২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যাংকের মুনাফা কমতে পারে

সতর্কবার্তা মুডিসের
- ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশের ব্যাংকগুলোর মুনাফা কমে যেতে পারে বলে মনে করছে আন্তর্জাতিক ঋণমান নিয়ন্ত্রকারী সংস্থা মুডিস। এর কারণ হিসেবে সংস্থাটি বলেছে, ব্যাংক খাতের তারল্য কমে গেছে। সেই সাথে বেড়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রেপো হার এবং আন্তঃব্যাংক ঋণের সুদহার। ফলে ব্যাংকগুলো চাপে আছে।

মুডিস বলেছে, টাকার বিপরীতে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে। অপর দিকে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমে যাওয়া এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যাংক খাতের তারল্য কমে গেছে। তারল্য কমায় ব্যাংকগুলোয় টাকার চাহিদা বেড়েছে এতে আন্তঃব্যাংক ঋণের সুদহার বেড়েছে। এ ছাড়া মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক রেপো হার বৃদ্ধি করায় তারল্যে প্রভাব পড়েছে।

ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্যাংকিং খাতে অর্থের প্রবাহ বাড়াতে রেমিট্যান্স ও বিদেশী বিনিয়োগ অন্যতম ভূমিকা রাখে। কিন্তু গত অর্থবছরের তুলনায় এ দু’টি খাতের প্রবৃদ্ধি কাক্সিক্ষত হারে হয়নি, বরং কমে গেছে। এতে ব্যাংকিং খাতে অর্থের জোগান কমে গেছে। বিপরীতে বেড়েছে অর্থের চাহিদা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান মতে, ব্যাংকিং খাতে গত জানুয়ারি মাসে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ কমেছে আট হাজার ১২৮ কোটি টাকা। জুন মাসে ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্যের পরিমাণ ছিল দুই লাখ তিন হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা; এরপর তা কমতে কমতে জানুয়ারিতে এসে এক লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় নেমেছে। অক্টোবরেও যা ছিল এক লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা, নভেম্বর মাসে তা এক লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকায় নেমে আসে। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ব্যাংকগুলোর আপৎকালীন ব্যয় মেটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ব্যাংকগুলোর হাতে থাকা ট্রেজারি বিল ও বন্ড বন্ধক রেখে নগদ অর্থের জোগান বাড়িয়ে থাকে। প্রচলিত ব্যাংকগুলো তাদের চাহিদা অনুযায়ী কিনতে পারলেও শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো সহজেই তা পারে না। ফলে এসব ব্যাংকই আগে বিপদে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এসব কারণে মুডিস মনে করছে, নিকট ভবিষ্যতে দেশের কিছু ব্যাংকের অবস্থা খারাপ হতে পারে। বিশেষ করে যেসব ব্যাংকের ট্রেজারি বিল-বন্ড কম, তাদের এ সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, এসব ট্রেজারি বিল-বন্ড বন্ধক রেখে ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংকের কাছ থেকে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বা তহবিল সংগ্রহ করে। এ পরিস্থিতিতে ব্যাংকগুলো তহবিল সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হলে বিপদে পড়তে পারে।তারল্য কমার কারণে বেশ কিছু ব্যাংক ইতোমধ্যে বিপদে পড়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে ব্যাংকগুলোর অ্যাকাউন্ট ঋণাত্মক হয়ে গেছে। অনেকেই যথাযথভাবে বাধ্যতামূলক নগদ জমার হার বা সিআরআর সংরক্ষণ করতে পারছে না। এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে আগামীতে প্রতিষ্ঠানগুলো জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে, যা হবে ওই সব ব্যাংকের জন্য নজিরবিহীন ঘটনা।


আরো সংবাদ



premium cement