২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি

৩ মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে দুদকের প্রতি নির্দেশ

-

বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি ও অর্থ আত্মসাতের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আগামী তিন মাসের মধ্যে যথাযথ আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। প্রতিবেদন দাখিলের পর উচ্চ আদালতে হলফনামা দিতে বলা হয়েছে। গতকাল বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ তিন মামলায় ব্যাংকটির সাবেক কর্মকর্তা মোহম্মদ আলীর জামিন প্রশ্নে রুল খারিজ করে এ নির্দেশ দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এস এম আবুল হোসেন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এ ঘটনায় করা ৫৬টি মামলার মধ্যে ১২টি মামলার আসামি মোহাম্মদ আলী। এর মধ্যে তিন মামলায় তিনি জামিন চেয়েছেন। পরে জামিন শুনানিতে গত ৮ নভেম্বর হালনাগাদ তথ্য চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে প্রতিবেদন দাখিল করে দুদক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরে তদন্তাধীন। তদন্ত দীর্ঘায়িত হওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো আত্মসাৎ করা অর্থ সম্পূর্ণরূপে নগদে উত্তোলনের মাধ্যমে টাকার অবস্থান গোপন করা হয়েছে। মামলায় গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের শনাক্তকরণ ও তাদের জবানবন্দী গ্রহণ (১৬১ ধারায়) কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সাক্ষীদের কাছ থেকে আশানুরূপ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। বর্ণিত মামলায় আলামত প্রচুর ও ব্যাংকের বিশাল পরিমাণ কাগজপত্র থেকে প্রকৃত সব আলামত শনাক্ত করা সময়সাধ্য। এ ছাড়া প্রকৃত আসামি শনাক্তের প্রক্রিয়াটিও এ মামলায় বেশ জটিল। এ ছাড়া মামলার প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহের জন্য মালয়েশিয়ায় এমএলএআর করা হয়েছে। সে সংক্রান্ত প্রতিবেদন ও আলামত এখনো পাওয়া যায়নি।
দুদকের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের বিভিন্ন শাখা থেকে প্রায় দুই হাজার ৭৭ কোটি ৩০ লাখ ২৯৯১ টাকা, যা সুদসহ দুই হাজার ৫৯০ কোটি ৪৯ লাখ ৯১ হাজার ৪৫৩ টাকা আত্মসাতের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রাথমিক অনুসন্ধান করে মোট ৫৬টি মামলা দায়ের করে। এসব মামলায় ৮২ জন ঋণ গ্রহীতা ছাড়াও বেসিক ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) কাজী ফকরুল ইসলাম, ডিএমডি ফজলুস সোবহান, সাবেক ডিএমডি শেখ মঞ্জুর মোরশেদ, জিএম এ মোনায়েম খান, জিএম মোহাম্মদ আলী ওরফে মোহাম্মদ আলী চৌধুরীসহ ২৭ কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়।
বেসিক ব্যাংকের গুলশান শাখা, প্রিন্সিপাল/প্রধান শাখা, দিলকুশা শাখা এবং শান্তিনগর শাখাসহ মোট চারটি শাখার ঋণ কেলেঙ্কারির বিষয়ে গুলশান থানায় ২৩, মতিঝিল থানায় ১২ ও পল্টন থানায় ২১টিসহ মোট ৫৬টি মামলা করা হয়। মামলায় ২৭ বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা, ৮২ ব্যবসায়ী ও ১১ বেসরকারি সার্ভেয়ারসহ মোট ১২০ জনকে আসামি করা হয়। এর মধ্যে মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামলাগুলোর আগের তদন্ত কর্মকর্তারা বদলির কারণে অন্যত্র চলে যাওয়ায় একাধিকবার তদন্ত কর্মকর্তাও পরিবর্তন করা হয়েছে। মামলাগুলোর তদন্তকাজ এগিয়ে চলছে। আসামি ও আলামত শনাক্ত করা, সাক্ষীদের জবানবন্দী গ্রহণ ও এমএলএআরের পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশ থেকে মামলার প্রয়োজনীয় আলামত পাওয়া সাপেক্ষে। একইসাথে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া শেষ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সব মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
৫৬টি মামলায় আত্মসাৎ করা অর্থের মধ্যে ১১৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা উদ্ধার বা ব্যাংকে জমা করা হয়েছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement