আনার হত্যা তদন্তে পুলিশ কলকাতায়
এমপি আজিম হত্যা- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৭ মে ২০২৪, ০০:০০
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে কলকাতায় পৌঁছেছে বাংলাদেশ পুলিশের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল। গতকাল সকাল ১০টার ফ্লাইটে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদের নেতৃত্বে দলটি কলকাতার উদ্দেশে রওনা হয়। বেলা ১১টার দিকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে দলটি। এই দলের আরো রয়েছেন ডিএমপির ওয়ারী বিভাগের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ এবং এডিসি শাহীদুর রহমান। তবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোলকাতা যেতে পারেননি।
এর আগে ভারত পুলিশের একটি দল বাংলাদেশে আসে। দলটি বাংলাদেশ পুলিশ ও এখানে গ্রেফতার হওয়া তিনজনের সাথে কথা বলে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করেছে। তবে তারা মিডিয়ায় এব্যপারে এখনো কোনো কথা প্রকাশ করেনি। ঠিক একইভাবে বাংলাদেশ পুলিশের টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি গ্রেফতার হওয়ায় তিনজনের দেয়া তথ্য সরেজমিন বিশ্লেষণ করনে। তারা কলকাতা পুলিশের সহায়তা নিয়ে বিভিন্ন আলামত ও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করবেন বলে জানা গেছে।
কলকাতা বিমানবন্দরে পা রেখেই ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ ভারত এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। তিনি বলেন, নানা বিষয় মাথা নিয়ে আমরা কলকাতায় এলাম। আমাদের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনারকে হত্যা করে এই দেশের মাটিতেই কোথাও ফেলে দেয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত সবাই বাংলাদেশী। আমাদের দেশে এ বিষয়ে মামলা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ এবং বাংলাদেশী পুলিশ নিজেদের মধ্যে সব তথ্যই আদান-প্রদান করেছে। তিনি বলেন, পূর্ববঙ্গ কমিউনিস্ট পার্টির নেতা শিমুল বিশ্বাস তিনি এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করেছেন, আমানুল্লাহ নামে একজন রয়েছেন, তিনি ভারতে এসেছেন। তার কাছে অনেক তথ্য পেয়েছি। ডিবি প্রধান হারুন বলেন, আমরা কলকাতায় এসেছি। আমরা এখানকার পুলিশের সহায়তা চাইব। আমাদের দেশের আসামিরা যেসব তথ্য দিয়েছে আমরা সেসব তথ্য যাচাই-বাছাই করব। হত্যাকারীদের অ্যাকচুয়াল মোটিভটা কী তা আমরা খুঁজে বের করব।
তিনি আরো বলেন, কলকাতা পুলিশ তিন দিন ধরে আমাদের আসামিদের সাথে সামনাসামনি কথা বলেছে। আমরাও কলকাতার সিআইডির কাছে অনুমতি চাইব। আমরাও অপরাধীদের সাথে কথা বললে হয়তো ওই আসামিরা যেসব তথ্য দিয়েছে, হত্যাকাণ্ডে যেসব স্থানের কথা বলেছে, তাদের সহযোগিতায় সেগুলো পরিদর্শন করব। আমার জানামতে, তার লাশ এখনো উদ্ধার হয়নি।
লাশ খুঁজে পাওয়ার ব্যাপারে আসা প্রকাশ করে গোয়েন্দা প্রধান বলেন, পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সিআইডি অনেক কাজ করছে, অনেকদূর এগিয়েছে। আমরা আশা করি খুব দ্রুত তথ্য পেয়ে যাবেন। বিমানবন্দর থেকে তারা যান নিউটাউনের ওয়েস্টিন হোটেলে। সেখান থেকে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। তবে জানা গেছে, কলকাতার নিউ টাউনের সঞ্জীবা গার্ডেন, ভাঙ্গরে কৃষ্ণ মাটি এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় পরিদর্শনে যেতে পারেন গোয়েন্দা প্রতিনিধিদল।
গত ১৩ মে এই অভিজাত আবাসনেই এমপি আনারকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি। তদন্তে নেমে গত বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁ থেকে গ্রেফতার করা হয় কসাই জিহাদ হাওলাদারকে।
জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, এমপি আনারের লাশের টুকরো করে ফেলা হয়েছিল কৃষ্ণমাটি এলাকার খালে। এই তথ্যের পর গত তিন ধরে দফায় দফায় কৃষ্ণমাটি এলাকার জিরানগাছা বাগজোলা খাল ও সংলগ্ন এলাকায় তল্লাশি চালায় সিআইডি। এমনকি জিহাদকে সাথে নিয়েও তল্লাশি চলানো হয়। জিহাদের দেখানো মতে খালে নামানো হয় কলকাতা পুলিশের দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর সদস্যদের। জাল ও যন্ত্রচালিত নৌকা ব্যবহার করেও লাশের কোনো হদিস পায়নি কলকাতা সিআইডি। কিন্তু লাশ বা লাশের টুকরো না পেলে খুনের মামলাও দায়ের করতে পারছে না পুলিশ।
উল্লেখ্য, চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে সংসদ আনার বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বরানগর থানা এলাকার বাসিন্দা ও তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। পরে ১৩ মে দুপুরে ডাক্তারের সাথে দেখা কথা বলে বের হন। ওইদিন সন্ধ্যায় ফেরার কথা থাকলেও তিনি আর ফিরে আসেননি। পরে গত ১৮ মে বরাহনগর থানায় একটি নিখোঁজের অভিযোগ করেন গোপাল বিশ্বাস। ১৩ যেকোনো সময় নিউটাউনের সঞ্জীবা গার্ডেনসের ফ্ল্যাটে তাকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। ১৪ মে প্রথম পর্যায়ে এমপির লাশের খণ্ডিত অংশ একটি ট্রলিব্যাগে করে ফ্ল্যাট থেকে বের করা হলেও খুনের বিষয়টি প্রকাশ পায় ২২ মে। যদিও এখনো পর্যন্ত আনারের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা