২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আইএমএফের ঋণের প্রথম কিস্তি ৪৭ দশমিক ৬২ কোটি ডলার ছাড়

-

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) ঋণের প্রথম কিস্তিবাবদ ৪৭ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ডলার বাংলাদেশের অনুকূলে ছাড় করেছে। বাকি ৪২২ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার ছাড় হবে ৬ কিস্তিতে তিন বছরে। তবে এজন্য আইএমএফ থেকে ব্যাংকিং সংস্কারসহ প্রায় দুই ডজন শর্ত পরিপালন করতে হবে বাংলাদেশকে। প্রতি ৬ মাস অন্তর এ শর্তগুলো পরিপালনের অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট হলেই কেবল পরের কিস্তি ছাড় করা হবে।
প্রথম কিস্তির অর্থ পেতে এর মধ্যে বাংলাদেশ বেশ কিছু শর্ত পরিপালন করতে হয়েছে। এতে অনেক ভোগান্তি বেড়েছে জনগণের। এর মধ্যে জ্বালানি তেলের দাম এক দফায় ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে দুই দফা, বিদ্যুতের দামও পাইকারি ও খুচরায় বাড়ানো হয়েছে দুই দফা। সারের দাম বাড়ানো হয়েছে এক দফা। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম আরো বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এসব কারণে বিশেষ করে পণ্যমূল্য বেড়েছে। এতে স্বল্প আয়ের মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
সূত্র জানায়, ৪৭.৬২ কোটি ডলার ছাড় হওয়ার পর বাকি ৪২২ কোটি ৩৮ লাখ ৩০ হাজার ডলার ৬টি কিস্তিতে ছাড় করবে। ছয় মাস পর পর কিস্তি পাওয়া যাবে। ২০২৬ সালের ডিসেম্বর মধ্যে পুরো ঋণ পাওয়া যাবে। গত বছরের জুলাইয়ে বৈশ্বিক মন্দার নেতিবচাক প্রভাব মোকাবেলা করার জন্য বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ চায়। কিন্তু আইএমএফের বোর্ড অনুমোদন করেছে ৪৭০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ সময় বুধবার রাতে আইএমএফ থেকে এ অর্থ ছাড় করা হয়। বৃৃহস্পতিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ওই অর্থ যোগ হয়েছে। ফলে রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ২৬৯ কোটি ডলারে। এর আগে বৃহস্পতিবার দিনের শুরুতে রিজার্ভ ছিল ৩ হাজার ২১৯ কোটি ডলার। গতকাল গণমাধ্যমকে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক। তিনি মনে করেন, এর ফলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান বেড়ে যাবে; তবে চলমান সঙ্কট রাতারাতি কাটবে না, ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, বাংলাদেশ সময় গত সোমবার মধ্যরাতে আইএমএফের নির্বাহী বোর্ড বাংলাদেশকে তিনটি খাতে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার প্রস্তাব করে। আর মঙ্গলবার দুপুরেই আইএমএফ থেকে অফিসিয়ালি প্রেস রিলিজ ইস্যুর মাধ্যমে বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়। ঋণ অনুমোদনের এক দিন পরই বাংলাদেশ সময় গত বুধবার রাতে ঋণের প্রথম কিস্তি বাবদ ৪৭ কোটি ৬১ লাখ ৭০ হাজার ডলার ছাড় করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার হিসাবে জমা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা অফিসে এসেই বিষয়টি জানতে পেরেছেন। এরপর ওই দিনই সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দেনা পাওনার লেনদেন সম্পন্ন করে রিজার্ভের সাথে যোগ করেছেন। ফলে রিজার্ভ বেড়ে ৩ হাজার ২৬৯ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, বৈশ্বিক মন্দার প্রভাবে বাংলাদেশসহ অনেক অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে। এ সঙ্কট কাটাতে অনেক দেশই আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছে। এ কারণে সংস্থাটি দ্রুত ঋণ ছাড় করেছে। যাতে এই ঋণ দেশগুলোর সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement