২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ওপেকের তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ যুক্তরাষ্ট্র

আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়
-

ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এ সিদ্ধান্তকে ‘হতাশাজনক’ অভিহিত করেছেন। হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র কারিন জঁ পিয়েঘ বলেছেন, এটা স্পষ্ট যে, ওপেক প্লাস রাশিয়ার পক্ষ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার একচেটিয়াত্ব রোধ আইনের আওতায় ওপেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা ভাবছে। সিএনএন ও ব্লুমবার্গ।
মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাতে সিএনএন জানিয়েছে, ওপেকের বিরুদ্ধে এন্টি ট্রাস্ট আইনে ব্যবস্থা গ্রহণের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখতে হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার তেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তকে স্পষ্টত বৈরী আচরণ হিসেবে বিবেচনা করছে। প্রভাবশালী মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ওপেক প্লাসের সিদ্ধান্তকে ‘বাজারে তেলের মূল্য বাড়িয়ে অন্যায্য মুনাফা লাভের নির্লজ্জ প্রয়াস’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, আমাদেরকে অবশ্যই ওপেকের বেআইনি প্রাইস ফিক্সিং চক্র বন্ধ করতে হবে, সৌদি আরবকে সামরিক সহায়তা দান বন্ধ করতে হবে এবং তেজী গতিতে নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে যেতে হবে।
ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলোর অসংখ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর থেকে আন্তর্জাতিক জ্বালানি বাজারে অস্থিরতা চলছে। এ অবস্থায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম যাতে সহনীয় হয় সে জন্য সৌদি আরবকে উৎপাদন বৃদ্ধির অনুরোধ জানাতে তিন মাস আগে রিয়াদ সফর করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সৌদি আরবের কাছ থেকে তিনি সেবার স্পষ্ট কোনো প্রতিশ্রুতি পাননি।
এবার তেলের মূল্যবৃদ্ধির লক্ষ্যে উৎপাদন হ্রাসের প্রস্তাব প্রথম আসে রাশিয়া ও সৌদি আরবের পক্ষ থেকে। ওপেক ও ওপেকের বাইরের রফতানিকারক দেশগুলোর ফোরাম ওপেক প্লাস বুধবার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে অপরিশোধিত তেল উৎপাদন দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
রুশ সরকারের আয় কমাতে যুক্তরাষ্ট্রসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোর ফোরাম জি-৭ রাশিয়া থেকে রফতানিকৃত তেলের সর্বোচ্চ মূল্যসীমা বেঁধে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রতি ব্যারেল রুশ তেলের দাম সর্বোচ্চ কত হবে তা এখনো নির্ধারণ না হলেও জানা গেছে, আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে এ মূল্যসীমা আরোপ করা হবে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সদস্য দেশগুলোর স্থায়ী প্রতিনিধিরা মঙ্গলবার এক বৈঠকে রাশিয়ার তেলের ওপর জি-৭ আরোপিত মূল্যসীমা কার্যকরের সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। এর এক দিন পরই ওপেক প্লাসের বৈঠকে উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত এলো।
ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, ওপেক প্লাস ২০ লাখ ব্যারেল উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্ত নিলেও বাজার থেকে কার্যত নাই হয়ে যাবে দৈনিক ৫০ লাখ ব্যারেল। রাশিয়ার উপ প্রধানমন্ত্রী (জ্বালানি) আলেক্সান্দার নোভাক আগেই বলেছেন, তার দেশ মূল্যসীমা আরোপকারী দেশগুলোতে তেল রফতানি করবে না। মূল্যসীমা আরোপ হলে রাশিয়া সাময়িকভাবে উৎপাদন আরো কমিয়ে দেবে। এতে করে বাজারে যে সঙ্কট সৃষ্টি হবে তাতে তেলের দাম অনেক বেড়ে যাবে। দাম বেড়ে গেলে আবারো উৎপাদন বৃদ্ধি করবে রাশিয়া।
এ দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, ওপেক প্লাসের উৎপাদন হ্রাসের সিদ্ধান্তের পরপর ভেনিজুয়েলার সাথে তেল খাত সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। চুক্তির আওতায় রুশ তেল কোম্পানিগুলো ভেনিজুয়েলায় কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পাবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement