২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিকল্প ভেনুতে বিএনপির সমাবেশ

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদেরকে কার্যালয়ে প্রবেশে পুলিশের বাধা। ইনসেটে ব্যারিকেডের কারণে গাড়িশূন্য বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়ক : নয়া দিগন্ত -

# বিএনপির সাথে ডিএমপির বৈঠক
# দলীয় কার্যালয় খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত
# গ্রেফতারকৃত নেতাদের রিমান্ড চাইবে না পুলিশ

১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ নিয়ে মাসব্যাপী চলা রাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হয়েছে। শেষমেশ নয়া পল্টন কিংবা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কোনোটিতেই সমাবেশ হচ্ছে না। বিএনপি চাইলে রাজধানীর কমলাপুর স্টেডিয়াম অথবা বাংলা কলেজ মাঠে আগামীকাল শনিবার গণসমাবেশ করতে পারবে বলে পুলিশের তরফ থেকে গ্রিন সিগন্যাল দেয়া হয়েছে। পুলিশের সাথে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদলের বৈঠকের পর গত রাতে এই দুইটি স্পট পরিদর্শন করেছেন নেতারা। জানা গেছে, কমলাপুরেই সমাবেশ করার বিষয়ে ভাবা হচ্ছে। গত রাত ১২টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দলটির তরফ থেকে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
গতকাল সন্ধ্যার পর সমাবেশস্থল নিয়ে যে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত আসছে, সেটি বুঝা যাচ্ছিল। এটা নিয়ে ডিএমপি কমিশনারের সাথে দীর্ঘ দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক করে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল।
রাত সাড়ে ৯টায় বৈঠক শেষে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু জানান, ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনের বিকল্প হিসেবে কমলাপুর স্টেডিয়ামে গণসমাবেশের প্রস্তাব দিয়েছে বিএনপি। তবে সমাবেশের জন্য মিরপুরের বাঙলা কলেজ মাঠের প্রস্তাব দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
বিএনপি শীর্ষ এই নেতা জানান, আমরা বাংলা কলেজ ও কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠ পরিদর্শন শেষে স্থায়ী কমিটির সাথে বসে সিদ্ধান্ত নেবো কোথায় সমাবেশ করা হবে।
বুলু বলেন, দীর্ঘ সময়ের বৈঠকে আমরা প্রথম দাবি ছিল বিএনপি কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশ করব। তারা রাজি হননি। তারা বলেছে, পার্টি অফিসে যেতে পারবেন কিন্তু সমাবেশ করা যাবে না।
পরে আমরা আরামবাগের কথা বলেছি। সেটাতেও তারা রাজি হননি। সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট স্কুলের প্রস্তাবেও তারা রাজি হননি। তারা প্রস্তাব করেন বাংলা কলেজ মাঠের কথা। আমরা সাথে কমলাপুর স্টেডিয়াম মাঠের নাম প্রস্তাব করেছি। তারা বলেছেন বিষয়টি তারাও ভেবে দেখবেন। যেটাই পছন্দ হয় সেটাই আমরা ঠিক করব। ১০ তারিখ সমাবেশ ইনশা আল্লাহ হবেই।
তাহলে পল্টন দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসলেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে বুলু বলেন, পল্টন তারা দেবে না, আর আমাদের স্ট্যান্ড সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যাবো না। আমরা এখন মাঠ দুইটি পরিদর্শন শেষে স্থায়ী কমিটিকে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। আমরা এখনই পরিদর্শনে যাবো।
গ্রেফতার নেতাকর্মীদের বিষয়ে কথাবার্তা হয়েছে কি না জানতে চাইলে বুলু বলেন, পুলিশ বলেছে তারা কারো রিমান্ড চাইবে না। দুইনেতার জামিন ইতোমধ্যে হয়েছে।
প্রতিনিধিদলে আরো ছিলেন অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, ডা: এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এ দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানিয়েছেন, এই দুই জায়গায় সমাবেশ করলে সহযোগিতা করা হবে।
আমরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব
গতকাল বিকেলে গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১০ তারিখ আমাদের বিভাগীয় সমাবেশের শেষ কর্মসূচি। এই সমাবেশ থেকে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। আমাদের যেসব দাবি রয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর এসব বিষয়ে আমরা নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করব। সেখান থেকে আমাদের আন্দোলন শুরু হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো যুগপৎভাবে এই আন্দোলনে থাকবে।
গত বুধবার নয়া পল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় পুলিশি অভিযান এবং নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের বিষয় নিয়ে বিএনপি মহাসচিব স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে আসেন।
পুলিশি অভিযান কর্তৃত্ববাদের বহিঃপ্রকাশ’
মির্জা ফখরুল বলেন, নয়া পল্টনে পুলিশের জঘন্য, ন্যক্কারজনক, বর্বরোচিত হামলা সরকারের ফ্যাসিবাদী কর্তৃত্ববাদের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। এ ঘটনা প্রমাণ করে বর্তমান সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করবার সাংবিধানিক অধিকারও কেড়ে নিয়েছে। যা গণতন্ত্র, রাজনীতির জন্য অশনি সঙ্কেত। পুলিশের বর্বরোচিত, কাপুরষোচিত হামলার প্রতিবাদ ও নিন্দার ভাষা আমাদের নেই। এটা গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেয়ার শামিল। আওয়ামী লীগ দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ হয়ে গণ-আন্দোলনে পতনের ভয়ে ভীত হয়ে দেশকে পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
সরকারকে অগণতান্ত্রিক পথ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব। একই সাথে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে পুলিশ প্রত্যাহার এবং ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের প্রতিবন্ধকতা দূর করার দাবিও জানান তিনি। অন্যথায় সব দায় সরকারকে বহন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন ফখরুল।
পুলিশের বোমা বিস্ফোরণ-উদ্ধার নাটক
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মীকে পুলিশ সেখান থেকে গ্রেফতার করেছে। অফিসের কর্মচারীদেরও তারা গ্রেফতার করেছে। এরপর পুলিশ নিজেদের রেখে আসা বোমা উদ্ধার ও বিস্ফোরণ নামের নাটক সাজায় ও মিথ্যাচার করে। আমাকে তারা বিএনপি অফিসে ঢুকতে দেয়নি। আমার সামনেই পুলিশ সেখানে অসংখ্য বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। শুধু পুলিশ নয়, পুলিশের সাথে সোয়াত বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা এই সন্ত্রাসে নিয়োজিত ছিল। যে গুলি করেছে তার আলোকচিত্র এসেছে গণমাধ্যমে, আর্জেন্টিনার ড্রেস পরে গুলি করেছে।
কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের অভিযানের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন
মির্জা ফখরুল বলেন, পুলিশ দাবি করছে যে, বিএনপি কার্যালয়ে বিস্ফোরকদ্রব্য পাওয়া গেছে, কয়েক বস্তা নাকি পাওয়া গেছে। তারা উদ্ধারের তল্লাশি চালানোর জন্য ক্রাইম সিন ঘোষণা করেছে আমাদের অফিসসহ এলাকাটিকে। অথচ আইন হচ্ছে কোনো বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি চালাতে যদি হয় সেই বাড়ির মালিককে সাথে রাখতে হবে। নিরপেক্ষ সাক্ষী থাকতে হবে। সাধারণত এই ধরনের তল্লাশি চালাতে হলে সার্চ ওয়ারেন্ট ইস্যু করতে হয়। এই ক্ষেত্রে কিছুই করা হয়নি। উপরন্তু আমাদের কার্যালয়ে না ঢুকতে দিয়ে পুলিশ চার ঘণ্টা বিএনপি কার্যালয়ের ভেতরে ভাঙচুর করেছে, বোমা রেখেছে, এই সমস্ত বিস্ফোরক নাটক তারা তৈরি করেছে। তিনি বলেন, পুলিশ বিএনপি অফিসে অযাচিতভাবে প্রবেশ করে নিচতলা থেকে ছয়তলা পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন কক্ষ তছনছ করেছে। এমনকি দলের চেয়ারপারসনের কক্ষ, মহাসচিবের কক্ষ, অফিস কক্ষের দরজা তারা অন্যায়ভাবে ভেঙে প্রবেশ করে এবং সব আসবাবপত্র, ফাইল, গুরুত্বপূর্ণ নথি তছনছ করে। তারা কম্পিউটার, ল্যাপটপ, হার্ডডিস্ক এমনকি দলীয় সদস্যদের প্রদেয় মাসিক চাঁদার টাকা, ব্যাংকের চেক বই, নির্বাচন কমিশন সংক্রান্তসহ সব গুরুত্বপূর্ণ নথি নিয়ে গেছে।
১৬০ বস্তা চাল উদ্ধার প্রসঙ্গ
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ঢাকা বিভাগের সমাবেশ। বিভিন্ন নেতাকর্মীরা আসবেন সমাবেশে উপস্থিত হতে। আমি জানি না, আমার নলেজেই নাই। এমনো তো হতে পারে সেটা দেয়া হয়েছিল ওই সমাবেশে যারা আসবেন তাদের জন্য খিঁচুড়ি-টিচুরি রান্না করার জন্য, এটা হতে পারে। তবে ওইখানে ১৬০ বস্তা চাল রাখার কোনো জায়গাই নাই। এটা পুরোপুরি মিথ্যা। আর দুই লাখ পানির বোতল রাখার জায়গা সেখানে নেই।
সমাবেশে বসে যাওয়ার অপপ্রচার
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা ওদের এই প্রচারণায় বেশি গুরুত্ব দেই না। কারণ জনগণ ওদের এই প্রচারণায় বিশ্বাস করে না। আমাদের কনসার্ন জনগণ। জনগণ খুব ভালো করে বুঝে গেছে, আওয়ামী লীগ একটা মিথ্যাচার করা দল। তারা এই মিথ্যাচার করে, মানুষকে ভুল বুঝিয়ে যেমন উন্নয়ন বিভ্রম সৃষ্টি করেছে, তেমনি একইভাবে ভুল প্রচার করে গণতন্ত্র ও রাজনীতি বিভ্রম শুরু করেছে। এটা ছাড়া তারা টিকতে পারে না।
‘যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে’ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা যুগপৎ আন্দোলন করব।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, আবদুল কাইয়ুম, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, নাজিম উদ্দিন আলম, জহির উদ্দিন স্বপন, ফাহিমা মুন্নী, জি এম সিরাজ, আলী নেওয়াজ খৈয়াম, সুলতান মো: বাবু, আবুল হোসেন, তাইফুল ইসলাম টিপু, বেলাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ফখরুলকে কার্যালয়ে যেতে দেয়নি পুলিশ
এ দিকে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিএনপি মহাসচিবের গাড়ি নাইটিঙ্গল মোড়ে আসলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে আটকে দেয়। এ সময়ে মহাসচিবের সাথে দলের ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ও মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান তার সাথে ছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব সরকার এ সময় জানান, ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি অফিসে কারো প্রবেশাধিকার নেই।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পরে উপস্থিত গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে বলেন, আমি বিএনপির মহাসচিব। আমাকে আমার পার্টি অফিসে যেতে দেয়া হলো না এবং তারা যে কথাগুলো বলছে এটা সর্বৈব মিথ্যা। আমাদের ওখানে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। নাথিং ওয়াজ দেয়ার। তারা (পুলিশ) নিজেরা এসব করেছে আপনারা (গণমাধ্যম) তা দেখেছেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, এটা সম্পূর্ণভাবে চক্রান্ত ও পরিকল্পনার প্লট । আমাদের ১০ তারিখের যে সমাবেশকে পুরোপুরি নস্যাৎ করে দেয়ার জন্য এটা সরকারের হীন পরিকল্পনা-চক্রান্ত। গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার জন্য, মানুষের অধিকারকে ধ্বংস করার জন্য, আমার রাজনৈতিক অধিকারকে ধ্বংস করার জন্য, আমার রাজনৈতিক দল হিসেবে আমার নিজের অফিসে যেতে না পারি তাহলে কি করে একজন রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা কাজ করবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমি অবিলম্বে বিএনপি অফিস খুলে দেয়ার দাবি জানাচ্ছি। মির্জা ফখরুল গাড়ি থেকে নেমে যুগ্ম কমিশনারকে বলেন, আমি আমার পার্টি অফিসে যেতে চাই।
এই সময়ে স্যার সম্বোধন করে পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, গতকাল (বুধবার) বিকেল বেলা ও রাতে আমাদের পুলিশ সদস্যদের ওপর বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরে সেখানে অভিযান পরিচালনা করেছি, ককটেল বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। সেটি এই মুহূর্তে আমাদের কাছে ঘটনাস্থল যেটিকে আমরা আইনের ভাষায় বলি প্ল্যাইস অব ওকারেন্স। সো এটা আমরা ক্রাইম সিন হিসেবে বিবেচনা করছি। ক্রাইস সিন হিসেবে আমাদের সিআইডি, বোম ডিসপোজাল টিমের সদস্যরা সেখানে কাজ করছেন। সো এই মুহূর্তে কেউ সেখানে যেতে পারবে না।
মহাসচিব আবারো প্রশ্ন করে জানতে চান যে, আমি আবার অফিসে যেতে পারব কি না? যুগ্ম কমিশনার বলেন, ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে কেউ এলাউড না। নো বডি এলাউড টু গো। মির্জা ফখরুল বলেন, আমি বিএনপির সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে আমার পার্টি অফিসে যেতে পারব কি না এটা আপনি বলুন? এ রকম প্রশ্নের জবাবে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ক্রাইম সিনের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নো বডি ইজ এলাউড টু এন্টার ইন টু দ্য পার্টি অফিস। পরে বিএনপি মহাসচিব গাড়িতে উঠে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গতকাল নয়া পল্টনে পুলিশের গুলিতে নিহত পল্লবী ৫নং ওয়ার্ডের স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল হোসেনের লাশ দেখতে যান এবং তার পরিবারকে সান্ত্বনা দেন। এ সময়ে স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম ছিলেন।
২৪ ঘণ্টা পর সরল ব্যারিকেড : এ দিকে সংঘর্ষের পর বিএনপি কার্যালয় ঘিরে নয়াপল্টন এলাকার দুই দিকের রাস্তায় পুলিশ যে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছিল, সেটি ২৪ ঘণ্টা পর সরিয়ে নেয়া হয়েছে। গতকাল বিকেল ৪টার দিকে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফকিরাপুলের দিকে যাওয়ার রাস্তা এবং ফকিরাপুল থেকে নাইটিঙ্গেল মোড়ের দিকে চলাচলের সড়ক থেকে ব্যারিকেড সরিয়ে উন্মুক্ত করে দেয় পুলিশ। অপর দিকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনেসহ নয়াপল্টনের রাস্তায় গতকাল সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ।
গত বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয়া নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনার পর সেখানে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর সেখানে যায় ক্রাইম সিন ইউনিট। গতকাল বিকেল ৪টার পর কার্যালয়ের ভেতর থেকে ডগ স্কোয়াড নিয়ে বের হতে দেখা যায় বাহিনীর সদস্যদের।
এ দিকে বিএনপি কার্যালয়ে পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট কাজ করায় গতকাল সকাল থেকে ব্যারিকেড দিয়ে রাখা হয় নাইটিঙ্গেল ও ফকিরাপুল মোড়। কেবল জরুরি সেবার সাথে জড়িতদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েন জরুরি কাজে বের হওয়া সাধারণ লোকজন। রাস্তা খুলে দেয়া হলেও গাড়ি নিয়ে পুলিশ টহল অব্যাহত রেখেছে। নয়াপল্টন এলাকার সড়কের দুই পাশের বৈদ্যুতিক খুঁটিতে সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে। মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) এনামুল হক মিঠু জানিয়েছিলেন, ভেতরে তাদের ক্রাইম সিনের লোকজন কাজ করায় নিরাপত্তা বজায় রাখতে রাস্তা বন্ধ রাখা হয়।
সন্ধ্যার পর সরেজমিন দেখা যায়, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের মূল ফটকে তালা নেই। এটি খোলা অবস্থায় রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য কার্যালয়ের সামনে ও আশপাশে অবস্থান করছেন। এ দিকে রাস্তা খুলে দেয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক হয়ে একটি মিছিল নিয়ে যায়। তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।


আরো সংবাদ



premium cement