২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১১ আশ্বিন ১৪৩০, ১০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫ হিজরি
`

সংলাপের বক্তব্য জনদৃষ্টিকে ভিন্ন খাতে নেয়ার কৌশল : ফখরুল

লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড অভিমুখে বিএনপির বিক্ষোভ : নয়া দিগন্ত -


সংলাপ প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলের নেতামন্ত্রীদের সাম্প্রতিক বক্তব্য জনদৃষ্টিকে ভিন্নখাতে নেয়ার কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার একটা জিনিস খুব ভালো জানে, তা হচ্ছে দৃষ্টি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেয়া। যখন মানুষ বিদ্যুৎ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে তখন আরেকটা ইস্যু তৈরি করে ফেলে যেন এটাকে ডাইভার্ট করা যায়। সবাই মেতে উঠলেন আমির হোসেন আমু কি বলেছেন তার বক্তব্য নিয়ে। সবাই ছুটে গেলেন সেদিকে কি জানি কি হচ্ছে?
মির্জা ফখরুল বলেন, আমির হোসেন আমু কে? উনি আওয়ামী লীগের কি এখন? উনাকে ছোট করছি না, উনি তো আসলে আওয়ামী লীগের স্পোকস ম্যান না। উনি উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য। এখন প্রেসিডিয়াম সদস্যও না। তারপরেই আওয়ামী লীগের স্পোকেন ম্যান বললেন যে, এটা আমাদের বক্তব্য না। আবার দেখা গেল বিকেলের দিকে হোম মিনিস্টার বলছেন, সংলাপের কোনো বিকল্প নাই। এর একটাই উদ্দেশ্য ডাইভার্ট করা। আমরা যে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাবো না, ওইখান থেকে ডাইভার্ট করা, বিদ্যুতের যে সমস্যা সেখান থেকে ডাইভার্ট করা। যত ডাইভারশন করেন, জনগণ বুঝে সব।

নির্দলীয় সরকারের বিকল্প নাই : মির্জা ফখরুল বলেন, এটা (নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার) ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নাই। নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার দিতে হবে, সেটা যে নামেই হোক। আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বলতেন, তোমরা এটাকে তত্ত্বাবধায়ক বলো আর যা-ই বলো নির্বাচনের সময়ে একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার দরকার। যারা কোনো দলের হবে না, যারা কোনো দলবাজি করবে না। তিনি বলেন, আমাদের কথা সেই আগের মতোই। পদত্যাগ করেন, ওই ব্যবস্থাটা দিন। আমরা দেখে নেবো কি হবে না হবে। দেশের মানুষ জানে কিভাবে কি করতে হয়। এ দেশের মানুষকে যতই বলেন তারা লড়াই করে সব কিছু অর্জন করেছে। সেই ৫২ সালের ভাষা থেকে শুরু করে আপনার তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে শুরু করে সব কিছুই লড়াই করে সংগ্রাম করে অর্জন করেছে। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই লড়াইয়ে আমরা নেমেছি, সমগ্র জাতি নেমেছে। শুধু বিএনপির কথা বলছি না, আমরা বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে যাবো তার জন্য এই আন্দোলন করছি না। আমরা লড়াই করছি মানুষের অধিকারটা ফিরে পাওয়ার জন্য।

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রসঙ্গ : মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের সাংবাদিক ভাইয়েরা দিন-রাত প্রচণ্ড পরিশ্রম করেন কিন্তু সব কিছু বলতেও পারেন না, লিখতেও পারেন না। কেন ওই যে মাথার ওপরে খড়গ বসে আছে যে ফ্যাসিবাদ।
গোটা সাংবাদিক সমাজ বলেছেন, সবাই বলেছে, এমনকি জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকার কমিশন বলেছে যে, এই সিকিউরিটি অ্যাক্ট তোমরা বাতিল করো। শুনছে না। কেন? যদি শুনে তাহলে তো ক্ষমতা থাকবে না, গদি থাকবে না। গদি রক্ষার জন্যই সব কিছু। ওই জন্য কারো কথা শুনতে চাই না। ওই যে তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই, তার চাই ক্ষমতা তার চাই গদি। তাতে এ দেশের মানুষ যদি মরে যায়, হাজার মরে, লক্ষ মরে তাতে তাদের কিছু যায় আসবে না।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আপনারা শিক্ষিত মানুষ, শিক্ষক মানুষ। আপনাদেরকে গোটা জাতি শ্রদ্ধা করে, সম্মান করে। আপনারা যখন একটা কথা বলেন সেই কথাটা কিন্তু সত্যিকার অর্থে গোটা জাতির কাছে একটা গুরুত্ব বহন করে। আমার খুব কষ্ট হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এই জাতিকে গঠন করবার জন্য, নির্মাণ করবার জন্য সমস্ত অর্জনগুলোতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে সেই বিশ্ববিদ্যালয় আজকে নীরব নিথর আজকে তারা গণতন্ত্রের জন্য মানুষের অধিকারের জন্য কোনো ভূমিকা পালন করে না।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ইউট্যাব) উদ্যোগে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র সঙ্কট উত্তরণ প্রয়াসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা- একটা পর্যালোচনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক তৌফিকুল ইসলাম মিথিল ও খান মো: মনোয়ারুল ইসলাম শিমুল।
ইউট্যাবের সভাপতি অধ্যাপক এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক নুরুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হালিম ডোনার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিকল্পধারা বাংলাদেশের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ইউট্যাবের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, অধ্যাপক আমজাদ হোসেন, অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী, অধ্যাপক আনিসুর রহমান, অধ্যাপক মামুনুর রশীদ, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক রইস উদ্দিন, অধ্যাপক মতিনুর রহমান, অধ্যাপক শের মোহাম্মদ, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক আখতার হোসেন, অধ্যাপক শাহেদুল করিম, অধ্যাপক মাসুমা হাবিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন

 


আরো সংবাদ



premium cement