২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত

যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য
-


জানুয়ারি মাসে দেশে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত এবং ৮৯৯ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, একজন আহত এবং ছয়জন নিখোঁজ হয়েছেন। সবমিলে জানুয়ারি মাসে সড়ক, রেল ও নৌপথে মোট ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জন নিহত এবং ৯৭৮ জন আহত হয়েছে। এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৫ জন নিহত এবং ১১৪ জন আহত হয়েছে। ইউএনবি।
গতকাল শনিবার যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।


এতে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের চেয়ে ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং দুর্ঘটনায় আহত ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানী ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২০৬ জন চালক, ১০৯ জন পথচারী, ৩৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন শিক্ষক, ১৩ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৫ জন নারী, ৬২ জন শিশু, পাঁচজন সাংবাদিক, একজন মুক্তিযোদ্ধা, দুইজন আইনজীবী, তিনজন প্রকৌশলী এবং ১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় পাওয়া গেছে। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ৯ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ছয়জন পুলিশ সদস্য, একজন বিজিবি সদস্য, দুইজন আনসার সদস্য, ১৫৩ জন চালক, ৮৪ জন পথচারী, আটজন নারী, ৪৬ জন শিশু, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ২৬ জন পরিবহন শ্রমিক, একজন সাংবাদিক, ৯ জন শিক্ষক, দুইজন প্রকৌশলী, দুইজন আইনজীবী ও আটজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।


এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৮১৬টি যানবাহনের পরিচয় পাওয়া গেছে। যার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫ দশমিক ০২ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ১ দশমিক ১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
এ ছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ১ দশমিক ১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।


গত জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭ জানুয়ারি। এ দিন ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন।
অন্য দিকে সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২ জানুয়ারি। এ দিন ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছেন। সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ১১ জানুয়ারি। এ দিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে ৫ জানুয়ারি। এ দিন ১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৭১ জন আহত হয়েছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে- বেপরোয়া গতি। বিপজ্জনক অভারটেকিং। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল। যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা। চালকের অদক্ষতা। চালকের বেপরোয়া মনোভাব। চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার। মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো। রাস্তায় ফুটপাথ না থাকা বা ফুটপাথ বেদখলে থাকা। ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা। ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি। সড়কে চাঁদাবাজি। রাস্তার পাশে হাট-বাজার। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো। চালকের নিয়োগ ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা। দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশানির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement

সকল