১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় কমেছে তাপপ্রবাহ

সামনের সপ্তাহে আসছে লঘুচাপ
তীব্র তাপদাহের পর গতকাল সকালে রাজধানীতে কিছুক্ষণের জন্য বৃষ্টি : নয়া দিগন্ত -


বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ায় কমে গেছে তাপপ্রবাহের গতি। ১৬ অক্টোবর দেশের ৬৪ জেলাতেই তাপপ্রবাহ বয়ে গেলেও আজ রোববার দিন শেষে কোথাও থাকছে না তাপপ্রবাহ। আজ বৃষ্টিতে ভিজে যেতে পারে দেশের অনেক স্থান। একই সাথে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টিতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে পারেন কিছু কিছু স্থানের মানুষ। সেই সাথে বজ্রপাতের আশঙ্কাও রয়েছে। আগামী পাঁচ দিন পর দিনের ও রাতের তাপমাত্রা কমে গিয়ে শীতল হয়ে যেতে পারে সারা দেশ। এ ছাড়া এখন থেকে পাঁচ দিন পর বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে একটি লঘুচাপ। আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা এই লঘুচাপটিকে খাটো করে দেখছেন না। তারা বলছেন, এই লঘুচাপটি শেষ পর্যন্ত একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। বাংলাদেশে মে মাসে প্রতি বছরই একটি ঘূর্ণিঝড়ের উদ্ভব হয়। কখনো তা সাগরেই শেষ হয়ে যায়, আবার কখনো উপকূলে আঘাত হানে। এই সম্ভাব্য লঘুচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে এর নাম হতে পারে রেমাল বা রেমল। এটা ওমানের আবহাওয়া দফতরের দেয়া একটি আরবি নাম।

আবহাওয়া বিশেষজ্ঞ মোস্তফা কামাল পলাশ বলছেন, ঘূর্ণিঝড়টি চূড়ান্ত হলে তা ২৫ থেকে ২৭ মের মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড়টি সম্বন্ধে এখনই চূড়ান্ত তথ্য দেয়া সম্ভব নয়। কারণ বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়ের প্রথম ধাপ লঘুচাপের সৃষ্টিও হয়নি এখনো।
আবহাওয়া অফিস গত শুক্রবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট বা তাপ সতর্কতা জারি করলেও গতকালই দেশের অধিকাংশ স্থান থেকে উচ্চ তাপ হ্রাস পেয়েছে। তবে খুলনা বিভাগের জেলাগুলো গতকালও বেশ উত্তপ্ত ছিল। বন্দরনগরী মংলায় গতকাল শনিবার ছিল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়ায় অবশ্য তাপ কমেছে অনেক। গত শুক্রবারের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার শহর চুয়াডাঙ্গায় গতকাল কোনো তাপপ্রবাহ ছিল না। সেখানকার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া খুলনা বিভাগের অন্যান্য এলাকার মধ্যে তাপমাত্রা ৩৭ থেকে ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ছিল।

গতকাল সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে সিলেট বিভাগে। বিভাগের তাপমাত্রাও বেশ কম ছিল গতকাল। সিলেট বিভাগের আবহাওয়া অধিদফতরের পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র আছে দু’টি। এর একটি সিলেটে এবং অপর দিকে শ্রীমঙ্গলে। গতকাল শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। অপর দিকে সিলেটে গতকাল ১০১ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, শ্রীমঙ্গলে হয়েছে ৪১ মিলিমিটার। সিলেটের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শ্রীমঙ্গলে উঠেছে ২৭.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
অপর দিকে গতকাল ঢাকা বিভাগের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল গোপালগঞ্জে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া ঢাকা বিভাগের অন্যান্য আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৪.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। রাজধানীতে গতকাল সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৩১.৪ ও ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের অন্যান্য বিভাগেও উচ্চ তাপমাত্রা বেশ কমেছে।

আজ রোববার দিনের একটি অংশ তাপপ্রবাহ থাকতে পারে শুধুমাত্র রাজশাহী, গোপালগঞ্জ, নোয়াখালী, কক্সবাজার, বাগেরহাট, যশোর, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী ও ভোলা জেলায়। এই জেলাগুলোতে শুধু মৃদু তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুসারে, এই জেলাগুলোতে দিনের শেষভাগে এসে তাপপ্রবাহ কমার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ পূর্বাভাস অনুসারে, আজ রোববার দিনের তাপমাত্রা গতকালের চেয়ে কিছুটা কমতে পারে। এ ছাড়া আগামীকাল সোমবার সারা দেশেই দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া বিভাগ।
আজ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement