১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
বিএফইউজে-ডিইউজের ইফতার মাহফিলে ফখরুল

ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ে নামতে হবে

জাতীয় প্রেস ক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ও বিএফইউজের ইফতার মাহফিলে অতিথিরা : নয়া দিগন্ত -


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশকে রাষ্ট্র বলে মনে হয় না। মনে হয় না, এটা একটা স্বাধীন রাষ্ট্র। আমাদের মনে হয়, পুরোপুরিভাবে একটি আধিপত্যবাদী সরকার আমাদের উপর চেপে বসেছে। এ অবস্থায় সব দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে হবে। ভয়াবহ দানব সরকারের পতন ঘটাতে হবে। শুধু রাজনৈতিক দল, সাংবাদিকরা নয়, পুরো জাতিকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএফইউজে সভাপতি রুহুল আমিন গজীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় আরো বক্তৃতা করেন, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী ও ডিইউজে সভাপতি শহিদুল ইসলাম।

ইফতার মাহফিলে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান ও মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় প্রচার-মিডিয়া সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম ও কবি আব্দুল হাই শিকদার, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, লেবারপার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, সাইফুল হক, নয়া দিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলী, বিএফইউজের সহসভাপতি খায়রুল বাশার, এ কে এম মহসিন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি মুরসালিন নোমানী, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব বাছির জামাল, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, সহকারী সেক্রেটারি ড. আবদুল মান্নান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ড. ফখরুদ্দিন মানিক, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার সম্পাদক আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের সহকারী প্রচার সম্পাদক আশরাফুল আলম ইমন, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ডা: সাদেক আবদুল্লাহসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী নেতারা।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি আমরা। শুধু বিরোধী দল নয়, পেশাজীবী নয়, পুরো জাতি একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি সম্মুখীন হয়েছে। ১৮ থেকে ২০ বছর ধরে আমরা গণতন্ত্রকে হারিয়ে ফেলেছি। সেই সাথে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে সরকার। আমরা যাদেরকে বিশ্বাস করি, যাদের ওপর আস্থা রাখি-গণমাধ্যম, সেই গণমাধ্যমের ওপর প্রথম আঘাত করেছে সরকার। অনেক টেলিভিশন-পত্রিকা বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। যারা লিখতে চান, মত প্রকাশ করতে চান, তাদের জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন করেছে সরকার। তাদেরকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে মারাও হয়। এই সরকারের হাত থেকে গণমাধ্যমও রেহায় পায়নি, পায় না। ফ্যাসিবাদ শক্তি যখন আক্রমণ করে তখন কেউ রেহাই পায় না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, অনেকে ভাবছেন বিএনপির আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে গেছে, বিরোধী দলের আন্দোলন নস্যাৎ হয়ে গেছে; কিন্তু কখনোই না। প্রতিটি আন্দোলনের পরে আরো শক্তিশালী হয়েছে এই শক্তিগুলো।
আমরা বিশ্বাস করি, আন্দোলন, আন্দোলন, আন্দোলন। এই আন্দোলনের মাধ্যমেই ফ্যাসিবাদী সরকারের পরাজয় নিয়ে আসবে। সরকার আমাদের ব্যাংকসহ সব কিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা সবকিছু তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
আমাদের দায়িত্ব হচ্ছে এখন সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার- এমন কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বারবার বলি, আমাদের সুদৃঢ়ভাবে একটি জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় ঐকের মাধ্যমেই জনগণের শক্তি দিয়ে এই ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, দেশের মানুষ আজ কঠিন সময় পার করছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে ফেলেছে। ব্যাংক লুটপাট করা হয়েছে। বুয়েটসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করতে আজ উঠে পড়ে লেগেছে। সাংবাদিকরা আজ স্বাধীনভাবে কোনোকিছু লিখতে পারে না। ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনসহ বিভিন্ন আইন করে গ্রেফতার, জুলুম করছে। এ অবস্থায় সাংবাদিক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরাসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিবাদী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে রুহুল আমিন গাজী বলেন, সরকার সাংবাদিকদের হত্যা-নির্যাতন করছে। বিভিন্ন গণমাধ্যম বন্ধ করে দিয়ে কণ্ঠ রোধ করছে। এ অবস্থায় সাংবাদিকদের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষায় রাজপথে নামতে হবে।
এ দিকে দুপুরে বিএফইউজের বিশেষ কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে সংগঠনের আনীত বিভিন্ন সংশোধীন সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়।


আরো সংবাদ



premium cement