২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
গ্রুপসেরা হয়েই নকআউটে নেদারল্যান্ডস

২০ বছর পর দ্বিতীয় রাউন্ডে সেনেগাল

সেনেগাল ২-১ ইকুয়েডর : নেদারল্যান্ডস ২-০ কাতার
-

খলিফা ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়ামে রেফারির শেষ বাঁশি বাজার সাথে সাথে সেনেগালের শিবিরে যখন বাঁধভাঙা উল্লাস, তখন কান্নার রোল ইকুয়েডরের তাঁবুতে। এই চিত্র ভিন্নই হতে পারত। যদি ‘এ’ গ্রুপের ২০ বছর পর দ্বিতীয় এই ম্যাচ ড্র হতো বা জয় পেত ইকুয়েডর। তা না হয়ে রেজাল্ট গেছে সেনেগালের পক্ষে। তারা ২-১ গোলে প্রতিপক্ষকে হারিয়ে পৌঁছে গেছে দ্বিতীয় রাউন্ডে। দলে নেই তারকা স্ট্রাইকার সাদিও মানে। তার ইনজুরিজনিত অনুপস্থিতি দলকে ভীষণ বিপদে ফেললেও তা থেকে দারুণভাবে উত্তরণ। এরই ফলশ্রুতিতে কাতার বিশ্বকাপ প্রথম ম্যাচে হেরেও টানা দুই ম্যাচ জিতে সেনেগাল ২০০২ সালের পর এখন এই আসরের দ্বিতীয় রাউন্ডে। তিন খেলায় ৬ পয়েন্ট সেনেগালের। এই জয়ের ফলে ২০ বছর পর দ্বিতীয় রাউন্ডে সেনেগাল। ৭ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নেদারল্যান্ডস। ৪ পয়েন্টে তৃতীয় ইকুয়েডর। কাল অপর ম্যাচে ডাচরা ২-০তে হারায় কাতারকে।
জিততেই হবে। ড্র করলেও রক্ষা নেই। ‘এ’ গ্রুপের এই ম্যাচটি ড্র হলে সেনেগালকে টপকে পরের রাউন্ডে চলে যাবে ইকুয়েডর। তাই আফ্রিকান দেশটি নকআউট রাউন্ডে উন্নীত হওয়ার জন্য প্রথম থেকেই চড়াও হয়ে খেলতে থাকে। তবে চান্স বলতে পরিষ্কার কিছুই আসছিল না। শেষ পর্যন্ত পেনাল্টি নামের স্পটকিকই ম্যাচে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে সেনেগালকে। মাঝমাঠে এক খেলোয়াড়ের ভুলে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন সেনেগালের ইসমাইলা সার। বক্সে তিনি বিপজ্জনক অবস্থায় চলে গেলে ছুটে এসে তাকে ফেলে দেন ডিফেন্ডার ফেলিক্স টরেস। সাথে সাথেই রেফারির দেয়া স্পট কিকের নির্দেশ। ভারের সহায়তা নেয়াই লাগেনি। সেই স্পটকিক থেকে দলকে এগিয়ে নেন ইসমাইলা সারে নিজেই। ম্যাচের বয়স তখন ৪৪। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় বিভাগের দল ওয়ালফোর্ডে খেলেন এই সেনেগালিজ।
তবে মাথা গরম করে খেলতে থাকা সেনেগালিজরা ফাউল করতে থাকে। ৬৬ মিনিটে তেমন এক ফাউল থেকেই ফ্রি-কিকে সমতা আনে ল্যাতিন আমেরিকা থেকে চতুর্থ দল হিসেবে কোয়ালিফাই করা ইকুয়েডর। ফ্রি-কিকে বলে হেড করেন তাদেরই এক ফুটবলার। বল একেবারে ফাঁকায় গিয়ে পড়ে ইংল্যান্ডের ব্রাইটনে খেলা মোসেজ সেইসেদোর সামনে। ফলে তা পা লাগিয়ে সমতা আনতে মোটেই ভুল করেননি সেইসেদো। তবে ইকুয়েডরিয়ানদের এই গোলউৎসব মাত্র ৩০ সেকেন্ড স্থায়ী হয়। পরের মুহূর্তেই পাওয়া ফ্রিকিকে ফের লিড মুসলিম দেশটির। ৬৭ মিনিটে ফ্রিকিকের বলে দুর্বল ক্লিয়ারেন্স ডিফেন্স লাইনে। ফলে বল বক্সের ভেতরই থাকা সেনেগালের অধিনায়ক খালিদু কাউলুবালের সামনে পড়লে ডান পায়ের কোনাকুনি ভলিতে তা জালে পাঠান চেলসিতে খেলা এই ফুটবলার। সেনেগালের কৃতিত্ব তারা প্রথম ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের কাছে ০-২ গোলে হারলেও পরে টানা দুই জয়ে চলে গেল নকআউটে। আগের ম্যাচে তারা ৩-১ গোলে জিতেছিল কাতারের বিপক্ষে। আর ইকুয়েডর এবারের বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে জিতে (কাতারকে ২-০ গোল হারায়) এবং শক্তিশালী নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেও ছিটকে পড়ল প্রথম রাউন্ড থেকে।
গ্রুপসেরা হয়েই নকআউটে নেদারল্যান্ডস : স্বাগতিক কাতারে বিপক্ষে গ্রুপের অপর ম্যাচে নকআউটের টিকিটের জন্য নেদারল্যান্ডসের কমপক্ষে ড্র প্রয়োজন ছিল। এমন সমীকরণ সামনে নিয়ে মাঠে নামে ইউরোপের দেশটি। শেষ পর্যন্ত ড্র নয়, ২-০ গোলের জয়েই গ্রুপের শীর্ষে থেকে নকআউট নিশ্চিত করল ডাচরা।
আল বায়েত স্টেডিয়ামে গতকাল স্বাগতিক কাতারের বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই প্রধান্য বিস্তার করে খেলে নেদারল্যান্ডস। ম্যাচে ৬৩ শতাংশ বল নিয়ন্ত্রণে ছিল নেদারল্যান্ডসের। তবে সময় গড়ানোর সাথে সাথে খেলায় কিছুটা ফেরার চেষ্টা করেছিল স্বাগতিকরা। প্রথম দুই ম্যাচ হেরে বিশ্বকাপ থেকে আগেই বিদায় নিশ্চিত ছিল কাতারে। ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে কাতারের গোলমুখে তৈরি জটলার থেকে ড্যানি ব্লিন্ডের শট রুখে দেন কাতারের গোলরক্ষক মেশাল বারশাম। ম্যাচের ২৬ মিনিটে দ্বিতীয় আক্রমণে গোল আদায় করে নেয় ডাচরা। বক্সের মধ্যে মাথায় বল পেয়ে একজন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জোড়ালো শটে গোল করেন কোডি গাকপো। প্রথমার্ধ ১-০ গোলেই শেষ করে দুই দল।
দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নেমে ম্যাচের ৪৯ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেদারল্যান্ডস। মেমফিস ডিপের শট প্রথমে গোলরক্ষক মেশাল বারশাম ঠেকিয়ে দিলেও ফিরতি বলে কাতারের জালে জড়ান ফ্রেঙ্কি ডি জং। ৬৮ মিনিটে আবার গোল করে ডাচরা। কিন্তু ভিএআর চেকের মাধ্যমে হ্যান্ডবল হওয়ায় গোলটি বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত ২-০ গোলের জয়েই ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউটে নেদারল্যান্ডস।


আরো সংবাদ



premium cement