দুদকের তদন্ত দ্রুত শেষ করার তাগিদ
- শামছুল ইসলাম
- ১৬ জুন ২০২৪, ০০:০৫
দুর্নীতি দমন কমিশনে দায়েরকৃত অভিযোগসমূহের তদন্ত/অনুসন্ধান যথাসম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করার তাগিদ দিয়েছে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এটি করা সম্ভব হলে দুর্নীতি প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ও লক্ষণীয় ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন তারা। গত ৩-৬ মার্চ অনুষ্ঠিত জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সপ্তম কার্য অধিবেশনে মাঠ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এমন প্রস্তাব করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের সপ্তম কার্য অধিবেশনে দুর্নীতি দমন কমিশন সম্পর্কিত বিষয়াবলির এই অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব খোরশেদা ইয়াসমীন। এতে সভাপত্বি করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন।
সভায় পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ের দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটিতে সদস্য নির্বাচনের বিষয়ে অনেক ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকরা অবহিত থাকেন না। কমিটিতে উপযুক্ত সদস্য নির্বাচনের উদ্দেশ্যে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের মতামত গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা যেতে পারে।
ফেনীর জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির কার্যক্রমকে জোরালো করার জন্য কার্যপরিধি অধিকতর সুনির্দিষ্ট করে দেয়া যেতে পারে।
ভোলা জেলা প্রশাসক বলেন, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি অধিকতর কার্যকর করার জন্য জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে কমিটি গঠনের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দুর্নীতি বিরোধী কার্যক্রম অধিকতর জোরালো ও দৃশ্যমানকল্পে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।
জামালপুরের জেলা প্রশাসক বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে দুদকের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত সততা স্টোরগুলোর কার্যক্রম আগের মতো পরিলক্ষিত হয় না। বিভিন্ন এলাকায় যে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বা কার্যক্রম পরিচালিত হয় সেগুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা এবং গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা প্রয়োজন ।
মাগুরার জেলা প্রশাসক বলেন, অনেক সময় দুদকের বিভিন্ন মামলায় এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটকে সাক্ষী হিসেবে ডাকা হয়। জেলা প্রশাসককে অনুলিপি প্রদান না করায় তারা এ বিষয়ে অবগত থাকেন না। এ ধরনের সমন বা পত্রে জেলা প্রশাসককে অনুলিপি প্রদান করা যেতে পারে।
ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার বলেন, দুদকে দায়েরকৃত অভিযোগসমূহের তদন্ত/ অনুসন্ধান যথাসম্ভব দ্রুত সম্পন্ন করা সম্ভব হলে তা দুর্নীতি প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য ও লক্ষণীয় ভূমিকা পালন করবে।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার বলেন, ভূমি ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট সব অফিস শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত করা সম্ভব না হলেও তা নির্মূলে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। বর্তমানে বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, বরিশালে ভূমি ব্যবস্থাপনার সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ৩০-৩৫টি বিভাগীয় মামলা চলমান রয়েছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি হ্রাস পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেন, বিশ্বের কোথাও কেউ দুর্নীতিকে সমর্থন করে না। এমনকি যে দুর্নীতি করে সেও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে। সরকারের লক্ষ্য দুর্নীতি যতটা সম্ভব কমিয়ে আনা। ঘুষ, অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার, অর্থ আত্মসাৎ, সরকারি কর্মচারী কর্তৃক জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণা এক কথায় এই অপরাধগুলোকে দুর্নীতি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দুর্নীতি দমন কমিশন তার কার্যক্রম পরিচালনায় স্বাধীন। কমিশনের ১১টি কার্যাবলী আছে, ৬টি প্রতিরোধমূলক ও ৫টি প্রতিকারমূলক।
তিনি বলেন, জেলায় সরকারের প্রতিনিধি হচ্ছেন জেলা প্রশাসক। দুর্নীতি প্রতিরোধে তাদের সরাসরি সম্পৃক্ততা রয়েছে। দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত অনুষ্ঠানসমূহে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সম্পৃক্ত থেকে সহযোগিতা করবেন। গণশুনানি আয়োজনে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। তিনি বলেন, সার্ভিস সেক্টরগুলোতেই বেশি দুর্নীতি হচ্ছে। গণশুনানিগুলোতে ভূমি রেজিস্ট্রেশন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, ভূমি অধিগ্রহণ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ এ সব সেক্টরের অভিযোগ বেশি পাওয়া যায়। এ সব সেক্টরে দুর্নীতি প্রতিরোধে অধিকতর কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করেন তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা