সাকিব-মোস্তাফিজে বাংলাদেশের জয়
- জসিম উদ্দিন রানা
- ১১ মে ২০২৪, ০২:১৫
আগের তিন ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাটিং সমর্থকদের স্বস্তি দিতে পারেনি। তবে সৌম্য সরকার চোট থেকে ফিরে ওপেনিংয়ে কিছুটা আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশকে। তানজিদ তামিমও ব্যাটে সুর খুঁজে পেয়েছেন। সমর্থকরাও তাদের শতরানের জুটিতে বড় স্কোরের আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু এই দুই ওপেনার বাদে দলের অন্য ব্যাটারদের চূড়ান্ত ব্যর্থতায় ১৯.৫ ওভারে ১৪৩ রানে অলআউট হতে হয়েছে বাংলাদেশকে। জবাব দিতে নেমে একটা সময় মনেই হচ্ছিল হেরে যাচ্ছে টাইগাররা। তবে বোলাররা আরো একবার নিজেদের প্রমাণ করেছেন। চতুর্থ ম্যাচেও আরো পরিণত বোলাররা। ৩০০ দিন পর টি-২০ খেলতে নেমে ব্যাট হাতে হতাশ করলেও বল হাতে জানিয়ে দিলেন ফুরিয়ে জাননি সাকিব আল হাসান। তার ৪ উইকেট ও আইপিএল অভিজ্ঞতা নিয়ে মোস্তাফিজের ৩ উইকেট প্রাপ্তিতে জিম্বাবুয়ে সব উইকেট হারিয়ে ২ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে গেল ১৩৮ রানে। তাতে ৫ রানের জয় বাংলাদেশের। কম রান খরচায় ৩ উইকেট নেয়ায় ম্যাচসেরা মোস্তাফিজ। ৫ ম্যাচ সিরিজে এই জয়ে স্বাগতিকরা এগিয়ে রইল ৪-০তে। আগামীকাল সকাল ১০টায় মিরপুর শেরেবাংলায় শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে উভয় দল। বাংলাদেশের লক্ষ্য হোয়াইটওয়াশ করা আর জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য মান বাঁচানোর।
জিততে জিম্বাবুয়ের শেষ ওভারে লাগতো ১৪ রান। সাকিব আল হাসান বল হাতে নিয়ে দারুণ ভূমিকা রাখলেন। যদিও ব্লেসিং মুজারাবানি তৃতীয় বলে ছক্কা মেরে বাংলাদেশকে ভয় ধরিয়ে দেন। চতুর্থ ডেলিভারিতে ওয়াইড দিলেও জাকের আলী দারুণ দক্ষতায় স্টাম্পিং করেন তাকে। শেষ তিন বলে লাগে ৬ রান। ক্রিজে আসেন রিচার্ড এনগারাভা। নতুন ব্যাটারকে নিচু বাউন্সে বোল্ড করেন বাঁহাতি স্পিনার। নিচের চতুর্থ উইকেটে জিম্বাবুয়েকে অলআউট করেন। সাকিবের সাথে এই সিরিজের প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে মোস্তাফিজুর রহমানও দারুণ বোলিং করেছেন। শেষ দুই ওভারে যখন ২১ রান লাগতো, তখন বিপজ্জনক হয়ে ওঠা ফারাজ আকরামকে ফেরান বাঁহাতি পেসার। তারও আগে ৫৭ রানে চার উইকেট হারানো জিম্বাবুয়ের হাল ধরা রায়ান বার্ল ও জোনাথন ক্যাম্পবেলের জুটি ১৫তম ওভারে ভেঙে দিয়ে মোস্তাফিজ জোড়া আঘাত হানেন। পরের ওভারে ক্যাম্পবেলকে ফেরান সাকিব।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ৫ ওভারেই ৩ উইকেট হারায় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। শুরুর ওভারে খালি হাতে ফিরেন ওপেনার বেনেট্টি, চতুর্থ ওভারের শেষ বলে ফিরেন সিকান্দার রাজা। ১০ বলে চার বাউন্ডারিতে ১৭ রান করেন তিনি। দলীয় ৩২ রানে ওপেনার মারুমানিকে ১৪ রানে বোল্ড করেন সাকিব আল হাসান। হাত ধরতে চেয়েছিলেন উইকেটকিপার মাদান্দে। তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন রিশাদ হোসেন। ১২ রানে ফিরেন তিনি। দলীয় ৯২ রানে রায়ান বার্লকে (১৯) সাজঘরের পথ দেখান মোস্তাফিজুর রহমান। একই ওভারে জংউইকে এক রানে ফেরান আইপিএল অভিজ্ঞতা নিয়ে দেশে ফেরা কাটার মাস্টার। ১৫ ওভারে ৯৪ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল জিম্বাবুয়ে। পরে সাকিব মোস্তাফিজে ১৩৮ রানে শেষ তাদের ইনিংস।
বাজে ফর্মে ঘুরপাক খাওয়া লিটন দাস একাদশে জায়গা হারিয়েছেন এ ম্যাচে। তার স্থলে চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরছেন সৌম্য সরকার। এছাড়া মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। তাদের জায়গায় দলে ঢুকেছেন শেষ দুই টি-২০ স্কোয়াডে ফেরা সাকিব আল হাসান এবং মোস্তাফিজুর রহমান।
মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে তানজিদ তামিম এবং সৌম্য সরকারের বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিংয়ে দুরন্ত শুরু পায় বাংলাদেশ। ১১ ওভারেই ১০০ রান জমা হয় স্কোরবোর্ডে। ফিফটি তুলে নেন তানজিদ। ত্রিশোর্ধ্ব ইনিংস আসে সৌম্যর ব্যাটে। তাদের আত্মবিশ্বাসী ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে ৫৭ রান তোলে বাংলাদেশ।
আগের তিন টি-২০তে তানজিদের সাথে ইনিংস শুরু করেছিলেন লিটন। তবে তাদের রসায়ন যে ওপেনিংয়ে একেবারেই জমছে না, তা গতকাল সৌম্যর সাথে তানজিদের বোঝাপড়াতে পরিষ্কার। ১২তম ওভারে লুক জংউইয়ের বল কাভারের ওপর দিয়ে খেলতে গিয়ে পয়েন্টে জোনাথান ক্যাম্পবেলের ক্যাচ হন তানজিদ। ফেরার আগে ৩৭ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৫২ রান করেন। সেই ওভারে ৩৪ বলে ৪১ রান করা সৌম্যও সাজঘরের পথ ধরেন।
দুই ওপেনার বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দিলেও হঠাৎ ধসে সে সম্ভাবনা নস্যাৎ হয়। গত দুই ম্যাচের ম্যাচসেরা তৌহিদ হৃদয় (১২) ও ৩০০ দিন পর আন্তর্জাতিক টি-২০তে মাঠে নামা সাকিব আল হাসান (১) তিন বলের মধ্যে আউট হন।
টি-২০ স্ট্রাইকরেটের কারণে সমালোচিত হওয়া অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত আরো একবার ব্যর্থ হয়েছেন ব্যাট হাতে। ৭ বলে ২ রান করে ব্রায়ান বেনেটের বলে সাকিবের মতো তিনিও স্ট্যাম্প বাঁচাতে পারেননি। বিনা উইকেটে শতরানের ঘর ছোঁয়া বাংলাদেশ এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে ১৪৩ রানে পৌঁছাতেই সব উইকেট খুইয়ে বসে স্বাগতিকরা।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পান জংউই। ৬৪ উইকেট নিয়ে এখন টি-২০তে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এই পেসার। নিগারাভা ও বেনেট্টি দুটি করে, সিকান্দার ও মুজারাবানি একটি করে উইকেট নেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা