২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রেকর্ড জয়ে সিরিজ বাংলাদেশের

ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট নেয়া হাসান মাহমুদ বল হাতে মাঠ থেকে বের হচ্ছেন। তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন সতীর্থরা : নয়া দিগন্ত -


সিলেটে আকাশের মন ভার ছিল গতকালও। সকাল থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি। খেলা অবশ্য গড়াল ঠিক সময়েই। সূর্যের আলো তখনও যথেষ্ট। সাথে জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে স্টেডিয়ামের ফ্লাডলাইটগুলোও। কিন্তু সব আলো ম্লান হয়ে গেল বাংলাদেশের পেসারদের বোলিং রোশনাইয়ের কাছে। আরেকবার টসে জিতে মেঘলা আকাশের নিচে ব্যাট করার সাহস দেখালো আয়ারল্যান্ড। কোনো জবাব দিতে পারল না বাংলাদেশের পেসারদের গতি আর মুভমেন্টের। বেলা আড়াইটায় শুরু ম্যাচের প্রথম ইনিংস শেষ বিকেল পৌনে ৫টাতেই! পেসত্রয়ীর বোলিং দ্যুতিতে ঝলসে গেল আইরিশ ব্যাটিং। হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ আর এবাদত হোসেনের ঝাঁজে কোনরকমে কেবল তিন অঙ্ক পেরোতে পারল তারা। এরপর বাকি কাজটি সারলেন দুই ওপেনার। তাতে বাংলাদেশ পেল আরো একটি দুর্দান্ত জয়।

ডান-হাতি পেসার হাসান মাহমুদের ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ জিতলো স্বাগতিক বাংলাদেশ। সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে আয়ারল্যান্ডকে। নিজেদের আন্তর্জাতিক পথচলা ৩৭ বছরে ৬৯২ ম্যাচে এই প্রথম ১০ উইকেটে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড গড়লো বাংলাদেশ। এর আগে পাঁচবার ৯ উইকেটে ম্যাচ জয়ের কীর্তি আছে টাইগারদের। সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে বাংলাদেশের এটি দ্বিতীয় দ্রুততম জয়। ২২১ বল বাকি রেখেই ম্যাচ শেষ করে বাংলাদেশ। বল বাকি রাখার হিসাবে এর চেয়ে বড় জয় আছে আর কেবল একটি। ২০০৯ সালে চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়েকে ৪৪ রানে গুটিয়ে জয় এসেছিল ২২৯ বল বাকি রেখে। আগামী ২৭ মার্চ থেকে চট্টগ্রামে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজ শুরু করবে বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড।

হাসানের বোলিং তোপে গতকাল প্রথমে ব্যাট করে ২৮.১ ওভারে ১০১ রানে গুটিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। ৩২ রানে ৫ উইকেট নেন হাসান। জবাবে ১৩.১ ওভারে বিনা উইকেটে ১০২ রান তুলে ২২১ বল বাকি রেখে বাংলাদেশের ম্যাচ ও সিরিজ জয় নিশ্চিত করেন দুই ওপেনার অধিনায়ক তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। লিটন ৫০ ও তামিম ৪১ রানে অপরাজিত থাকেন।
টস হেরে প্রথমে বোলিংয়ে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ব্যাট হাতে সাবধানী শুরু ছিল সফরকারী আয়ারল্যান্ডের। ইনিংসের পঞ্চম ও নিজের তৃতীয় ওভারে আয়ারল্যান্ড শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন পেসার হাসান। উইকেটের পেছনে মুশফিকুর রহীমকে ক্যাচ দিয়ে ৮ রানে ফিরেন স্টেফেন দোহেনি।


আয়ারল্যান্ডের আরেক ওপেনার পল স্টার্লিংকেও শিকার করেন হাসান। ইনিংসের নবম ও নিজের পঞ্চম ওভারে স্টার্লিংকে ৭ রানে এলবিডব্লিউ করেন। একই ওভারের চতুর্থ বলে রিভিউয়ের সহায়তায় লেগ বিফোরে হ্যারি টেক্টরকে খালি হাতে বিদায় করেন। হাসানের পেস তোপে ২২ রানেই ৩ উইকেট হারায় আইরিশরা। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারের দ্বিতীয় বলে আয়ারল্যান্ডের অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নিকে ৬ রানে থামান পেসার তাসকিন আহমেদ। স্লিপে তার ক্যাচ নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। হাসান-তাসকিনের তোপে ১০ ওভার শেষে আইরিশদের রান ৪ উইকেটে ২৭। এ অবস্থায় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন লরকান টাকার-কার্টিস ক্যাম্পার। তাতে সফলও হন। পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৫৭ বলে ৪২ রান যোগ করেন। ১৯তম ওভারে চতুর্থবারের মতো আক্রমণে এসে জোড়া আঘাত হানেন পেসার এবাদত হোসেন। ওভারের শেষ দুই বলে টাকারকে ২৮ রানে ও নতুন ব্যাটার জর্জ ডকরেলকে খালি হাতে ফেরান এবাদত। এতে স্কোর বোর্ডে ওঠে ৬৮ রানে ৬ উইকেট।


এবাদতের পর ইনিংসের ২২ ও নিজের সপ্তম ওভারে আয়ারল্যান্ড শিবিরে জোড়া আঘাত হানেন তাসকিন। প্রথম বলে অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনকে ১ ও তৃতীয় ডেলিভারিতে মার্ক অ্যাডায়ারকে খালি হাতে বিদায় করেন তাসকিন। ৭৯ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ১শ’র নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে আইরিশরা। তবে শেষ ২ উইকেটে ২২ রান তুলে কোনো মতে ১শ রান পার করে সফরকারীরা। আয়ারল্যান্ডের নবম ব্যাটার হিসেবে ক্যাম্পারকে শিকার করেন হাসান। চারটি চারে ৪৮ বলে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন ক্যাম্পার। আর শেষ ব্যাটার গ্রাহাম হিউমকে ৩ রানে লেগ বিফোর আউট করে আয়ারল্যান্ডকে ১০১ রানে গুটিয়ে দেন হাসান। এটি বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বনিম্ন দলীয় রান আইরিশদের। বল হাতে ৮.১ ওভার বল করে ৩২ রানে ৫ উইকেট নেন হাসান। ৮ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিলেন ২৩ বছর বয়সী হাসান। তাসকিন ২৬ রানে ৩টি, এবাদত ২৯ রানে ২ উইকেট নেন।


১০১ রানের সহজ টার্গেটে মারমুখী মেজাজে ব্যাটিং শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার তামিম ও লিটন। তৃতীয় ওভারে তামিমের তিনটি চারে ১৩ রান পায় বাংলাদেশ। সপ্তম ওভারে তামিমের প্রথম ছক্কায় ১১ রান পায় টাইগাররা। অষ্টম ওভারে লিটনের দু’টি চারে ১৫ রান আসে। পরের ওভারে লিটন আরো দু’টি চার মারেন। ১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৮১। ১৩তম ওভারে পরপর দু’টি চার মেরে ৩৭ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নবম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন লিটন।
১৪তম ওভারের প্রথম বলে ১ রান নিয়ে ২২১ বল বাকি রেখে বাংলাদেশের ম্যাচ ও সিরিজ জয়ের স্বাদ পাইয়ে দেন তামিম। ৫টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪১ বলে অপরাজিত ৪১ রান করেন তামিম। ৩৮ বলে অনবদ্য ৫০ রান করেন লিটন। তার ইনিংসে ১০টি চার ছিল।


সংক্ষিপ্ত স্কোর :
আয়ারল্যান্ড : ২৮.১ ওভারে ১০১ (দোহেনি ৮, স্টার্লিং ৭, বালবার্নি ৬, টেক্টর ০, টাকার ২৮, ক্যাম্পার ৩৬, ডকরেল ০, ম্যাকব্রাইন ১, অ্যাডায়ার ৩, হিউম ৩, হামফ্রেজ ৮*; হাসান ৫/৩২, তাসকিন ৩/২৬, এবাদত ২/২৯)।
বাংলাদেশ : ১৩.১ ওভারে ১০২/০ (তামিম ৪১*, লিটন ৫০*; অ্যাডায়ার ০/২৯, হিউম ৩০/১৫, হামফ্রেজ ০/৩৬, ক্যাম্পার ০/২১)।
ফল : বাংলাদেশ ১০ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ : ৩ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ২-০তে জয়ী।
ম্যাচসেরা : হাসান মাহমুদ।


আরো সংবাদ



premium cement
ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৩৭ বাংলাদেশে নতুন করে বাড়ছে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা হিট অ্যালার্ট নিয়ে আবহাওয়া অধিদফতরের নতুন বার্তা ভান্ডারিয়ায় পিকআপ চাপায় বৃদ্ধ নিহত হোচট খেল লিভারপুল, পিছিয়ে গেল শিরোপা দৌড়ে যোদ্ধাদের দেখতে প্রকাশ্যে এলেন হামাস নেতা সিনওয়ার! ফের পন্থ ঝড়, ঘরের মাঠে গুজরাটকে হারাল দিল্লি ইউক্রেনকে গোপনে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র গ্রেফতারের পর যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ফিলিস্তিনপন্থীদের বিক্ষোভ আরো বেড়েছে ইউক্রেন যুদ্ধে দুর্নীতি, পুতিনের নির্দেশে গ্রেফতার রুশ উপ-প্রতিরক্ষামন্ত্রী!  আমেরিকানরা কি ধর্ম থেকে সরে যাচ্ছে?

সকল