ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা আজ
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৪ জুন ২০২৪, ০০:০০
- ফল ঘোষণার আগেই জয় উদযাপনের প্রস্তুতি বিজেপির
- বুথফেরত জরিপের ফল ইন্ডিয়া জোটের প্রত্যাখ্যান
বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতের সাত দফার লোকসভার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ গত শনিবার সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ফল ঘোষণা করা হবে। ফল ঘোষণার আগেই বিজয় উদযাপন ও শপথ গ্রহণের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে ক্ষমতাসীন বিজেপি। ভোট শেষে প্রকাশিত বিভিন্ন বুথফেরত জরিপ দলটির আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এসব বুথফেরত জারিপের ফলে আস্থা নেই কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইন্ডিয়া জোটের। তারা এটিকে আগেই প্রস্তুত করে রাখা বিজেপির প্রচারণা কৌশল বলে আখ্যায়িত করছে। এনডিটিভি, আনন্দবাজার ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ।
ভারতের সাত দফা লোক সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে ৬৪ কোটি ২০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন। ভোটদাতার সংখ্যার দিক থেকে এটা একটা বিশ্বরেকর্ড। বিশ্বের কোনো দেশে কখনো এত বেশি মানুষ ভোট দেননি। দেশটির মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের দাবি, ভোটগণনার কাজেও সব ধরনের সতর্কতা নেয়া হয়েছে। রোববার বেশ কয়েকটি দলের প্রতিনিধি কমিশনের সাথে দেখা করে কিছু দাবি জানিয়েছিলেন। সব মেনে নেয়া হয়েছে।
ভারতের এই নির্বাচনে দেড় কোটি নির্বাচন ও নিরাপত্তাকর্মী কাজ করেছেন। ১৩৫টি বিশেষ ট্রেন চালানো হয়েছে। এ ছাড়া এক হাজার ৬৯২ বার হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়েছে। রাজনৈতিক দলের নেতারা যে হেলিকপ্টারে ঘুরেছেন, সেগুলোও পরীক্ষা করে দেখেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা।
আজ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোট গণনা। জানা যাবে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের শাসন উঠবে কার হাতে। ভারতের লোকসভায় রয়েছে ৫৪৩টি আসন। সাত দফায় ১৯ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত ভোটগ্রহণ হয়েছে দেশটিতে। ভারতজুড়ে এরই মধ্যে ভোট গণনা কেন্দ্রগুলোতে নেয়া হয়েছে নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থা। তিন স্তরের এই ব্যবস্থায় প্রত্যেক গণনা কেন্দ্রের ২০০ মিটারের মধ্যে থাকছে ১৪৪ ধারা। কেন্দ্রের ভেতর ও বাইরে থাকছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্য পুলিশ সদস্য ছাড়াও নির্বাচন কমিশনের মাইক্রো অবজারভার নিয়োজিত থাকবেন গণনাকেন্দ্রে।
সকাল ৮ থেকে ভোট গণনা শুরু হবে। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএম গণনা শুরুর আগে পোস্টাল ব্যালট গণনা শুরু হবে। এরপর ভোটারের সংখ্যার অনুপাতে ইভিএম গণনার কাজ হবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নিজস্ব এজেন্ট থাকবেন কাউন্টিং স্টেশনে। থাকবেন গণমাধ্যমের প্রতিনিধি ও বিদেশী পর্যবেক্ষকও। দীর্ঘ নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দেশটিতে এবার ক্ষমতায় আসার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে, ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। যদিও এই দাবি মানতে নারাজ প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসসহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস এবং অন্য বিরোধীরা।
লোকসভা নির্বাচনে যে দল বা জোট জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবে, সেই সরকারের আনুষ্ঠানিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি চলছে। লোকসভার ১৮তম এই নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। ভোট শেষে প্রকাশিত বিভিন্ন বুথফেরত জরিপ দলটির আত্মবিশ্বাসকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিজেপি টানা তৃতীয় দফার বিজয় উদ্যাপনের পরিকল্পনা করে ফেলেছে। তারা একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠান করতে যাচ্ছে। অনুষ্ঠানটি সপ্তাহান্তে হতে পারে।
বিভিন্ন বুথফেরত জরিপের আভাস, বিজেপি গত লোকসভা নির্বাচনের (২০১৯ সাল) চেয়েও এবার ভালো ফল করতে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতাসীন বিজেপি বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে আবার জয়ী হতে যাচ্ছে। বিজেপি ও তার মিত্ররা লোকসভার ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৩৫০ থেকে ৩৮০টি আসন পেতে পারে। তবে এসব বুথফেরত জরিপের পূর্বাভাস নাকচ করেছে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ জোট। এবারের লোকসভা নির্বাচনে ছয়টি সর্বভারতীয় রাজনৈতিক দল ছাড়াও আড়াই হাজারের মতো প্রাদেশিক রাজনৈতিক দল নিজস্ব প্রতীকে লড়ছেন। নির্বাচনী যুদ্ধে শামিল হয়েছেন প্রায় ১৪ হাজার প্রার্থী। আজ মঙ্গলবার তাদের প্রত্যেকের ভাগ্য জানা যাবে।
নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হবে রাষ্ট্রপতি ভবনে। অনুষ্ঠানস্থল সাজাতে অন্দরের গাছপালাসহ (ইনডোর প্ল্যান্ট) বিভিন্ন উপকরণ সরবরাহের জন্য গত ২৮ মে রাষ্ট্রপতির সচিবালয় একটি দরপত্র আহ্বান করে। নতুন সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি গত সপ্তাহেই রাষ্ট্রপতি ভবনে শুরু হয় বলে জানায় একাধিক সূত্র। সূত্রের তথ্য মতে, কেন্দ্রীয় গণপূর্ত বিভাগ এই অনুষ্ঠান আয়োজন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।
সূত্র আরো জানায়, লোকসভা সচিবালয়ও প্রস্তুতিমূলক কাজ করছে। নবনির্বাচিত সদস্যদের রাজধানীতে আসাসহ তাদের থাকার ব্যবস্থার জন্য কাজ চলছে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার এক সপ্তাহ পর মোদি সরকার শপথ নিয়েছিল। নতুন সরকারের শপথ গ্রহণের দিনই নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ভারত মণ্ডপম বা কর্তব্য পথে রাজনৈতিক অনুষ্ঠান (নির্বাচনে বিজয় উপলক্ষে) করতে পারে বিজেপি। এই অনুষ্ঠানে বিদেশী সরকারগুলোর প্রতিনিধিসহ ৮ থেকে ১০ হাজার ব্যক্তি উপস্থিত থাকতে পারেন। একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তার ভাষ্য, শপথ অনুষ্ঠানের পর উদ্/সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে তা ৯ জুন হতে পারে। বিজেপির এক জ্যেষ্ঠ নেতা বলেছেন, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে একটি বড় সমাবেশ আয়োজনের আলোচনা হয়েছে।
দলটির এই নেতা আরো বলেন, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের বিকল্প হিসেবে কয়েকটি স্থান বাছাই করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে রামলীলা ময়দান, লাল কেল্লা, ভারত মণ্ডপম, যশোভূমি কনভেনশন সেন্টার। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বিবেচনায় অনুষ্ঠানটি ভারত মণ্ডপম বা যশোভূমি কনভেনশন সেন্টারের মতো অন্দর সুবিধার (ইনডোর-ব্যবস্থা) স্থানে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা