২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিএনপির আন্দোলনে আ’লীগের কোমর ভেঙে গেছে : ফখরুল

নয়াপল্টনে ছাত্রদলের প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত -

বিএনপির আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা দেখে আওয়ামী লীগের কোমর ভেঙে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপির হাঁটুভাঙা বলে লাঠির ওপর ভর করেছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের জবাবে গতকাল বিকেলে এক ছাত্রসমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এ প্রতিক্রিয়া জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে বিএনপির নাকি হাঁটুভাঙা। আমাদের যে হাঁটু ভাঙেনি, এটা তো টের পাচ্ছেন। লাঠিও আমরা নেইনি। আসলে এরই মধ্যে তাদের কোমরই ভেঙে গেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু লাঠি নয়, এরই মধ্যে রাম দা-তলোয়ার এবং পুলিশের বন্দুকের ওপর ভর করে হাঁটছে। এরা জনগণের সাথে নেই, সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেজন্য আজকে তাদের রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকতে হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বরাবরই একটি সন্ত্রাসী দল। সেজন্য একদিকে তারা বলে যে, আমার সোনার ছেলেদের হাতে আমি কলম তুলে দিয়েছি। অন্যদিকে তারা সোনার ছেলেদের হাতে বন্দুক-পিস্তল-লাঠিসোঠা সব কিছু দিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন, গত ২২ আগস্ট থেকে জনগণের দাবি নিয়ে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। সেই আন্দোলনে যখন জেগে উঠছে মানুষ, তখন তারা একে দমন করবার জন্য সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে। তারা পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করেছে, অথচ খুন করে তারা মিথ্যা মামলা দিয়ে ২৫ হাজারের উপরে নেতাকর্মীদের আসামি বানিয়েছে, তিন হাজারের মতো আমাদের ছেলেদের আহত করেছে।


বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ এরই মধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। কারণ তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে, মিছিলে, ছাত্রদলের একেবারে একটা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে তারা লাঠি, বন্দুক এবং টিয়ার গ্যাস নিয়ে আক্রমণ শুরু করেছে। তিনি বলেন, ১৫ বছর ধরে আওয়ামী লীগ অত্যাচার চালাচ্ছে, গুম করছে, মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করছে। কিন্তু আজকে জনগণের উত্তাল তরঙ্গ শুরু হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, এবারে যে পরিবর্তন হবে তা আমার ছাত্রদলের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে হবে, দুর্বার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দায়িত্ব একটাই দেশের সব ছাত্র সমাজকে, তরুণ-যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে, সব মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ করে একটা দুর্বার গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে পদত্যাগের বাধ্য করতে হবে। এটিই হবে প্রকৃত জবাব। সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখনো সময় আছে উল্টো-পাল্টা কথা না বলে পদত্যাগ করুন শান্তিতে। সেইভ এক্সজিট নেন এবং একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন, সংসদ বিলুপ্ত করেন।


সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নেতাকর্মীরা অংশ নেন। তাদের অনেকের হাতে জাতীয় পতাকা দেখা গেলেও কোনো লাঠি তাদের হাতে দেখা যায়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহত নেতারাও মঞ্চে এসে নেতাকর্মীদের সালাম দিয়ে চলে যান।
সমাবেশে স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা লাঠি নিয়ে কোনো মিটিংয়ে যাই না, যেতেও চাই না। কিন্তু আপনারা ঘোষণা দেবেন লাঠি নিয়ে মিছিল করা যাবে না। আপনারা লাঠি দিয়ে পেটাবেন এটা ভালো কথা হলো না, এটা সঠিক কথা হলো না। আপনারা দেখিয়েছেন লাঠিপেটা করে কিভাবে মানুষ হত্যা করতে হয় ১/১১ সময়ে। ১/১১ পূর্ববর্তীতে যে নরককাণ্ড ঘটিয়েছেন, যে নারকীয় কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা কখনোই দেশের মানুষ ভুলবেন না।
ছাত্রদলের সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলের সঞ্চালনায় সমাবেশে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, খায়রুল কবির খোকন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, কামরুজ্জামান রতন, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আজিজুল বারী হেলাল, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, এস এম জিলানী, মোনায়েম মুন্না, আমিনুল হক, রফিকুল আলম মজনু, ইশরাক হোসেন, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান, রাকিবুল ইসলাম ও আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহিয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement