকে এবং ইতোপূর্বে ভারত ও চীনের যুদ্ধ হয়েছে। এসব কারণে ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে দ্রুত সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট প্রয়োজন।
নোটিশে আরো বলা হয়েছে, মূলত সামরিক সরঞ্জাম পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট ভারতের প্রয়োজন। ভারতের শিলিগুড়ি করিডোরের খুব কাছেই চীন ও ভুটান সীমান্ত অবস্থিত। সেখানে ডোকলাম নামক অঞ্চলে চীন সামরিক ঘাঁটিসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করছে। এই কারণে এই ডোকলাম নিয়ে ২০১৭ সালে ভারতের সাথে চীনের সংঘাত শুরু হয়। এসব কারণে ভারতের আশঙ্কা, ভবিষ্যতে ভারত ও চীন বড় ধরনের যুদ্ধে জড়ালে চীনের সামরিক বাহিনী ভারতের এই শিলিগুড়ি করিডোরে আক্রমণ করতে পারে এবং এই করিডোর বন্ধ করে দিতে পারে।
যার ফলে ভারত তার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোতে সামরিক সরঞ্জাম যথাযথভাবে পাঠাতে পারবে না। এসব দিক বিবেচনা করে, ভারত সম্পূর্ণ সামরিক কারণে বাংলাদেশের রেল ট্রানজিট ব্যবহার করতে চাচ্ছে। এই চুক্তি বাস্তবায়ন হলে, ভবিষ্যতে ভারত ও চীন যুদ্ধে জড়ালে চীনের সামরিক বাহিনী ভারতের সামরিক সরঞ্জামের জোগান বাধাগ্রস্ত করার জন্য বাংলাদেশের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে পারে। ফলে ভবিষ্যতে চীন ও ভারতের যুদ্ধে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন হবে এবং অগণিত নাগরিকদের জীবন দিতে হবে।
তাই আইনি নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এই রেল ট্রানজিট সমঝোতা চুক্তি বাতিলের অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা