বেনজীর আহমেদের আরো সম্পত্তি জব্দের নির্দেশ
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৩ জুন ২০২৪, ০০:০০
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, তার স্ত্রী জিশান মির্জা এবং বড় মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর ও ছোট মেয়ে তাহসিন রাইসা বিনতে বেনজীরের নামে থাকা আরও বিভিন্ন সম্পত্তির দলিল, ঢাকায় ফ্ল্যাট, সিটিজেন টেলিভিশন ও কোম্পানির শেয়ার জব্দের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুদকের অনুসন্ধানকারী টিমের প্রধান উপ-পরিচালক মো: হাফিজুল ইসলামের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এই আদেশ দিয়েছেন। যার মধ্যে রূপগঞ্জে ২৪ কাঠা জমি, উত্তরায় ৩ কাঠা জমি, বাড্ডায় ৩৯.৩০ কাঠা জমির ওপর ২টি ফ্ল্যাট, বান্দরবান জেলায় ২৫ একর জমি (লিজ), স্ত্রী জিশান মির্জার নামে বাদাবরানার পিসি কালচার এলাকায় ৬টি ফ্ল্যাট স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক করা হয়েছে। এ ছাড়া গুলশানে বাবার কাছ থেকে পাওয়া ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’ মূলে সম্পত্তিতে ৬ তালা ভবন, সিটিজেন টিভিতে শেয়ার ও টাওয়ার অ্যাপারেলস (গার্মেন্টসে) শেয়ার অস্থাবর জমি ফ্রিজ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া সিটিজেন টেলিভিশনের শেয়ারসহ কোম্পানির শেয়ার জব্দের আদেশ হয়েছে। এর আগে গত ৬ জুন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী সন্তানদের জব্দকৃত সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার বা তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আসসামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।
দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বেনজীর আহমেদ ও তার স্ত্রী সন্তানদের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোকের আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। এ সম্পত্তির মধ্যে গুলশানের চারটি ফ্ল্যাট ছাড়া অন্যসব স্থাবর সম্পত্তি রিসিভার নিয়োগের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত সম্পত্তি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য রিসিভার নিয়োগের জন্য অনুমতি দিয়েছেন। এ ছাড়া গুলশানের চারটি ফ্ল্যাটের সার্বিক অবস্থা জানাতে আজ নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পূর্ণাঙ্গ তথ্য জানার পর এসব ফ্ল্যাট দেখভালের জন্য তত্ত্বাবধায়ক নিয়োগ দেবেন আদালত।
পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জানান, গোপালগঞ্জে থাকা ২৮টি পুকুর দেখভালে জেলার মৎস্য কর্মকর্তাকে নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। কক্সবাজারের সম্পত্তি দেখভালে জেলা প্রশাসককে আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রিসিভারের কাজ কী হবে সে বিষয়ে দুদকের এই আইনজীবী বলেন, যাকে রিসিভার নিয়োগ দেয়া হবে। তিনি মূলত ক্রোক করা সম্পত্তিগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। ওই সম্পত্তির আয়-ব্যয়ের হিসাব একটা নির্দিষ্ট সময়ে আদালতকে জানাবেন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী সময়ে ওই সম্পত্তি বাজেয়াপ্তও করা হতে পারে। তখনো রিসিভার আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করবেন বলে জানান দুদকের পিপি মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। এর আগে গত ২৩ ও ২৬ মে দুই দফায় বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের ৬২১ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমির মালিক বেনজীরের স্ত্রী জিশান মির্জার। তার নামে প্রায় ৫২১ বিঘা জমি খুঁজে পেয়েছে দুদক। বাকি ১০০ বিঘার মতো জমি রয়েছে বেনজীর, তার তিন মেয়ে ফারহিন রিশতা বিনতে বেনজীর, তাহসিন রাইশা বিনতে বেনজীর ও জারা জেরিন বিনতে বেনজীর এবং আত্মীয় আবু সাঈদ মো: খালেদের নামে।
এ ছাড়া বেনজীর আহমেদের স্ত্রী জিশান মির্জার নামে মাদারীপুরের সাতপাড় ডুমুরিয়া মৌজায় ২৭৬ বিঘা জমি পাওয়া গেছে বলে দুদক জানায়। ২০২১ ও ২০২২ সালের বিভিন্ন সময় ১১৩টি দলিলে এসব জমি কেনা হয়। দলিল মূল্য দেখানো হয় মোট ১০ কোটি ২২ লাখ টাকা। ৮৩টি দলিলে ৩৪৫ বিঘা জমি জব্দের আদেশ দেন আদালত। যার দলিল মূল্য দেখানো হয়েছিল ১৬ কোটি ১৫ টাকার কিছু বেশি।
অপর দিকে বেনজীর আহমেদের পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা রাজধানীর গুলশানে চারটি ফ্ল্যাট জব্দের আদেশ দেন আদালত। তার মধ্যে তিনটি তার স্ত্রীর নামে এবং একটি ছোট মেয়ের নামে। দুটি ফ্ল্যাটের আয়তন ২,৩৫৩ বর্গফুট, দাম ৫৬ লাখ টাকা করে। বাকি দুই ফ্ল্যাটের আয়তন ২,২৪৩ বর্গফুট করে, যার দাম সাড়ে ৫৩ লাখ টাকা করে। চারটি ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে একই দিন একই ভবনে। ভবনটির নাম র্যাংকন আইকন টাওয়ার।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা