২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসলামফোবিয়া রোধে কানাডায় প্রতিনিধি নিয়োগ

-


কানাডায় ইসলামফোবিয়া রোধে প্রথমবারের মতো বিশেষ একজন প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।
গত বৃহস্পতিবার দেশটির ফেডারেল সরকারের পরামর্শক হিসেবে তাকে নিয়োগের ঘোষণা দেয়া হয়।
নিয়োগপ্রাপ্ত ওই প্রতিনিধির নাম আমিরাহ আল-গাওয়াবি। তিনি একজন মানবাধিকার আইনজীবী।
আমিরাহ আল-গাওয়াবির কাজ হচ্ছে- কানাডায় বসবাসরত মুসলিমদের বর্ণবাদ, জাতিগত বৈষম্য ও ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা থেকে নিরাপত্তা দেয়া ও সব ধরনের ইসলামফোবিয়া (ইসলামভীতি) প্রতিরোধ করা। আলজাজিরা
এ প্রসঙ্গে এক বিবৃতি দিয়েছেন ট্রুডো। সেখানে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের দেশে ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে কারোরই ঘৃণা করা উচিত নয়। তাই ইসলামভীতি মোকাবেলায় কানাডার প্রথম বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে আল-গাওয়াবিকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ইসলামভীতি ও সব ধরনের ঘৃণার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ এটি। আমি তার সাথে কাজ শুরু করতে যাচ্ছি। আমরা এমন একটি দেশ গড়তে চাই, যেখানে সবাই নিরাপদ ও সম্মানিত বোধ করবে।’


কানাডার মুসলিমদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন সরকারি নীতি ও আইন প্রণয়ন এবং বিভিন্ন প্রোগ্রাম আয়োজনে সহায়তাসহ নানা ধরনের কাজে পরামর্শ দিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করাই আল-গাওয়াবির প্রধান দায়িত্ব। এর আগে জুন মাসে ইসলামফোবিয়াবিষয়ক প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়া হবে বলে জানিয়েছিল কানাডার ফেডারেল সরকার।
গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব লাভের কথা জানিয়ে আল-গাওয়াবি বলেছেন, ‘আমি কানাডার মুসলিমদের কণ্ঠস্বর প্রসার করতে এবং সব ধরনের বৈষম্য ও ঘৃণার বিরুদ্ধে একসাথে কাজ করার লক্ষ্যে সারা দেশে নির্বাচিত কর্মকর্তা, নীতিনির্ধারক এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের সাথে সাক্ষাতের অপেক্ষায় রয়েছি। মুসলিমদের কখনো হুমকি, কখনো সমস্যায় আক্রান্ত হিসেবে মনে করা হয়। আশা করি, আমরা এই সময় কানাডার মুসলিম সম্প্রদায়ের সমৃদ্ধিসহ এই দেশের বৈচিত্র্যকে সবার সামনে তুলে ধরার সুযোগ পাব।’ তিনি কানাডার বৈচিত্র্য, অন্তর্ভুক্তি ও যুববিষয়ক মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।


আমিরা আল-গাওয়াবি বর্তমানে কানাডিয়ান রেস রিলেশনস ফাউন্ডেশনের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছেন। কার্লটন ইউনিভার্সিটি থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতক শেষ করে সিবিসি সংবাদমাধ্যমে কিছুদিন কাজ করেন। বর্তমানে দ্য টরন্টো স্টার সংবাদপত্রে কলাম লেখেন তিনি। মানবাধিকার ইস্যুতে কানাডার শ্রমিক আন্দোলনের সাথে কাজের পাশাপাশি দ্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিমসে (এনসিসিএম) নাগরিক স্বাধীনতা প্রচারে পাঁচ বছর কাজ করেন তিনি।
আল-গাওয়াবিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে দ্য ন্যাশনাল কাউন্সিল অব কানাডিয়ান মুসলিমসের (এনসিসিএম) সিইও স্টিফেন ব্রাউন বলেছেন, ‘এই প্রথম ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কানাডা সরকার একটি স্থায়ী উদ্যোগ নিয়েছে। এই সময়টি আমাদের জন্য সত্যিই অসাধারণ মুহূর্ত। এখন আমাদের কর্তব্য হলো, আমরা যেন পরিবর্তনের চেষ্টায় একে-অপরকে সাহায্য করি।’
২০২০ সালের গবেষণা মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে সক্রিয় বিদ্বেষী গোষ্ঠীর সংখ্যা তিন গুণ বেড়েছে। অনলাইনে চরমপন্থীদের ‘সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি হলো মুসলিমবিরোধী বক্তব্য দেয়া। এরপর প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো সরকারের উদ্যোগে ইসলামোফোবিয়া ও ইহুদিবিদ্বেষ মোকাবেলায় সচেতনতা সৃষ্টির জন্য সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।


আরো সংবাদ



premium cement