১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

২-০ তে এগিয়ে গেল টাইগাররা

-

ব্যাটিং দুর্দশা কাটল না জিম্বাবুয়ের। প্রথম টি-২০র চিত্রনাট্য মেনে শুরুতে ব্যাটিং ধস এবং তারপর একটা বড় জুটিতে একশ ছাড়ানো স্কোর। তবে ১৩৯ রানের এই সংগ্রহকে মোটেও লড়াকু বলা যায় না। বাংলাদেশের সামনে সিরিজে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যটা সহজই। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সাবলীল ভঙ্গিতেই লড়াকু মানসিকতায় ছিল টাইগাররা। উদ্যমে এবং ধারাবাহিকতায় বাদসাধে বৃষ্টি। তিন দফা খেলা বন্ধ থাকার পর রিদমে একটু ঘাটতি তো ছিলই। শুরুর সে উদ্দীপনা রোমাঞ্চ ছড়াতে পারেনি। যে কারণে ১৯তম ওভার পর্যন্ত যেতে হয় টাইগার ব্যাটারদের। ৯ বল বাকি থাকতে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে বাংলাদেশ। এ জয়ে পাঁচ ম্যাচ টি-২০ সিরিজে ২-০ তে এগিয়ে গেল লাল-সবুজরা। আগামীকাল একই ভেনুতে একই সময়ে তৃতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দল দু’টি।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী টসে হেরে ব্যাটে করতে নেমে আরো একবার ব্যাটিং ধসের মুখে পড়ে জিম্বাবুয়ে। ১০.২ ওভারে ৪২ রান তুলতেই পাঁচ উইকেট খুইয়ে বসে তারা। রান তোলায় ধীরগতি আর সাথে একের পর এক উইকেট হারানোয় বেশ বিপদেই পড়ে সফরকারীরা। রিশাদ-তাসকিনরা নিখুঁত বোলিংয়ে চেপে ধরেছিলেন তাদের।
একশর নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কা যখন জেঁকে ধরছে জিম্বাবুয়েকে, তখনই ষষ্ঠ উইকেটে জোনাথান ক্যাম্পবেল এবং ব্রায়ান বেনেট খাদের কিনারা থেকে দলটিকে টেনে তোলার চেষ্টা করেন। ৪৩ বলে ৭৪ রানের জুটি গড়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন এই দুই ব্যাটার। এই ম্যাচ দিয়ে দলে প্রবেশ করা ক্যাম্পবেল ফেরার আগে করেন ২৪ বলে ৪ চার এবং ৩ ছয়ে ৪৫ রান। অবশ্য ১ রানেই থামতে পারত ক্যাম্পবেলের ইনিংস, যদি শেখ মেহেদীর বলে উইকেটের পেছনে জাকের আলি অনিক লোপ্পা ক্যাচ না ফেলতেন। ফিফটি না পেলেও দলকে অন্তত একশ পার করিয়ে দিতে পেরেছেন ক্যাম্পবেল। ২৯ বলে ৪৪ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জিম্বাবুয়ের রানটাকে ভদ্রস্থ করেছেন বেনেট। তাদের নৈপুণ্যে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৮ পর্যন্ত পৌঁছায় জিম্বাবুয়ে।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ দু’টি করে উইকেট নিয়েছেন স্পিনার রিশাদ হোসেন ও পেসার তাসকিন আহমেদ। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শেখ মেহেদী, শরিফুল ও সাইফউদ্দিন।
ম্যাচের শুরু থেকেই আকাশে ছিল মেঘের আনাগোনা। বাংলাদেশের ইনিংসে নামল বৃষ্টি। ফলে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের তিন দফা খেলা বন্ধ হয়েছে। এনদোলুভর প্রথম ওভারে প্রথম ওভারেই ছক্কা মেরেছিলেন তানজিদ হাসান। পরের ওভারে আরেকটি ছক্কার খোঁজে উইকেট হারালেন তরুণ বাঁহাতি ওপেনার। ১৯ বলে ১৮ রান করে ফিরেন তানজিদ। শান্ত-লিটনে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৪১ রান। পরপর দুই ওভারে দুই ওপেনারকে হারাতে পারত বাংলাদেশ। আম্পায়ার্স কলে বেঁচেছেন লিটন কুমার দাস। এরপর সিকান্দার রাজার বলে ছক্কা মারার চেষ্টায় অল্পের জন্য বেঁচে গেলেন লিটন কুমার দাস। লং অনে তার ক্যাচ ছেড়ে দিলেন লুক জঙ্গুয়ে। তখন ২১ রানে ছিলেন বাংলাদেশ ওপেনার। কয়েক ওভার নড়বড়ে মনে হচ্ছিল লিটন কুমার দাস ও নাজমুল হোসেন শান্তকে। শেষ পর্যন্ত উইকেট হারিয়েই বসলেন শান্ত (১৬)। জীবন পেয়েও বেশিক্ষণ টিকতে পারলেন না লিটন দাস। লুক জঙ্গুয়ের স্লোয়ার বল দূর থেকে ড্রাইভ করার চেষ্টায় পয়েন্টে জোনাথান ক্যাম্পবেলের হাতে ক্যাচ দিলেন তিনি (২৫)। ১০ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৬২ রান।
জাকের আলী ফেরেন ১২ বলে ১৩ রান করে। এরপর তৌহিদ হৃদয় ও মাহমুদুল্লাহ আর কোন অঘটন ঘটতে দেননি। ১৮.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ১৪২ রান করে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। মাহমুদুল্লাহ ২৬ ও তৌহিদ ৩৭ রানে অপরাজিত ছিলেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে ইনিংস : ২০ ওভারে ১৩৮/৭ (গাম্বি ১৭, আরভিন ১৩, বেনেট ৪৪*, ক্যাম্পবেল ৪৫, শরিফুল ১/২৬, মাহেদি ১/১৮, তাসকিন ২/১৮, সাইফ উদ্দিন ১/৩৭, রিশাদ ২/৩৩)।
বাংলাদেশ ইনিংস : ১৮.৩ ওভারে ১৪২/৪ (লিটন ২৩, তানজিদ ১৮, শান্ত ১৬, জাকের ১৩, মাহমুদুল্লাহ ২৬*, তৌহিদ ৩৭*, জং উই ২/৩৫)।
ফল : বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : তৌহিদ হৃদয়।
সিরিজ : ৫ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-০ তে এগিয়ে।


আরো সংবাদ



premium cement