মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না
- শামছুল ইসলাম ওয়াশিংটন ডিসি থেকে
- ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫৩
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মধ্যস্বত্বভোগীরা বড় বাধা। সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে; আরো কিছু ব্যবস্থা নেয়া উচিত। গত বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বসন্ত বৈঠকের তৃতীয় দিনের শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ১৫-২০ এপ্রিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৈঠকে যোগ দিয়েছে।
আগে কৃষকরা পণ্যের দাম পেতেন না, এখন পাচ্ছেন দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘ভালো দাম পাওয়ায় ভোক্তারা আবার চিৎকার করছে। আর বলছে, দাম বেশি। এই সমস্যা তো আছে। তবে উৎপাদন পর্যায়ে দেশে জিনিসপত্রের দাম কমছে। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।’ মন্ত্রী বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিরতা শুরু হলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারের কিছু প্রস্তুতি রয়েছে। সরকারবিরোধীরা দেশবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে। তবে উন্নয়ন সহযোগীরা এসব আমলে নেন না।
ব্যাংক একীভূতকরণের বিষয়ে মন্ত্রী জানান, ব্যাংকগুলোকে কন্ট্রোল করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়টি তারা দেখবে। এ সময় সরকারি ব্যাংকের সাথে বেসরকারি ব্যাংকের একীভূতকরণের এক প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যাংক নষ্ট করে ফেলছে, এ জন্য এই একীভূতকরণ।’ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যানুযায়ী, ব্যাংক সংস্কারের পদক্ষেপ হিসেবে বেশ কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে একীভূত করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত ১৮ মার্চ এক্সিম ব্যাংকের সাথে পদ্মা ব্যাংক প্রথমবারের মতো একীভূত হওয়ার চুক্তি সই হয়।
আইএমএফ চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতির হার ৯.৩ শতাংশ হবে বলে মনে করেছে। উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, নিম্ন রেমিট্যান্স-প্রবাহ এবং একটি পতনশীল শিল্প বিনিয়োগ লক্ষ্যসহ বিভিন্ন বৈশ্বিক এবং স্থানীয় চ্যালেঞ্জগুলোকে তুলে ধরেছে।
আইএমএফের ফিসকাল এফেয়ার্স ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ভিটর গ্যাসপার বলেন, ২০২৪ সালে রেকর্ডসংখ্যক দেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের বছরগুলোতে, ঘাটতি বাজেটের তুলনায় জিডিপির ০.৪ শতাংশ বেশি ছিল। আগামীতে বিশ্বব্যাপী পাবলিক ঋণ দশকের শেষ নাগাদ জিডিপির ১০০ শতাংশে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী পাবলিক ঋণের এই বৃদ্ধি প্রাথমিকভাবে চীন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা চালিত হয়, যেখানে সরকারি ঋণ এখন বেশি এবং প্রাক-মহামারী অনুমানগুলোর তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভিটর গ্যাসপার আরো বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শিথিল রাজস্বনীতি বৈশ্বিক সুদের হার এবং ডলারের ওপর ঊর্ধ্বমুখী চাপ সৃষ্টি করে। এটি বিশ্বের তহবিল ব্যয়কে বাড়িয়ে দেয়, যার ফলে বিদ্যমান ভঙ্গুরতা এবং ঝুঁকিগুলোকে বাড়িয়ে তোলে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপ ২৫০ মিলিয়ন মানুষকে বিতরণ করা নবায়নযোগ্য জ্বালানি সিস্টেম বা বিতরণ গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুতের সাথে সংযুক্ত করতে কাজ করবে। অন্য দিকে আফ্রিকান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপ অতিরিক্ত ৫০ মিলিয়ন মানুষকে সহায়তা করবে। বিদ্যুতের অ্যাক্সেস একটি মৌলিক মানবাধিকার এবং যেকোনো সফল উন্নয়ন প্রচেষ্টার ভিত্তি। বর্তমানে ৬০০ মিলিয়ন আফ্রিকানের বিদ্যুতের অভাব রয়েছে, যা স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, উৎপাদনশীলতা, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং শেষ পর্যন্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে উল্লেখযোগ্য বাধা সৃষ্টি করে। বিদ্যুতের অ্যাক্সেস সব উন্নয়নের ভিত্তি। এটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান এবং স্কেলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য অপরিহার্য।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থা, উন্নয়ন, নীতিমালা সংস্করণ, সমসাময়িক ও ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নে গুরুত্ব দিয়ে প্রতি বছর এ বৈঠকের আয়োজন করে আইএমএফ।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা