২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শিশু ও স্বাস্থ্যবান তরুণদের টিকার প্রয়োজন নেই

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
-


শিশু ও বয়সী স্বাস্থ্যবান তরুণ-তরুণীদের (টিএন এজার) কোভিড টিকার প্রয়োজন নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি এ ধরনের সুপারিশ করে কোভিড টিকার গাইডলাইন সংশোধন করেছে। অন্য দিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত ১৭ মার্চ ঘোষণা করেছে যে, করোনা ভাইরাস এ বছরই সিজনাল ফ্লুতে রূপান্তরিত হবে এবং চলতি বছরেই করোনা ভাইরাসের শেষ দেখা যাবে। সংস্থাটির মহাপরিচালক টেড্রস আধানম গ্যাব্রিয়েসুস বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের রিপোর্টারদের বলেন, ‘স্বাস্থ্যের প্রতি হুমকি ভাইরাসে প্রতিনিয়ত মানুষের মৃত্যু হবে; কিন্তু ভাইরাসটি সমাজকে থামিয়ে দেবে না অথবা হাসপাতাল সিস্টেমকে উলটপালট করে দেবে না, আমি বিশ্বাস করি এ দিনটি শিগগিরই আসবে।


গত ২৮ মার্চ সংস্থাটির নতুন এই গাইডলাইন প্রকাশ করা হয়েছে। সংস্থাটি বলছে, স্বাস্থ্য ভালো এমন তরুণ-তরুণীদের জন্য কোভিডের টিকার প্রয়োরিটি কম দেয়া উচিত। সংস্থাটির গাইডলাইনে বলা হয়েছে, প্রথাগত টিকা যেমন পোলিও, হামের টিকার চেয়ে স্বাস্থ্যবান তরুণ-তরুণীদের মধ্যে কোভিড টিকা কম উপকারী। তরুণ-তরুণীদের টিকা দেয়ার সুপারিশ করার আগে তাদের মধ্যে করোনাভাইরাসে মারাত্মক অসুস্থতা দেখে নেয়া উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য তার সদস্য দেশগুলো কোভিড টিকার নতুন গাইডলাইন বিবেচনা করার অনুরোধ করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ প্রসঙ্গে বলেছে, কোভিড টিকা ও এর বুস্টার ডোজ সব বয়সী মানুষের জন্য নিরাপদ। কিন্তু গাইডলাইনটি করা হয়েছে টিকার দামের কথা বিবেচনা করে। তা সত্ত্বেও বৃদ্ধ ও শিশুদের মধ্যে যারা ইমিউনোকমপ্রোমাইজড (রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যাদের মধ্যে নেই অথবা কম) তাদের ৬ থেকে ১২ মাসের ব্যবধানে নিয়মিত কোভিড টিকা নেয়া উচিত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ‘স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অন ইমিউনাইজেশনের’ চেয়ার ড. হান্না নোহিনেক বলছেন, দেশগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে কম ঝুঁকি সম্পন্ন গ্রুপের মানুষকে টিকা দেবে কি না। সংস্থাটি বলছে, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর ডেমোগ্রাফিক রিসার্চার্সের ড্যাাটাবেসে কোভিডে ৪৪ লাখ মৃত্যুর তথ্য আছে। এর মধ্যে ২০ বছরের নিচের বয়সীদের মৃত্যু ছিল ১৭ হাজার ৪০০ অর্থাৎ ৪৪ লাখ মৃত্যুর মধ্যে ০.৪ শতাংশ ছিল ২০ বছরের নিচের বয়সী শিশু ও কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে। গত কোভিড সংক্রমণে যুক্তরাষ্ট্রে চার বছরের নিচের ৭৩৫টি শিশু মারা গেছে। অপর দিকে ৫ থেকে ১৫ বছরের ৫০০ এবং ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে বয়সী টিএনএজার মারা গেছে ৩৬৫ জন। তারা বলছে, শিশুরা (টিন এজ পর্যন্ত) ছিল কম ঝুঁকিপূর্ণ এবং এরা খুব মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়নি কোভিডে। অবশ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, কোভিড মহামারীর সময়েও মানুষের মধ্যে প্রাকৃতিক প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে।


বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গত কোভিড সংক্রমণের সময় রুটিন ভ্যাকসিনগুলো বিভিন্ন জায়গা দেয়া হয়নি। সংস্থাটি বলছে, রুটিন ভ্যাকসিনগুলো না দিলে সামনে দিনগুলোতে অন্য বিপদ অপেক্ষা করছে। সামনে হয়তো হামের ভাইরাস ভ্যাকসিন প্রতিরোধী হয়ে যেতে পারে। গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কনট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলেছে, ২০২১ সালে বিশ্বব্যাপী চার কোটি শিশুকে হামের ভ্যাকসিন দেয়া হয়নি। ভ্যাকসিনে পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য হাম ভাইরাসের টিকা কোভিডের কারণে শিশুদের না দিতে পারায় তাদের জন্য হয়তো বিপদ অপেক্ষা করছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ভ্যাকসিনের মাধ্যমে এত দিন হাম ভাইরাসকে প্রতিরোধ করে রাখা হয়েছে। উল্লেখ্য, সিডিসি গত মাসে কোভিড টিকাকে রুটিন টিকার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করেছে। (ডেইলি মেইল অনলাইনের ২৯ মার্চের রিপোর্ট অনুসারে প্রতিবেদনটি করা হয়েছে)।

 


আরো সংবাদ



premium cement