২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে কমছে ক্লাস, বাড়ছে সময়

পাঠ্যবইয়ের ভুল ও অসঙ্গতির শিট পাবে শিক্ষার্থীরা
-

প্রতিদিন সাতটি ক্লাসের পরিবর্তে এখন থেকে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে ক্লাস হবে ছয়টি। তবে প্রতিটি ক্লাসের সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে। নতুন এই ক্লাস রুটিন চূড়ান্ত করে জেলা-উপজেলার মাধ্যমে প্রত্যেক স্কুলে স্কুলে পাঠানো হচ্ছে। রোববার থেকে বৃহস্পতিবার একই রুটিনে ক্লাসগুলো চলবে। সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদফতর (মাউশি) থেকে এমন নির্দেশনার বিষয়ে জানানো হয়েছে। অবশ্য নতুন শিক্ষাক্রম শুরু হওয়ার প্রায় চার মাসের মাথায় ক্লাস রুটিনে পরিবর্তন এনেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। গত রোববার সংশোধিত রুটিন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।

সূত্র জানায়, নতুন শিক্ষাক্রমে মাধ্যমিকের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর রুটিন সংশোধন করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। আগে এ দুই শ্রেণীর জন্য দু’টি রুটিন থাকলেও এনসিটিবি তা সংশোধন করে এক শিফট ও দুই শিফটের স্কুলগুলোর জন্য সময় উল্লেখ করে আলাদা রুটিন করেছে। ইতোমধ্যে এই সংশোধিত রুটিন প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর। রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত প্রতিদিন আগে যেখানে সাতটি পিরিয়ডের ক্লাস হতো; এখন এ দুই শ্রেণীতে ছয় পিরিয়ড ক্লাস হবে। তবে প্রতিটি ক্লাসের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে।

এ দিকে আগে থেকেই চলতি বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীতে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। গত ডিসেম্বরের শেষে এ দুই শ্রেণীর ক্লাস রুটিন প্রকাশ করা হয়েছিল। এ দুই শ্রেণীর নতুন ক্লাস রুটিন এবার সংশোধন করা হলো। সূত্র মতে, নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ১০টি করে বিষয় পড়তে হবে। সেগুলো হলো বাংলা, ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি, জীবন ও জীবিকা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ধর্ম এবং শিল্প ও সংস্কৃতি। সংশোধিত রুটিন অনুযায়ী এক শিফটের স্কুলে এ দুই শ্রেণীর ক্লাস হবে ৫০ মিনিট, আর দুই শিফটের স্কুলে প্রতি পিরিয়ড হবে ৪৫ মিনিট। তবে রোলকলের কারণে এক শিফটের স্কুলে প্রথম পিরিয়ড হবে ৬০ মিনিট ও দুই শিফটের স্কুলে প্রথম পিরিয়ড হবে ৫০ মিনিট।

সূত্র জানায়, মাউশির নির্দেশনায় প্রথম ও দ্বিতীয় শিফটের জন্য আলাদা নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে- প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবশ্যই প্রতিদিন সমাবেশে শিক্ষার্থীদের জাতীয় সঙ্গীত গাইবার ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী শরীরচর্চা, পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন শ্রেণীর বিভিন্ন উপস্থাপনা যেমন গান, নাটক, আবৃত্তি, নাচসহ অন্যান্য আয়োজন করতে পারে। এ লক্ষ্যে সমাবেশের সময় বাড়াতে হলে প্রয়োজনে বিদ্যালয় শুরুর সময় এগিয়ে আনা যাবে। কিন্তু কোনো মতেই সেশনের সময় কমানো যাবে না। রুটিনে উল্লিখিত কোনো বিষয়েরই সেশন সংখ্যা বা ক্রম পরিবর্তন করা যাবে না।

নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরাই শুধু ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর সেশন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। একটি শ্রেণীর একটি বিষয়ে একজন শিক্ষককেই দায়িত্ব দেয়া যাবে। একই শ্রেণীর একই বিষয়ে একাধিক শিক্ষককে দায়িত্ব দেয়া যাবে না। যে শিক্ষক যে বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন তাকে সে বিষয়েরই সেশন বা শ্রেণী কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দিতে হবে।

নির্দেশনায় জাতীয় দিবসগুলো উদযাপন (২১ ফেব্রুয়ারি, ১৭ মার্চ, ২৬ মার্চ, পয়লা বৈশাখ, ১ মে, ১৫ আগস্ট, ১৬ ডিসেম্বর) শিখনকালীন কার্যক্রম হিসেবে ধরা হয়েছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকরা আগে থেকেই পরামর্শ করে শিক্ষক সহায়িকার নির্দেশনা অনুসরণ করে বিদ্যালয়ে জাতীয় দিবসের কার্যক্রম সাজাবেন। যাতে করে এসব দিবস পালনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যে অভিজ্ঞতা অর্জন করা প্রয়োজন তা অর্জিত হয়।

অন্য দিকে, নতুন শিক্ষাক্রমের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণীর ২২টি বইয়ের ৪২১টি ভুলভ্রান্তি ও অসঙ্গতির জন্য নতুন করে পাঠ্যবই ছাপানো হবে না। সংশোধিত তথ্য শিট আকারে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। সংশোধনীগুলো এনসিটিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এখন শিক্ষা অধিদফতরের মাধ্যমে তা জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হবে। তারা বিদ্যালয়গুলোতে এসব সরবরাহ করবেন। এ ছাড়া অধিদফতরের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানরা সংশোধনীর তালিকা পেয়েছেন। শ্রেণিশিক্ষকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বইয়ে তা সংশোধন করে দেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement