১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আমদানি-রফতানিতে ‘সেবা’ অন্তর্ভুক্ত করে নতুন আইন

-


সেবা অন্তর্ভুক্ত করে ‘আমদানি ও রফতানি আইন, ২০২৪’ এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। নতুন আইনানুযায়ী, সেবা আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভা বৈঠকে নতুন আইনের অনুমোদন দেয়া হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমদানি ও রফতানি নিয়ন্ত্রণ ও নিষিদ্ধকরণের ১৯৫০ সালের আইন আছে। পুরনো আইনগুলো পর্যায়ক্রমে যুগোপযোগী করার নির্দেশনা আছে। এজন্য নতুন আইনের খসড়া করা হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের আইনে নতুন করে কিছু বিষয় সংযুক্ত করা হয়েছে। আগে শুধু পণ্যের কথা বলা ছিল। এখন বাণিজ্যিকভাবে সেবা কার্যক্রমকেও এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সেবা আমদানি ও রফতানির ক্ষেত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন লাগবে। এ আইনের আওতায় সেবাকে যুক্ত করা হয়েছে। কমোডিটির পাশাপাশি সার্ভিসকে যুক্ত করা হয়েছে।
খসড়া আইনে থাকা সেবার সংজ্ঞা তুলে ধরে তিনি বলেন, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের অধীন জেনারেল অ্যাগ্রিমেন্ট অন ট্রেড ইন সার্ভিস চুক্তিতে বর্ণিত সংজ্ঞা অনুযায়ী যেকোনো সেবা। সরকার কোনো পণ্য বা সেবা নিয়ন্ত্রণ বা নিষিদ্ধ করতে পারবে। এ সম্পর্কিত আদেশ ও বিধিবিধান প্রণয়ন করতে পারবে। আমদানি ও রফতানি নীতি প্রণয়নের দায়িত্ব বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে দেয়া হয়েছে।
বিধবা-স্বামী নিগৃহীতা ভাতা পেতে শিথিল হলো আয়ের সীমা : বছরে ১২ হাজার নয়, ১৫ হাজার টাকার কম আয় করা বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীরা ভাতার আওতায় আসবেন। আয়ের সীমা শিথিল করে ‘বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন নীতিমালা, ২০২৪’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন বলেন, সরকারের একটি খুব বড় সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হলো বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা ভাতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন। এটি প্রধানমন্ত্রী ১৯৯৮-৯৯ সালে শুরু করেন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ২৫ লাখ ৭৫ হাজার বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তাকে ভাতা দেয়া হয়েছে। তাদের মাসিক ৫৫০ টাকা করে ভাতা দেয়া হয়।
এখন সেই নীতিমালায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আগের নীতিমালায় কারা ভাতা পাবেন সেই যোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা ছিল- তার ব্যক্তিগত বার্ষিক আয় ১২ হাজার টাকার নিচে হতে হবে। এখন এটা বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ বছরে যাদের ১৫ হাজার টাকার কম আয় করেন তারা ভাতার আওতায় আসবেন। এখন ভাতাগ্রহীতা প্রতিজনকে মাসে ৫৫০ টাকা করে দেয়া হয়। মোট ২৫ লাখ ৭৫ হাজার জনকে এ ভাতা দেয়া হয়।
নতুন নীতিমালায় মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে ভাতা দেয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, জিটুপি (সরকার থেকে ব্যক্তি) ভিত্তিতে এ ভাতা পরিশোধ করা হবে। আগে পরীক্ষামূলকভাবে ম্যানেজমেন্ট নেটওয়ার্ক সিস্টেমের মাধ্যমে অনলাইনে বাছাইয়ের যে ব্যবস্থা করা হয়েছিল সেটি এই নীতিমালায় প্রাতিষ্ঠানিক করা হয়েছে। অনলাইনে আবেদন নেয়া হবে এবং অনলাইনে বাছাই প্রক্রিয়া চলবে। ওখানে একটা যাচাই-বছাই সিস্টেম থাকবে, সেখানে যারা নির্বাচিত হবেন তারাই ভাতা পাবেন।

উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বদলি ঠেকানো গর্হিত কাজ : সরকারি কর্মকর্তাদের বদলির পরও কোনো স্থানে থাকতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বদলি ঠেকানো গর্হিত কাজ বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো: মাহবুব হোসেন। বদলির আদেশ হলে সেটি যাতে বাস্তবায়ন হয় সে বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাথে কথা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বদলি করা রুটিনমাফিক কাজ। কিন্তু অনেকেই থেকে যেতে তদবির করে বদলি বাতিল করান। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বদলি আমাদের প্রশাসনের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। বদলি করে বদলি হওয়া স্থানে তাকে যেতে হবে, এটাই নিয়ম। এটা সর্বাত্মকভাবে অনুসরণ করব, এটাই প্রত্যাশা এবং এটি আমরা সবসময় এস্টাবলিস্ট করে থাকি। কখনো কখনো ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা ঘটে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেউ যদি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ঠেকানোর চেষ্টা করেন, সেটি হলো গর্হিত কাজ। অনেক সময় আমার নিজের চাকরি জীবনে দেখেছি, বদলি করেছেন কিন্তু ওখানকার যে কর্মকর্তা, তিনি হয়তো মনে করছেন আরো কিছুদিন আমাদের সাথে থাকুক, তার সার্ভিস ভালো। ভালো খারাপ দুটোই হতে পারে। তারা আরো কিছুদিন রাখতে চায়। এটি কিন্তু আমাদের প্রশাসনিক কার্টেসির একটি অংশ। যখন সিনিয়র অফিসার কিছুদিন চায় তখন আমরা কিছুদিন রেখে দেই, কিন্তু এটা এই না যে তাকে বদলি করা যাবে না, বদলি অবশ্যই তাকে করতে হবে। সে তো স্থায়ী থাকতে পারে না। বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।


আরো সংবাদ



premium cement