২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নিথর মাথায় হাত বুলিয়ে বাবাকে খুঁজছে মিথিলা

বাবার লাশের পাশে নিহত মকবুল হোসেনের ছোট্ট মেয়ে মিথিলা : নয়া দিগন্ত -

হাসপাতালের ট্রলিতে পড়ে আছে বাবার লাশ। ছোট্ট শিশু অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে বাবার মুখের দিকে। নিষ্পাপ হাত দিয়ে বিলি কেটে দিচ্ছে মৃত বাবার মাথার চুলে। কাজ শেষে বাসায় ফিরলে ক্লান্ত বাবার মাথায় এভাবেই বিলি কেটে দিতো বুড়ি। হয়তো সে ভেবেছে আজো ক্লান্ত হয়েই শুয়ে আছে বাবা। অথচ বুড়ি বুঝতেই পারছে না তার বাবা আর কোনো দিন ফিরে আসবে না। এটাই বাবার চুলে তার শেষ বিলি কেটে দেয়া। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে এমন দৃশ্য দেখে অনেকেরই চোখ ছলছল করে ওঠে।

গত বুধবার নয়াপল্টনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন বুড়ির বাবা মকবুল হোসেন। গতকাল তার ময়নাতদন্ত শেষ হয়। বাবাকে বাসায় না পেয়ে মা ও স্বজনদের সাথে হাসপাতালে আসে বাবাকে ট্রলিতে শুয়ে থাকতে দেখে বুড়ি। তার স্বজনরা জানান, মকবুল আদর করে একমাত্র মেয়েকে বুড়ি বলে ডাকত। বুটিক্সের কাজ শেষে ক্লান্ত হয়ে বাসায় ফিরলে আট বছরের বুড়ি ছুটে যেত বাবার কাছে। ক্লান্ত বাবার মাথায় হাত বুলিয়ে চুলে বিলি কেটে দিতো। আর সারা দিনে বাসার যত কথা জমানো থাকত সব বলত বাবাকে। বুড়ি হয়তো ভেবেছিল বাবা ক্লান্ত হয়ে শুয়ে আছে। তাই গতকালও মুখে হাত বুলিয়ে চুলে বিলি কেটে দিচ্ছিল। মৃত বাবার সাথে মেয়ের এমন দৃশ্যে হাউ মাউ করে কেঁদে ওঠেন তার মা। কান্না থামাতে পারেননি সাথে আসা অন্য স্বজনরাও। তিনি বলেন, আমাদের কথা বলার কোনো ভাষা নেই। ছোট্ট ভাতিজির মুখের দিকে তাকাতে পারছি না। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি আজ নির্মমভাবে গুলিতে নিহত হলো। আমার ভাইকে হত্যার দায় কে নেবে? আমার ভাই বিএনপি সমর্থন করে। আমরা জানি না তিনি কেন এখানে এসেছিলেন।

নিহত মকবুলের স্ত্রী হালিমা বলেন, আমার স্বামী বিএনপি করত কি না আমি জানি না। তিনি পল্লবীর বাসা থেকে বের হওয়ার সময় কোথায় যাচ্ছেন তা বলেননি। আমার স্বামীকে এভাবে গুলি করে হত্যা করা হলো কেন। আমি এর বিচার চাই। আমি কী নিয়ে বাঁচব, আমার তো কিছুই রইল না। এই মেয়েকে নিয়ে আমার পথে বসা ছাড়া আর কোনো গতি নেই।

এ দিকে ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় মকবুল হোসেনের লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তার শরীর থেকে ৪-৫টি গুলি পাওয়া গেছে। ঢামেক ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক ডা: সোহেলী মজুমদার বলেন, ময়নাতদন্তের সময় তার দেহে ৪-৫টি গুলি পাওয়া যায়। আমরা গুলিগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছি। পরে তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। নিহত মকবুলের ভাই নূর হোসেন বলেন, লাশ নিয়ে মিরপুরের কালশীতে জানাজা শেষে কালশী কবরস্থানে দাফন করব। তিনি বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হাসপাতালে এসেছিলেন। তিনি আমাদের সান্ত্বনা দিয়ে গেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল