২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জনগণ আ’লীগের বিদায় চায়

কুমিল্লায় গণসমাবেশে ফখরুল
কুমিল্লার গণসমাবেশে বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত -


বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারি দলের উদ্দেশে বলেছেন, এখন বাংলাদেশের মানুষ আপনাদের বিদায় দেখতে চায়। সময় থাকতে কেটে পড়–ন। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ সরকার আমাদের সব অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে, নষ্ট করে দিয়েছে সব স্বপ্ন। যেদিকে তাকাবেন খালি চুরি আর চুরি। দেশের মানুষ আওয়ামী লীগের বিদায় দেখতে চায়। কুমিল্লা টাউন হল মাঠে গতকাল শনিবার বিকেলে বিভাগীয় গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বিএনপি মহাসচিব গণসমাবেশের মঞ্চে উঠেই উপস্থিত জনতার উদ্দেশে বলেন, ‘গোমতী নাকি কুমিল্লা চান’? এতে উপস্থিত জনতা কুমিল্লা বলে জবাব দেন। এরপর বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ যেখানে আপনারা দাঁড়িয়ে আছেন, এই সমাবেশের জন্যই নয়ন খুন হয়েছে। নয়নের বুকে জ্বলা আগুন এই সমাবেশ। সরকার ভাতে মারছে, গুলিতে মারছে। আপনারা দেখেছেন, তারা (এমপি-মন্ত্রীরা) দিন দিন কী মোটা হচ্ছে। ১০ তলা বাড়ি থেকে ২০ তলা বাড়ি হচ্ছে তাদের। কিন্তু দেশের কী হচ্ছে?
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১৮ সালের রাতের ভোট এবার কি আপনারা চান? না চাইলে ১০ ডিসেম্বর আসুন। আমরা নির্দলীয় সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচনে যাচ্ছি না। নির্বাচন হবে কেয়ারটেকার (তত্ত্বাবধায়ক) সরকারের হাতে। আপনার মন্ত্রীরা মন্ত্রী থাকবে, আপনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন- আর নির্বাচন দেবেন, তামাশা পেয়েছেন?’ তিনি বলেন, ‘এখন মানুষ বলে আগে জানলে ভাঙা নৌকায় উঠতাম না। মানুষ নৌকায় উঠে ভুলের মাশুল দিচ্ছে। চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ সব কিছুর আকাশ ছোঁয়া দাম। এই সরকার মানুষের স্বপ্ন লুটে খেয়েছে। এ জন্য বলি, মানুষ না খেতে পেরে রাস্তায় নেমেছে।’


বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীন হতে ৭১ সনে একবার যুদ্ধ করেছি। এখন আবার যুদ্ধ করতে হচ্ছে ভোটের অধিকারের জন্য। আমরা আরেকটা ৭১ আনবো। এবারের যুদ্ধ হবে ভোট চোর, কম্বল চোরের বিরুদ্ধে।’ বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেক মন্ত্রীরা দেখি, কী কী জানি বলে। আপনারা বলেন, আওয়ামী লীগ নির্দলীয় সরকারের মাধ্যমে নির্বাচন করলে কী জামানত থাকবে? শোনেন, এই সাধারণ মানুষকে নিয়ে যেমন খুশি তেমন আর করার সুযোগ নেই।’ তিনি বলেন, ‘শুনেছি, ১৫ দিনে নাকি রাজশাহীতে ৩৫ মামলা হয়েছে। সব গায়েবি মামলা। ১০ ডিসেম্বরের আগে এমন বহু গায়েবি মামলা হবে। এদের (সরকারের) চামড়া গণ্ডারের মতো। সব করে তারা দোষ দেয় বিএনপির। তারা বলে, আমরা নাকি অগ্নিসন্ত্রাস করব। শুনুন, অগ্নিসন্ত্রাস করতে গিয়ে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা ধরা খেয়েছে বিএনপি নয়।’


ফখরুল বলেন, ‘১০ বছরে এই লুটেরা সরকার খেয়েছে ৮৬ লাখ কোটি টাকা। আর এক বছরে বিদ্যুতের নামে খেয়েছে ৭৮ হাজার কোটি টাকা। এগুলো কে খেয়েছে? বিএনপি? শোনেন পত্রিকায় দেখলাম, গণসমাবেশে সাধারণ মানুষ যাচ্ছে। আচ্ছা এটা কী অস্বাভাবিক কিছু? মানুষ এখন নিরুপায়। তারা নাকি আমাদের পূর্বাচলে পাঠাবে, তারপর আরেকটু এগিয়ে এলেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। আমরা বলি, আরেকটু এগিয়ে আসুন। তা ছাড়া উপায় নাই। এ গিয়ে আসতেই হবে। ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ পল্টনেই হবে। সব ফয়সালা রাজপথে হবে। গুম, খুন হত্যা, নির্যাতন সব কিছুর বিচার বাংলার মাটিতেই হবে। এ দেশের মানুষ করবে।’
মির্জা ফখরুল আরো বলেন, এ সরকার রিজার্ভ চিবিয়ে খেয়েছে। আগামী তিন মাসের আমদানি-রফতানির জন্য ডলার নেই। এত রিজার্ভ কোথায় গেল? নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজ মানুষের কোনো আয় নেই। অথচ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আয় আছে। চাঁদাবাজি, দলীয়করণ করে তারা আয় করছেন, লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে শূন্য করে ফেলছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জোর করে দুবার নির্বাচন করেছে। ২০১৪ সালে কেউ ভোট দিতে কেন্দ্রে যায়নি। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। ২০১৮ সালেতো আগের রাতে ভোট শেষ হয়ে গেছে।


সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমিন উর রশিদ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন ও মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা। এতে আরো বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শাহেদা রফিক, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট বোরহান উদ্দিন, কুমিল্লা বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সাবেক এমপি জাকারিয়া তাহের সুমন, শিল্প সম্পাদক আবুল কালাম, খাদেম মাহমুদ স্বপন, কেন্দ্রীয় তথ্য সম্পাদক জিয়া উদ্দিন নসু, লায়ন হারুন-উর রশিদ, রাসেদা বেগম হীরা, মোহাম্মদ সেলিম ভূঁইয়া, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সহসভাপতি সাইদুল হক শহীদ, আবদুল খালেক, তাকদির হোসাইন জসিম, অ্যাডভোকেট রকিব শিকদার, সাবেক এমপি মঞ্জুরুল আহসান মুন্সী, ড.খন্দকার মারুফ হোসাইন, সৈয়দ জাহাঙ্গীর আহম্মেদ, জালাল উদ্দিন, এফ এম কামাল উদ্দিন চৌধুরী, কাজী রফিক, শাহ মোহাম্মদ সেলিম, একরামুল হক মিন্টু, সাবেরা আলাউদ্দিন,জিয়া উদ্দিন জিয়া, মোশারফ হোসাইন, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া, মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাজী জসিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় এস এম জিলানী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, মৎসজীবী দলের সভাপতি এম হেলাল, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় নেতা আনোয়ার হোসাইন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্চাসেবক দলের নেতা ইয়াছিন আলী, কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা সজিবুল ইসলাম, যুবদল ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক আকরাম উদ্দিন মিন্টু, জাসাসের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক হারুন জামাল, ওলামা দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ মেছবাহুল হক, চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সলিমুল্লাহ সেলিম, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান, বি.বাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক, জিল্লুর রহমান, দক্ষিণ জেলা যুবদলের সভাপতি আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জাতিয়তাবাদী আইনজীবী দলের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কাইয়ুমুল হক রিংক্কু, যুবদলের মহানগরী আহ্বায়ক মনজুরুল আলম, জেলা শ্রমিকদলের নেতা আবদুর রহমান, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্চাসেবক দলের নেতা নজরুল ইসলাম, মহানগর স্বেচ্চাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মজিবুর রহমান পারভেজ, মহানগর স্বেচ্চাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল মামুন, মহানগর ছাত্রদল নেতা রিয়াজ উদ্দিন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাজিবুর রহমান নিশি, মহানগর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শিবলু, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আহ্বায়ক মামুন, দক্ষিণ জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তোফায়েল আহম্মেদ, কৃষক দলের কুমিল্লা মহানগর আহ্বায়ক মোস্তফা জামান, কৃষক দলের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক ইকরাম হোসনে তাজ, দক্ষিণ জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক সাকিনা বেগম, তাঁতি দলের দক্ষিণ জেলা নেতা জি এস কামাল, শ্রমিক দলের মহানগর নেতা নুরুল ইসলাম, জাসাস কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম, মহানগর জাসাসের আহ্বায়ক মনজুরুল আলম, জাসাস কুমিল্লা দক্ষিণের সদস্য সচিব ইমরান হোসাইন, মহানগর মৎসজীবী দলের আহ্বায়ক আমির হোসাইন, মৎসজীবী দলের দক্ষিণ জেলা আহ্বায়ক সাজ্জাদ জামিল লিটন, মহানগর তাঁতি দলের আহ্বায়ক নবীউল্লাহ নবী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি মাহবুব আলম।


এ অঞ্চলের মানুষ কুমিল্লা নামে বিভাগ চায় : খন্দকার মোশাররফ
ডক্টর খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আমরা কুমিল্লাকে নিয়ে গর্ব করি। বর্তমান সরকার প্রধান কুমিল্লার মানুষকে দেখতে পারেন না, কুমিল্লার মানুষকে নানা অপবাদ দেন। এ অঞ্চলের মানুষ কুমিল্লা নামে বিভাগ চায়। সরকার প্রধান হীনম্মন্যতার পরিচয় দিয়ে যদি অন্য যে নামেই বিভাগ দেন, আমরা সবাই তা প্রত্যাহার করব। এ সরকারের সময় শেষ। আগামী দিনে আমরা ক্ষমতায় গেলে কুমিল্লা নামে বিভাগ করব, এ আশ্বাস দিয়ে গেলাম। খন্দকার মোশাররফ বলেন, যে দেশে গণতন্ত্র নেই সে দেশে মানবাধিকারও থাকতে পারে না। সে জন্য এই অবৈধ সরকারের হাতে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে। হত্যা, গুম, খুন, মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা বিরোধী কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিতে চায়। ডিসেম্বর থেকে সরকারকে বিদায় করার কর্মসূচি শুরু হবে। খন্দকার মোশাররফ বলেন, এই সমাবেশ টাউন হলের নয়, এই সমাবেশ কুভুল্লা শহরের সমাবেশে পরিণত হয়েছে।


নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আমরা চাই একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হোক। তখন দেখা যাবে জনগণ খালেদা জিয়া, তারেক রহমানকে পছন্দ করে কি না? এখন চাপা মারতেছেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আপনারা একজনও জিতবেন না।
বিএনপির এই সমাবেশ সরকারের হৃদকম্পন বাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের ছোট ভাই নয়নকে খুন করা হয়েছে। নয়নের রক্ত বৃথা যেতে দিবো না। তার রক্তের বদলা হিসেবে দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করে ছাড়ব। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকের এই সমাবেশ সরকারের সব সমাবেশের জবাব দিয়ে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা দেয়াল টপকিয়ে সমাবেশ থেকে পালিয়েছে। আটটি বিভাগীয় সমাবেশ দিয়ে প্রমাণ হয়েছে জনগণ বিএনপির সাথেই রয়েছে।


গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে টাউন হল মাঠ ছাপিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা নগরের জিলা স্কুল সড়ক, ভিক্টোরিয়া কলেজ সড়ক, নজরুল অ্যাভিনিউ, পুলিশ লাইনস সড়কে অবস্থান নেন। কুমিল্লা টাউন হল মাঠের সামনের সড়ক, পূবালী চত্বর ঘিরে আছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী।
বেলা ১১টায় কুরআন তিলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ শুরু হয়। এরপর মুনাজাত হয়। মুনাজাতে বিএনপির নিপীড়িত নেতাকর্মী, গুম ও হত্যার শিকার নেতাকর্মীদের জন্য দোয়া করা হয়। পরে দলীয় সঙ্গীত ‘প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ’ পরিবেশন করা হয়। এরপর তিন জেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।


জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, দলের পাঁচ নেতাকে গুলি করে হত্যার প্রতিবাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি বিভাগীয় পর্যায়ে ধারাবাহিকভাবে এ গণসমাবেশ করছে। এর আগে গত ১২ অক্টোবর চট্টগ্রমে প্রথম গণসমাবেশ হয়। পরে ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল, ফরিদপুর ও সিলেটে সমাবেশ হয়। আগামী ৩ ডিসেম্বর রাজশাহী এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমহাসমাবেশ হবে।


মঞ্চে ঠাঁই হয়নি সাক্কুর : বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মনিরুল হক সাক্কু গণসমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। তবে মঞ্চে না, তার স্থান হয়েছে মাঠে। নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে তাকে মাঠের পূর্ব পাশে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে মনিরুল হক সাক্কু বলেন, দল আমাকে বহিষ্কার করলেও আমি দল ছাড়িনি। ৪৪ বছর ধরে বিএনপি করছি। আমি সমাবেশ শুরু হওয়ার বহু আগে থেকে প্রচারণা চালিয়েছি। দলের একজন কর্মী হিসেবে সকাল ৯টায় সমাবেশস্থলে হাজির হয়েছি। অন্য দিকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের কুমিল্লা মহানগর সভাপতি পদ থেকে বহিষ্কৃত নেতা নিজাম উদ্দিন কায়সারকেও সমর্থকদের সারিতে বহর নিয়ে বসতে দেখা গেছে।


মোবাইল ইন্টারনেটে প্রায় বন্ধ : বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় সমাবেশ। কিন্তু সমাবেশস্থল ও আশপাশের অন্তত এক কিলোমিটার এলাকায় শুরুতে মোবাইল ইন্টারনেটে ধীরগতি থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে মোবাইলে ইন্টারনেট অনেকটা বন্ধ হয়ে যায়।
এতে সম্মেলন কাভার করতে আসা সাংবাদিক এবং সম্মেলনে অংশ নেয়া বিএনপির নেতাকর্মীরা ভোগান্তিতে পড়েন। নগরীর টমছম ব্রিজ, চকবাজার, টাউন হল ও আশপাশের এলাকা, মনোহরপুর, বাদুরতলা, ঝাউতলা ও নজরুল অ্যাভিনিউ, শাসনগাছা এলাকায় কোনো ধরনের মোবাইল ইন্টারনেট সেবা কাজ করেনি বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।


২৪ সালের আগেই শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে : বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা সমাবেশে বলেন, দেশে ইভিএমে কোনো ভোট হবে না, ভোট হবে ব্যালটে। সরকার ইভিএমের নাটক করছে। যতই নাটক করেন কাজ হবে না। ২০১৪ এবং ১৮ সালের নীলনকশায় আগামী ২৪ সালে কাজ হবে না। ২০২৪ সালের আগেই শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। মানুষ এখন আর পুলিশের গুলিকে ভয় পায় না। নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আমরা নির্বাচনে যাবো।
অর্ধশত নেতাকর্মীর মোবাইল ফোন চুরি : গণসমাবেশ শুরুর আগে হাজির হওয়া নেতাকর্মীদের অর্ধশতাধিক মোবাইল ফোন চুরি হয়েছে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা এই অভিযোগ করেন। গত শুক্রবার রাত থেকে গতকাল দুপুর ১২টার দিকে নগরীর টাউনহল মাঠে সমাবেশ শুরুর আগে এসব চুরির ঘটনা ঘটে।
মোবাইল ফোন চুরির ভুক্তভোগীর মধ্যে রয়েছেন সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানাও। শুক্রবার রাতে সমাবেশস্থল থেকে তার মোবাইল ফোনটি চুরি হয়।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement