২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুপুরের বৃষ্টিতে সারা দিন শান্তি

স্বস্তির বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা। রাজধানীর বাসাবো এলাকার ছবি : নয়া দিগন্ত -


দুপুরের বৃষ্টিতে গতকাল সারা দিন ছিল শান্তি। তাপদাহ শেষ হয়ে প্রশান্তির ছোঁয়া ছিল সর্বত্র। গতকাল সারা দেশেই ঝড়েছে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি। কোথাও কোথাও বেশ ভারী বর্ষণ হয়েছে। রাজশাহী বিভাগেও খুবই সামান্য বৃষ্টি হলেও তাপদাহের উন্নতি হয়েছে অর্থাৎ ঠাণ্ডার পরশ সেখানে বুলিয়ে গেছে হালকা বৃষ্টি। আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্যে দেখা গেছে সর্বোচ্চ বৃষ্টি ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইলে হয়েছে ৮৪ মিলিমিটার। টাঙ্গাইলে সকালের পর থেকে এই বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানী ঢাকায়ও দুপুরের পর থেকে বেশ ভালোই বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া অফিস বলছে, রাজধানীতে ৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে কোনো কোনো স্থানে দেখা গেছে, বেশ ভালো বৃষ্টি হয়েছে, রাস্তায় দীর্ঘ সময় পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি করেছে।

বৃষ্টিটা হচ্ছে দক্ষিণ পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর কারণে। জুনের প্রথম থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত মৌসুমি বায়ুর গতি বেশ মন্থর ছিল। ৭ জুনের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আবহাওয়া অফিস বলেছিল আরো পাঁচ দিন লাগবে মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল স্পর্শ করতে। কিন্তু ৮ জুনই মৌসুমি বায়ু টেকনাফ উপকূল অতিক্রম করে চট্টগ্রাম পর্যন্ত চলে এসেছিল। গতকাল ৯ জুন চট্টগ্রাম অতিক্রম করে সিলেট বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এরই প্রভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে।
এ দিকে গত কয়েক দিন তীব্র তাপদাহে রাজধানীবাসী বেশ অস্বস্তিতে ছিল। দালান-কোঠার ঘনত্ব, কল-কারখানার উত্তাপ, যানবাহনের ইঞ্জিন থেকে বের হওয়া উত্তাপ এবং সূর্য তাপ দালান-কোঠা ও রাজপথে ও ভবনগুলোতে আপাতত হয়ে যে গরম তৈরি করে তা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা রাজধানীবাসীকে অস্বস্তিতে রেখেছিল এতদিন। গত ৮ জুন বৃষ্টির কিছুটা প্রভাব পড়লেও গতকাল শুক্রবার সকালে ছিল ভ্যাপসা গরমের বিরক্তিকর ঘাম। ফলে রাজধানীবাসী গত কয়েক দিন থেকেই ভারী বৃষ্টির অপেক্ষাতে ছিলেন। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলেও তাতে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। গতকাল সকাল ১০টার পর ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিতে প্রশান্তি এনে দিয়েছে রাজধানীতে। ফলে বিভিন্ন অফিসে ও বাসায় মাথার ওপরে ফ্যান ঘোরা কমে গেছে। অনেকেই এসি মেশিন বন্ধ রেখেছেন। বৃষ্টি থেকে যে ঠাণ্ডার পরশ ঢুকেছে বাসা ও অফিসে তাতেই স্বস্তিতে কাজকর্ম করা গেছে। বহু আকাক্সিক্ষত এ বৃষ্টিতে অনেকেই স্বস্তির কথা প্রকাশ করেছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।

দুপুর ১২টায় ঢাকার পর থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, মিরপুর, কাওরান বাজার, পল্টন, গুলশান, মতিঝিল, গুলিস্তান, বাড্ডা, রামপুরা, বারিধারা, গুলশান, মহাখালী, বনানী, মগবাজার, হাতিরঝিল, মুগদা, খিলগাঁও, বাসাবো, যাত্রাবাড়ী, এলাকা থেকে বৃষ্টির খবর পাওয়া গেছে।
দেশব্যাপী বৃষ্টিপাত হওয়ার পরও কিন্তু রাজশাহী, পাবনা ও চুয়াডাঙ্গা জেলায় আজ শনিবার মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এ ছাড়া আজ সারা দেশেই বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমে যেতে পারে। সে কারণে আবহাওয়া অফিস আজ শনিবার দিনের বেলায় তাপমাত্রা গতকালকের চেয়ে কিছুটা বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা/ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসাথে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।
গতকাল শুক্রবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন ছিল কিশোরগঞ্জের নিকলিতে ২৩.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ৩২.১ ও ২৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


আরো সংবাদ



premium cement