১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

প্রমাণ হলে শান্তি মিশন থেকে বাদ

বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার লঙ্ঘন তথ্যচিত্র প্রসঙ্গে জাতিসঙ্ঘ
-

বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রামান্যচিত্র প্রসঙ্গে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট দেশের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিতদের বাদ দেয়া হবে ।
গতকাল নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সদর দফতরে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ডয়চে ভেলের (জার্মানির আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল) সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা নির্যাতন এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত অসংখ্য কর্মকর্তাকে শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠানো হয়েছে। জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব কি এ বিষয়ে অবগত?
জবাবে ডুজারি বলেন, হ্যাঁ। ডয়চে ভেলের তথ্যচিত্রটি আমরা দেখেছি। শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সহকর্মীরা এ ব্যাপারে মতবিনিময় করছেন এবং তথ্যচিত্রের প্রযোজকদের বিবৃতি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োগের ক্ষেত্রে যেন দক্ষতা ও সততার সর্বোচ্চ মানদণ্ড নিশ্চিত করা হয় সেজন্য জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ প্রতিশ্রুতির মধ্যে আরো রয়েছে, মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা, জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার যাচাই পদ্ধতির অধীনে শান্তিরক্ষী নিয়োগে যথাযথ নিয়ম এবং কৌশল মেনে চলা।

মুখপাত্রকে আবারো প্রশ্ন করা হয়, শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মকর্তা নিয়োগের সময় স্বাগতিক দেশগুলো যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছে। কিন্তু যে দেশ শান্তিরক্ষা মিশনে লোক পাঠাবে সে দেশের সরকার যদি নিজেই গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হয়, তাহলে এ বাছাই প্রক্রিয়া কিভাবে স্বচ্ছ হবে?
জবাবে ডুজারিক বলেন, আমরা বাছাই প্রক্রিয়া তিন ধাপে সম্পন্ন করি। প্রথম পর্যায়ে ব্যক্তিগত মানদণ্ডে বাছাই হয়। পরের ধাপে বাছাই কাজটা করে স্বাগতিক দেশ। সর্বশেষ জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় থেকে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
তিনি বলেন, বিগত বছরগুলোতে খুব অল্পসংখ্যক দেশ থেকে শান্তিরক্ষীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। যখনি এ ধরনের ঘটনা ঘটে, তখনি আমাদের শান্তিরক্ষা মিশনের সহকর্মীরা যাচাই-বাছাই নীতি ও কর্ম কৌশল অনুসারে শান্তিরক্ষী পাঠানো দেশের সাথে কথা বলে যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে ইউনিফর্ম পরিহিত ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হয় না। আর অভিযোগ প্রমাণিত হলে জাতিসঙ্ঘ তাদের ফেরতও পাঠিয়ে থাকে।
উল্লেখ্য, গত ২১ মে ‘মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীরা যখন জাতিসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী’ বিষয়ক একটি তথ্যচিত্র প্রচার করেছে ডয়চে ভেলে। এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা নির্যাতন ও হত্যার সাথে জড়িত নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পাঠিয়েছে।
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশেষ করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) কর্মকর্তাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আর শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে বিচ্ছিন্নতাবাদী তামিল টাইগারদের দমনাভিযানের সাথে জড়িত কর্মকর্তাদের কথা বলা হয়েছে। ডয়চে ভেলের আগেও র‌্যাবের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ওপর ‘ডেথ স্কোয়ার্ড’ শিরোনামে তথ্যচিত্র প্রচার করেছে।


আরো সংবাদ



premium cement