বেতনভোগী কর্মকর্তা কিভাবে শত কোটি টাকার মালিক হন তা হতবাক করে
বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ৩১ মে ২০২৪, ০০:০৫
আপিল বিভাগের সদ্য অবসরে যাওয়া বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ বলেছেন, মিথ্যা মামলা ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি দুর্নীতি আমাদের সব অর্জনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। দুর্নীতির ব্যাপকতা অনেক। দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের হাত থেকে অফিস আদালতকে মুক্ত রাখতে হবে। একজন বেতনভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারী কিভাবে কোটি কোটি এমনকি শত কোটি টাকার মালিক হন তা দেশবাসীকে হতবাক করে। তাই এগুলোকে রোধ করতে রাষ্ট্রকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তাহলে দেশ উপকৃত হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিজের শেষ কর্মদিবসে আপিল বিভাগের ২ নম্বর বিচার কক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে দেয়া সংবর্ধনায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও আপিল বিভাগের অপর বিচারপতিদের উপস্থিতিতে বক্তব্যের একপর্যায়ে বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ বলেন, সম্মানিত বিচারকগণ দায়িত্ব পালন করবেন সততা ও ন্যায়পরায়ণতার সাথে সব প্রকার পক্ষপাতিত্ব ও ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে; গরিব-ধনী, ক্ষমতাশালী-ক্ষমতাহীন সবাই তার কাছে সমান। আর বিজ্ঞ আইনজীবীগণ আদালতকে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছতে আইনগত সহায়তা দিবেন। এটাই শাশ্বত নিয়ম। এর ব্যত্যয় ঘটলে নিয়মমাফিক আইনগত ব্যবস্থা নেয়াই হবে উত্তম কাজ। তবে বিচারক যাতে স্বাধীনভাবে বিচারকার্য পরিচালনা করতে পারেন সে জন্য সর্বপ্রকার সহযোগিতা করতে হবে। পাশাপাশি বিচারককেও বিচারকার্য পরিচালনায় স্বাধীন চিত্তের অধিকারী হতে হবে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সচেতন হোন। ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হোন। তবেই আমরা সম্ভবত সত্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অবদান রাখতে পারবো।
দেশে অপরাধের ধরন পাল্টে যাওয়া এবং কিশোর গ্যাংয়ের ভয়াবহতার কথা উল্লেখ করে বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ বলেন, সময়ের বিবর্তনে অপরাধের ধরন প্রতিনিয়ত পাল্টে যাচ্ছে। আমাদের সন্তানদের ভয়াবহ অবস্থার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অভিভাবকদের বিভিন্নমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। পারিবারিক সম্প্রীতি, সংস্কৃতি, দীর্ঘ দিনের লালিত মূল্যবোধ নষ্ট হচ্ছে। কিশোর গ্যাংয়ের উত্থান ঘটেছে। মাদক, সামাজিক অনাচারসহ অস্ত্রের প্রতিযোগিতা, হুমকি ও আশঙ্কার বিস্তার ঘটেছে।
মিথ্যা মামলার ভয়াবহতা উল্লেখ করে বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ বলেন, প্রতিপক্ষকে হয়রানি করার জন্য মিথ্যা মামলা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। বিচার বিভাগকে এর ভার বহন করতে হচ্ছে। এতে আদালতের প্রচুর সময় নষ্ট হচ্ছে। মিথ্যা মামলা ন্যায়বিচারের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ ১৯৮৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে হাইকোর্টে নিয়োগ পান। এরপর ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন। গত ২৫ এপ্রিল বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে শপথ নেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা