নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান
- কূটনৈতিক প্রতিবেদক
- ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৫২
সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মিয়ানমারের সাথে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। তবে দেশটির কিছু সামরিক নেতৃবৃন্দের ওপর আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা আছে। তাই মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর সাথে নির্ধারিত সীমার বাইরে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমাদের ঝুঁকি রয়েছে।
তিনি বলেন, সবাই আমাদের বন্ধু। কোনো একটি বন্ধুকে খুশি করতে গিয়ে আমরা অন্য বন্ধুদের ক্ষুব্ধ করতে পারি না। এ ক্ষেত্রে বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। এ কথা বলতে পারি, আমরা সঠিক পথে থাকার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটিজিক স্টাডিস (বিআইআইএসএস) আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রতিরক্ষা কূটনীতি : বাংলাদেশের জন্য কৌশল বিষয়ক সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিআইআইএসএসের চেয়ারম্যান রাষ্ট্রদূত গওসোল আযম সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবু বকর সিদ্দিক খান।
সেনা প্রধান বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তাকে সমুন্নত রেখে টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়ন অগ্রাধিকারে থাকা প্রয়োজন। সেনাবাহিনীতে আমাদের প্রধান লক্ষ্য মাতৃভূমিকে রক্ষা করা এবং সার্বভৌমত্বকে সমুন্নত রাখা। আর এ জন্য আমরা প্রস্তুত রয়েছি। বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিতে গিয়ে আমরা জাতি গড়ার অনেক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হই। দুর্যোগ মোকাবেলায় সম্পৃক্ত হই। দুর্যোগ মোকাবেলার সাথে সম্পৃক্ত কর্মকাণ্ড অনেক ক্ষেত্রে দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে যায়। চীন, ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ, ফিলিপাইন এবং সর্বশেষ তুরস্কে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এ ধরনের কাজে জড়িত হয়েছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও পাবর্ত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলে প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিয়ে থাকি। এ ছাড়া আমরা বৈদেশিক কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখি। এই ভূমিকা কেবল জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা বাহিনী নয়, এর বাইরেও বিস্তৃত। যেমন, কুয়েতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অধীনে সাড়ে পাঁচ হাজার সদস্য কাজ করছে। তবে তাদের সবাই সেনা সদস্য নয়। সেখানে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকও কর্মরত রয়েছে।
জেনারেল শফিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীতে আমাদের প্রধান লক্ষ্য হলো নিজেদের সুরক্ষিত রেখে মিশনের ম্যান্ডেট অর্জনে কাজ করা। আর এই কাজের জন্য ইতিবাচক পরিবেশ বজায় রাখতে আমরা হোস্ট কান্ট্রির সাথে সুসম্পর্ককে গুরুত্ব দেই। মিশনে যোগ দেয়ার আগে প্রত্যেক সেনা সদস্যকে পরিষ্কার করে বলা হয়, তারা বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছে এবং তাদের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য যাতে আরো সুনাম বয়ে আনা যায়, সেই চেষ্টা করতে হবে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনীতে আমরা কেবল সমর পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেই না, বরং সঙ্ঘাত এড়ানোর উপায়গুলোর ওপরেও গুরুত্ব দেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোর সাথে আমাদের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তবে এই যোগাযোগটা একটা কাঠামোর মধ্যে আনা যায় কি না তা বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে ভারসাম্য রক্ষায় সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়- বঙ্গবন্ধুর এই পররাষ্ট্রনীতি একটি কার্যকর নীতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে। সামরিক কূটনীতির ক্ষেত্রে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে যোগাযোগ রক্ষা করে। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনার ক্ষেত্রেও আমরা বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলোর সহযোগিতা নিয়ে থাকি।
সেমিনারে দেশী-বিদেশী সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিরা অংশ নেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা