বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনী সহিংসতা
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ২৩ মে ২০২৪, ০০:০৫
ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে গত মঙ্গলবার দেশের ১৫৬ উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হয়। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কয়েক স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বেশ কয়েকজন।
শৈলকুপায় ২০ বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট আহত ৭
শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) সংবাদদাতা জানান, শৈলকুপার বন্দেখালী গ্রামে দোয়াত কলম মার্কায় ভোট না দিয়ে মোটরসাইকেল মার্কায় দেয়া নিয়ে সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের ২০ বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় দুই গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের বন্দেখালী গ্রামে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হোসেন মেম্বারের সাথে একই গ্রামের মাতুব্বর আওয়ামী কর্মী আতিয়ার রহমানের সামাজিক ভাবে বিরোধ চলে আসছিল। তার জের ধরে আতিয়ার রহমান তার সমর্থকদের নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা মুস্তাফিজুর রহমান মুস্তাক শিকদারের সাথে মোটরসাইকেল মার্কায় ভোট দেয়। তার জের ধরে দুই গ্রুপের ২০টি বাড়ি ভাঙচুর ও লুটপাট হয়। এসময় উভয় গ্রুপের জলিল উদ্দিন, পচা মন্ডল, আজব মন্ডল আদেল ও আকুলসহ সাতজন গুরুতর ভাবে আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রাজশাহীতে সংঘর্ষে আহত ৯
রাজশাহী ব্যুরো ও দুর্গাপুর সংবাদদাতা জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার দু’টি কেন্দ্রে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া লোকজনকে ভোটদানে বাধাদান ও হুমকি-ধমকির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে র্যাব। মঙ্গলবার সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর আগে উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের গোপালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত আটজন আহত হন। আর পানানগর দ্বিমুখী উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় আহত হন একজন।
আহতরা হলেন- গোপালপুর গ্রামের আজের, আজাদ, শহিদুল, শুকচান, মিঠু, আব্দুর রাজ্জাক ও সান্টু এবং পানানগর গ্রামের শিহাব। আহতদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে উপজেলার নান্দিগ্রাম দারুস সালাম আলিম মাদরাসা কেন্দ্রে ভোটারদের ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকির অভিযোগে একজনকে আটক করেছে র্যাব। আটক ব্যক্তি নান্দিগ্রামের বাসিন্দা আতাহার আলী (৪২)।
দেবীগঞ্জে ৬০০ জনের নামে মামলা
দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে তিনটি সরকারি গাড়ি ও ৮-১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। একই সাথে ভোট কক্ষের দিকে পাথর ছুড়ে মারা হয়েছে। এই ঘটনায় ওই কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার গোলাম আজম বাদি হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় দু’জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০০-৬০০ জনের বিরুদ্ধে থানায় এজাহার করেছেন। এরপর পুলিশ মঙ্গলবার রাতেই ঘটনাস্থল থেকে শালডাঙ্গা ইউনিয়নের বন্দীগ্রাম এলাকার রাজকুমার রায়ের ছেলে মিঠুন রায় ও দামিনীগ্রাম এলাকার দীনেশ চন্দ্র দায়ের ছেলে দীনবন্ধু রায়কে আটক করে। উভয়ই হেলিকপ্টার প্রতীকের কর্মী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মামলার এজাহার এবং কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর দুই নারী সদস্য ও এক সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার বলেন, বিকেল ৫টার দিকেও ভোট কক্ষে ভোট গণনা চলছিল। তখন থেকে বাইরে উত্তেজনা শুরু হতে থাকে। ফলাফলে যেন কোনো ত্রুটি না হয় সেজন্য আমরা একাধিকবার ভোট গণনা করেছি। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা-৭টার দিকে যখন ফল ঘোষণা করা হয় তখন হেলিকপ্টার প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। তাদের দাবি, হেলিকপ্টার প্রতীক আরো বেশি ভোট পাওয়ার কথা ছিল। যদিও কেন্দ্রটিতে হেলিকপ্টার প্রতীক বিজয়ী হয়েছিল। আমরা কক্ষের ভেতরেই ছিলাম। হঠাৎ কিছু বুঝে উঠার আগেই ভোট কক্ষের দিকে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকেন কর্মী-সমর্থকরা। সেই সাথে বাইরে থাকা সরকারি গাড়ি ও মোটরসাইকেলে ভাঙচুর চালাতে থাকে ক্ষুব্ধ কর্মী সমর্থকরা।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার, এস এম সিরাজুল হুদা বলেন, ভিডিও ফুটেজ, বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ঘটনার সাথে সম্পৃক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এই ঘটনায় নিরপরাধ কাউকে হয়রানি করা হবে না।
আশাশুনিতে আহত ৫
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানান, সাতক্ষীরার আশাশুনিতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় কমপক্ষে ২০টি বাড়ি ভাঙচুর ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (২১ মে) রাতে ও বুধবার (২২ মে) সকালে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান এ বি এম মোস্তাকিম ও পরাজিত প্রার্থী শাহনেওয়াজ ডালিমের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৫ জন। তাদের মধ্যে ২ জনকে সাতক্ষীরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সহিংসতায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এ পর্যন্ত ১৩ জনকে আটক করেছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা