১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যানজটে ভোগান্তির অপর নাম ইত্তেফাক মোড়

যানজটে স্থবির রাজধানী। ছবিটি মতিঝিলের টিকাটুলী মোড় থেকে তোলা : নয়া দিগন্ত -

রাজধানীতে এখন যানজটে ভোগান্তির অপর নাম রাজধানীর টিকাটুলির ইত্তেফাক মোড়। পুরো মহানগরে যানজট লেগে থাকলেও গত রমজান থেকে ইত্তেফাক মোড়ের যানজট রূপ নিয়েছে ভয়াবহ ও স্থায়ী আকারে। প্রতিদিন সকাল থেকে শুরু হওয়া যানজট গভীর রাতেও শেষ হচ্ছে না। ব্যস্ততম তিনটি রাস্তার সংযোগস্থল ইত্তেফাক মোড় সরকারি ছুটির দিনেও যানজট থেকে রেহাই পাচ্ছে না। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টিকাটুলি অংশ থেকে এক দিকে ফকিরাপুল, অন্য দিকে গুলিস্তান পর্যন্ত বিস্তীর্ণ হয়ে পড়ছে যানজট। যার কারণে আরকে মিশন রোডসহ আশপাশের অলিগলিও থাকে যানবাহনে ঠাসা। যদিও ট্রাফিক পুলিশ বলছে, উল্টো পথে রিকশা চলাচলের কারণে এই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ব্যস্ততম রাস্তার বিভিন্ন স্থানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলমান রয়েছে। যার কারণে যানবাহন মোটেই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না। টিকাটুলি থেকে হানিফ ফ্লাইওভারে ওঠার মুখেই রয়েছে দূরপাল্লার কিছু বাসের কাউন্টার। ওই কাউন্টারগুলোর সামনে সব সময় দুই-চারটি বিরাট আকৃতির বাস দাঁড়িয়ে থাকে। এ ছাড়া রিকশার দৌরাত্ম্য তো রয়েছেই।
খোঁজ নিয়ে দেখে গেছে, কাকরাইল-ফকিরাপুল হয়ে দূরপাল্লার বাসসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন মতিঝিলের শাপলা চত্বর থেকে সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ীর দিয়ে যেতে থাকে। এর কিছু যানবাহন টিকাটুলি অংশ থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের উঠে যায়। যেগুলো পরে সিলেট, চট্টগ্রাম অথবা পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণবঙ্গের দিকে চলে যায়। একইভাবে গুলিস্তান থেকে দূরপাল্লার বাসসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। অফিস ছুটি হলে তো কথাই নেই। অনেক যানবাহন একসাথে যেতে শুরু করে। যার কারণে রাস্তার ধারণ ক্ষমতার চেয়ে অনেক সময় গাড়ির সংখ্যা বেশি হয়ে যায়। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় ট্রাফিক পুলিশদের। যদিও এর আগে গাড়ির চাপ থাকলেও এত ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হতো না।
গতকাল রোববার এই ভয়াবহ যানজটে আটকে থাকা আরিফুল ইসলাম বলেন, প্রায় প্রতিদিনই অফিস শেষ করে এই রাস্তা ধরে মীর হাজিরবাগের বাসায় ফেরেন তিনি। অফিস ছুটির পর একসাথে বেশি গাড়ি বের হওয়ায় কিছুটা গাড়ির চাপ থাকত। কিন্তু কোনো দিন এত ভয়াবহ যানজটে আটকে থাকতে হয়নি। বাসে শাপলা চত্বর থেকে ইত্তেফাক মোড়ে পৌঁছতে তিন মিনিটের রাস্তায় সময় লেগেছে পৌনে এক ঘণ্টা, যা কাউকে বললে বিশ্বাস করবে না। প্রচণ্ড গরমে গাড়ির মধ্যে ঠাসাঠাসি করে দাঁড়িয়ে থেকে জীবন শেষ হয়ে যাচ্ছে। মোটরসাইকেল চালক হামিম হাসান বলেন, টিকাটুলির যানজট গিয়ে ঠেকেছে ফকিরাপুলে। গাড়ির চাকা যেন ঘুরতেই চায় না। একবার একটু সামনে এগোলে ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। তীব্র গরমে রোদের মধ্যে মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কতটা কষ্টের তা মোটরসাইকেল চালকরা বুঝেন।
ইত্তেফাক মোড়ে থাকা পুলিশ বক্সের একজন ট্রাফিক পুলিশ নয়া দিগন্তকে জানান, এখানকার রিকশা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রিকশাগুলো হুটহাট করে ব্যস্ততম রাস্তায় উল্টো দিকে চলা শুরু করে। এতেই শুরু হয় যানজটের। এ ছাড়া রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে অনেক জায়গার রাস্তা সরু হয়ে গেছে। এতে যানবাহন চলাচলে বিঘœ ঘটায় যানজট হচ্ছে। ফ্লাইওভারে ওঠার মুখে কাউন্টার ও বাস দাঁড়িয়ে থাকার ব্যাপারে তিনি বলেন, ওই বাসের কারণে খুব বেশি অসুবিধা হয় না। কারণ বাসগুলো রাস্তার পাশে দাঁড়ায়।


আরো সংবাদ



premium cement