মন্দিরের আগুনে শ্রমিকদের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মিলেনি
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ১৪ মে ২০২৪, ০১:৩৬
ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীতে কিশোর দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
ঘটনার ২৪ দিন পরে গত রোববার জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো: সিদ্দিক আলী গত ৭ মে এ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নে জেলা প্রশাসক বলেন, তদন্ত কমিটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনাকালে শতাধিক ব্যক্তির বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। তাদের বক্তব্যে এ ঘটনার সাথে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ শতাধিক ব্যক্তি জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, ডুমাইন ইউনিয়নের পঞ্চপল্লীর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বেশকিছু বিষয় উঠে এসেছে। তবে যেহেতু এটি আদালতে বিচারাধীন বিষয় তাই এ বিষয়ে আমরা বেশিকিছু বলতে পারছি না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জনপ্রতিনিধিসহ অনেকের সম্পৃক্ততা ছিল। এটি ভিকটিমদের বক্তব্যে উঠে এসেছে। তবে মন্দিরে আগুন লাগানোর সাথে দুই সহোদর জড়িত কিনা সে বিষয়ে কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। মন্দিরে কে আগুন দিয়েছে সেটি খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি। দুই সহোদর কিংবা অন্য কোনো শ্রমিক আগুন লাগিয়েছে কিনা সে বিষয়ে প্রত্যদর্শী কারো কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
জেলা প্রশাসক বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি অনেক অবজারভেশন দিয়েছে। এসব স্থানে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যাতে সিসি ক্যামেরা থাকে এবং অগ্নিনির্বাপণের যাতে ব্যবস্থা থাকে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ এ ধরনের কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে বাস্তবায়ন করা হয়। এ ছাড়া চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে কারো নিকট থেকে কোনো প্রমাণস্বরূপ বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গত ১৮ এপ্রিল রাতে পঞ্চপল্লী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে আটকে আপন সহোদর দুই কিশোর নির্মাণ শ্রমিক আরশাদুল খান (১৯) ও আশরাফুল খানকে (১৫) নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে একটি মন্দিরের প্রতিমার কাপড়ে অগ্নিসংযোগের অভিযোগ তুলে গ্রামবাসীকে উত্তেজিত করে তোলে জড়িতরা। এ ঘটনায় আরো কয়েকজন শ্রমিক ও পুলিশ আহত হন।
এ ঘটনার পরে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো: সিদ্দিক আলীকে প্রধান করে প্রথমে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে তদন্ত কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে সাত সদস্যে উন্নীত করা হয়। একই সাথে কমিটির মেয়াদও বাড়ানো হয়।
এ দিকে পঞ্চপল্লী গ্রামের এই ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় একটি মামলা করেন নিহত দুই সহোদর আশরাফুল খান (২০) ও আসাদুল খানের (১৮) বাবা মধুখালী উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের চোপেরঘাট গ্রামের মো: শাহজাহান খান (৪৬)। দ্বিতীয় মামলা করেন মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মন্দিরের পূজারী কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা প্রভাষ চন্দ্র মণ্ডলের স্ত্রী তপতী রানী মণ্ডল (৪৭)। এ ছাড়া পুলিশ সদস্যদের আহত করা, সরকারি কাজে বাধা দেয়া, সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি সাধন করা এবং অগ্নিসংযোগের অভিযোগে তৃতীয় মামলাটির বাদি মধুখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শংকর বালা।
মধুখালী থানার ওসি মো: মিরাজ হোসেন জানান, এসব মামলায় এখন পর্যন্ত মোট ৩১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা