ঝড় ও বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
- নয়া দিগন্ত ডেস্ক
- ০৬ মে ২০২৪, ০০:০৫
দেশব্যাপী তীব্র গরম হ্রাস পাওয়া অব্যাহত আছে। জনমনে স্বস্তি ফিরে আসছে ধীরে ধীরে। বৃষ্টিপাতও হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। তবু কিছু কিছু এলাকায় তাপপ্রবাহ অব্যাহত আছে।
এদিকে বিভিন্ন স্থানে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। কিশোরগঞ্জের উপজেলাগুলোতে দফায় দফায় কালবৈশাখী ঝড়ে শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। কয়েক হাজার গাছপালা উপড়ে গেছে। শিলাবৃষ্টিতে আমসহ উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সুনামগঞ্জে শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে সহস্র্রাধিক ঘরের টিন ছিদ্র হয়ে গেছে।
আবহাওয়া অফিস সারা দেশে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস দিয়েছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছিল ৪০.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার এলাকাগুলোর অন্যতম চুয়াডাঙ্গায় এ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। পূর্বাভাস অনুসারে, আজ সোমবার ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপ প্রবাহ বয়ে যেতে পারে। তবে এ চার বিভাগের অধিকাংশ জায়গা থেকে আজ তাপপ্রবাহ প্রশমিত হয়ে যাবে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আজ সোমবার এলাকা বিশেষে ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কমতে পারে। একই সাথে শুরু হয়ে গেছে গুড়–ম গুড়–ম আওয়াজের বজ্রপাত। ইতোমধ্যেই কিছু মানুষ ও গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হয়েছে। বৃষ্টিপাতে পাকা ধানের ক্ষতি হলেও জনমনে স্বস্তি ফিরে আসা ছাড়াও কিছু কিছু ফসলের বিশেষ করে আম, তরমুজের তরতাজা হতে সহায়তা করবে। তা ছাড়া বিলম্বিত রোপণ করা ধান গাছের পরিপুষ্ট হতেও সহায়তা করবে এই বৃষ্টিপাত।
আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সারা দেশের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়; ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অফিস আগামী মঙ্গল ও বুধবারের সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্বাভাসে জানিয়েছে, মঙ্গলবার ও বুধবার সারা দেশেই দিন ও রাতের সার্বিক তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। অপর দিকে আজ সোমবার থেকে আগামী ৫দিন সারা দেশে বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে।
গত কয়েক দিনে প্রমাণিত হয়েছে বাংলাদেশে উচ্চ তাপমাত্রার এলাকাগুলোর মধ্যে যশোর, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী ও পাবনার ঈশ্বরদী অন্যতম। এই চারটি স্থানেই গত কয়েক দিনে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। গতকাল রোববারও এই স্থানগুলোর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৯.৪ ডিগ্রি, চুয়াডাঙ্গায় ৪০.৩ ডিগ্রি এবং রাজশাহী ও ঈশ্বরদীতে ৩৯.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল রাজধানীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় বান্দরবানে ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল তাপমাত্রায় বেশ স্বস্তিতে ছিল চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগ। এই চার বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চাঁদপুরে ৩৫.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
গতকাল দেশের বেশ কিছু অঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে ময়মনসিংহে ৮৩ মিলিমিটার। এ ছাড়া উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়েছে কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ২৯ মিলিমিটার, সিলেটে ৩৪ মিলিমিটার, কুমিল্লায় ৩১ মিলিমিটার, বগুড়ায় ১০ মিলিমিটার, কক্সবাজারে ৮ মিলিমিটার।
সারা দেশে কালবৈশাখীর পূর্বাভাস : গতকাল রোববার বিকেল ৪টা থেকে আগামী বুধবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে বিচ্ছিন্নভাবে পশ্চিম অথবা উত্তর-পশ্চিম দিকে থেকে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। এ সময় কালবৈশাখীর সাথে বজ্রপাত ও বিচ্ছিন্নভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। আজ সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও পাশের এলাকার জন্য দেয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্বদিক থেকে ঘণ্টায় ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। যা দমকা হাওয়া আকারে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
কাউখালী (পিরোজপুর) সংবাদদাতা জানান, পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার শিয়ালকাঠি ইউনিয়নের শিয়ালকাঠী গ্রামের হাজী বাড়িতে এক ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে মারা যাওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, শনিবার হাজী বাড়ির নিবাসী মোহাম্মদ মতিউল হাসান মতি (৬৫) সকালে তালুকদার হাট ও শিয়ালকাঠি চৌরাস্তাবাজারে যান এবং সুস্থ স্বাভাবিকভাবেই বাজারের কাজ শেষ করে বাড়িতে আসেন। পরবর্তী সময় তিনি তার বাড়ির পাশে কলাবাগান ও বাড়ির আঙ্গিনায় ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত একটি কাঁঠাল গাছ পরিচর্যা করতে গিয়ে বিকেলের দিকে অতিরিক্ত গরম ও রৌদ্রের তাপে অসুস্থ বোধ করেন। লোকজন হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করার আগেই তিনি জ্ঞান হারিয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়দের ধারণা তিনি অতিরিক্ত গরমের কারণে হিটস্ট্রোকে মারা গেছেন। রাতে নামাজে জানাজা শেষে হাজীবাড়ি পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। তিনি স্ত্রী ও দুই সন্তানসহ অনেক আত্মীয়স্বজন রেখে গেছেন।
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামে হিটস্ট্রোক করে মিরসরাইয়ের সাবের আহম্মদ ইমন (২০) নামে এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। গত শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের ওয়ার্লেস এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমন মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব কিছমত জাফরাবাদ এলাকার আবদুল হাকিম ভূঁইয়া বাড়ির সালেহ আহম্মদ লিটনের ছেলে। তবে তারা সপরিবার দীর্ঘ দিন ধরে চট্টগ্রাম শহরের ওয়ার্লেস এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। ইমন চট্টগ্রাম শহরের ইসলামিয়া কলেজের একাদশ শ্রেণীর হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল।
নিহতের স্বজন মুসলিম উদ্দিন খান জুয়েল বলেন, ইমন তার বাবা-মায়ের সাথে চট্টগ্রাম শহরের ওয়ার্লেস এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। শনিবার দুপুরের খাওয়া শেষে হঠাৎ করে তার শরীর খারাপ করলে তাকে দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিক্যালে নিয়ে গিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। গত ৫ এপ্রিল রাতে ইমনের গ্রামের বাড়ি মিরসরাই সদর ইউনিয়নের পূর্ব কিছমত জাফরাবাদ এলাকায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: সলিম উদ্দিন হিটস্ট্রোকে মারা যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
কালবৈশাখী ও বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের হাজীপাড়া গ্রামে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক নারী ও তার পাঁচ বছর বয়সী ছেলের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে করিমগঞ্জ থানার ওসি মিজানুর রহমান নয়া দিগন্তকে জানান, ঝড়ের সময় টিনের দোচালা বসতঘরের ওপর একটি গাছ উপড়ে পড়লে ঘরের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে প্রাণ হারায় শিশু তাইজুল (৫)। এ সময় শিশুটি ঘুমন্ত ছিল। মা রুপতারা বেগমকে (৪৫) করিমগঞ্জে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। রুপতারা বেগমের স্বামী আব্দুল কাইয়ুম (৫০) ঘটনার সময় জিরাতির কাজে হাওরে ছিলেন।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাত ১১টার দিকে নিয়ামতপুর এলাকায় ঝড়ের সাথে বৃষ্টি শুরু হয়। এ সময় গাছ পড়ে ঘরটি বিধ্বস্ত হয়। প্রতিবেশীরা ঘর থেকে মৃত অবস্থায় শিশু ও মুমূর্ষু রুপতারা বেগমকে উদ্ধার করেন। রূপতারা বেগমকে পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা জানান, খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বজ্রপাতে একটি টিনের ঘরে আগুন লেগে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের মধ্যবেতছড়ি গ্রামে গতকাল রোববার ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- হাসিনা বেগম (৩০) ও তার ছেলে হানিফ মিয়া (৮)। তবে ঘটনার সময় হাসিনা বেগমের স্বামী ছাদেক মিয়া বাড়ির বাইরে ছিলেন।
স্থানীয়রা জানায়, ভোরে ভারী বৃষ্টির সাথে বজ্রপাতে ছাদেক মিয়ার মাটির ঘরের টিনের চালে আগুন লেগে যায়। এ সময় ঘরের ভেতর থাকা তার স্ত্রী হাসিনা বেগম ও ছেলে হানিফ মিয়া আগুনে পুড়ে মারা যায়। খবর পেয়ে দীঘিনালা ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। এ সময় সাথে থাকা তার আরেক ছেলে মো: হাফিজ (১১) প্রাণে বেঁচে যায়। খবর পেয়ে হাসিনা বেগমের স্বামী পানছড়ি থেকে বাড়ি ফিরে আসেন।
হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা জানানা, দীর্ঘ তাপদাহ ও প্রচণ্ড গরমের পর হঠাৎ ঝড়োহাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে আম, ভুট্টা,ধান ও সবজিসহ উঠতি ফসলের ক্ষতি হয়েছে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টির কারণে কাঁচা ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে। তবে অনেক এলাকায় বৃষ্টির সাথে শিলার আঘাতে মাটিতে নুয়ে পড়েছে ধানসহ কৃষকের সবুজ সবজিক্ষেত। জানা যায়,গত শনিবার বিকেলে থেকেই হঠাৎ কালোমেঘে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে পুরো আকাশ। কোথাও কোথাও সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় এ ঝড়ো হাওয়া। এমন অবস্থা থেমে থেমে চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এ সময় অনেক স্থানে ঝড়ের সাথে শুরু হয় শিলাবৃষ্টিও।
উপজেলার পুমদী, সিদলা, জিনারি ও গোবিন্দপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানের কোথাও কোথাও ঝড়ো হাওয়ার সাথে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে। আবার অনেক স্থানে বৃষ্টির সাথে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। তবে শিলাবৃষ্টি বেশিক্ষণ স্থায়ী ছিল না বলে জানান স্থানীয়রা। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় ঘণ্টাব্যাপী ঝড়ো হাওয়ার সাথে শিলাবৃষ্টির কারণে উঠতি ফসলের বেশি ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ এমন ঝড়ো হাওয়া ও শিলাবৃষ্টিতে আম, ধান, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, শাকসবজির ক্ষতির পরিমাণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে ধারণা করছেন প্রান্তিক কৃষকেরা।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার ব্রহ্মপুত্রের চরাঞ্চলের অনেক ক্ষেতের জমিতে সেচমেশিনের ঘরের চালা ঝড়ো হাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে। চর এলাকার গ্রামের অনেক বাড়ির পুরানো ঘরের টিনগুলো শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে গেছে। এসময় উপজেলার সুরাটি এলাকার কৃষক সুমন মিয়া, জিনারি এলাকার কৃষক জলীল মিয়াসহ অনেকেই জানান, শিলাবৃষ্টিতে তাদের অধিকাংশ আম পড়ে গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস এম শাহজাহান কবির জানান, উপজেলার কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়ার সাথে শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আর তাতে ধান ও আমসহ উঠতি ফসলের কিছু ক্ষতি হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি।
দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, শিলাবৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের সহস্রাধিক টিনের বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মসজিদ, দোকানকোটাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলের শিলাবৃষ্টিতে ঘরের টিনের চালা ছিদ্র হয়ে এ ক্ষতি হয়।
গ্রামগুলোর মধ্যে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাঁশতলা, চৌধুরী পাড়া, মৌলারপাড়, কলোনি, নতুন বাঁশতলা, ঝুমগাঁও, পেকপাড়া বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কলোনি গ্রামের মাহমুদ আলী জানান, ব্যাপক শিলাবৃষ্টি পড়ে টিনের চালে অসংখ্য বড় বড় ছিদ্র হয়ে গেছে। ছিদ্র দিয়ে ঘর থেকো আকাশ দেখা যাচ্ছে। একেকটা শিলা (তিন থেকে চারশ গ্রাম ওজন) পাথরের মতো পড়তে থাকে। অনেকের ঘরের ভেতরের মালামাল নষ্ট হয়েছে। বাঁশতলা গ্রামের কৃষক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ মিয়া (৮০) বলেন, আমার বয়সে কোনদিন এত বড় শিলা দেখিনি। পাথরের আকারের মতো এক একটা শিলা খুব ভয়ঙ্কর ছিল।
হকনগর বাজারের ব্যবসায়ী আনোয়ার ভুঁইয়া বলেন, টিন দিয়ে তৈরি বাজারের প্রায় শতাধিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে মালামাল ভিজে ব্যবসায়ীদের আর্থিক ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বাংলাবাজার ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ভুঁইয়া ও ধন মিয়া বলেন, শিলাবৃষ্টিতে বাঁশতলা অঞ্চলের যেসব বসতঘর টিন দিয়ে তৈরি ছিল তার অধিকাংশ শিলা পড়ে ছিদ্র হয়ে গেছে। ঘরের ভেতর থেকে এখন আকাশ দেখা যাচ্ছে। ওইসব ঘর একেবারেই বসবাসের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আবুল হোসাইন বলেন, আজকের শিলাবৃষ্টিতে বাঁশতলা অঞ্চলের প্রায় সহস্রাধিক টিনের তৈরি স্থাপনার চাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। আকস্মিক এ শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছে এখানকার নিম্ন আয়ের মানুষ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা