১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গাদের যেতেই হবে : ভোয়াকে প্রধানমন্ত্রী

-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবাইকে বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে হবে যে, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের অবশ্যই দেশে ফিরে যেতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের পক্ষে আর কোনো লোক নেয়া সম্ভব নয়। মঙ্গলবার সম্প্রচারিত ওয়াশিংটনে ভয়েস অব আমেরিকা (ভোয়া) বাংলা সার্ভিসের সাথে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের বারবার আহ্বানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এত বিশাল জনসংখ্যার (সাড়ে ১১ লাখ রোহিঙ্গা প্রায়) দায়িত্ব একা একটি দেশের পক্ষে নেয়া অসম্ভব। শুধু আশ্রয় দেয়াই নয়, এত বিশাল জনসংখ্যার জন্য জীবিকার ব্যবস্থা করাও একটি বড় দায়িত্ব, যা কোনো দেশ একা বহন করতে পারে না। তিনি উল্লেখ করেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা এবং চলমান কোভিড-১৯-এর কারণে সমগ্র বিশ্ব এখন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে, যা বিশ্ববাসীকে চরম ভোগান্তিতে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘যারা (রোহিঙ্গাদের) সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছিল (স্থানীয় জনগণ), তারা এখন নিজেদের বেঁচে থাকতে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য কতটা আর করতে পারে, কারণ এর বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে এবং দেশটিকে তার জনগণের কথাও ভাবতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর শিশু-কিশোররা এখন ঘিঞ্জি বস্তিতে (রোহিঙ্গা ক্যাম্প) লালিত-পালিত হয়ে বড় হচ্ছে, যেখানে মানবিক মূল্যবোধ ও সুস্বাস্থ্যের সাথে বেড়ে ওঠার সুযোগ খুবই সীমিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান কক্সবাজারের বন ধ্বংস করেছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিনষ্টের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা স্থানীয়দের চরম দুর্ভোগের কারণ হচ্ছে এবং এলাকার আবাদি জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। তিনি বলেন, অনেক রোহিঙ্গা মানবপাচারের পাশাপাশি মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানে জড়িয়ে পড়েছে এবং ক্যাম্পের অভ্যন্তরে নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ১৬ কোটি বাংলাদেশীর পাশাপাশি কয়েক লাখ মানুষের (রোহিঙ্গাদের) দায়িত্ব নেয়ার জন্য তার ছোট বোন শেখ রেহানার আবেদনের কথাও স্মরণ করেন।
শেখ রেহানাকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘আপনি ১৬ কোটি লোককে খাওয়াতে পারেন, আর কয়েক লাখ লোককে খাওয়াতে পারবেন না?’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ইতিবাচক জবাবে বলেছেন, প্রয়োজনে বাংলাদেশীরা একবেলা খেয়ে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আরেক বেলার খাবার ভাগ করবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশী জনগণ প্রচুর খাবার নিয়ে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, পরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এগিয়ে এসে রোহিঙ্গাদের সাহায্য করতে শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র সফর করছেন। এ সফরে তিনি জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে ভাষণ দেয়াসহ নানা কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী শনিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সাক্ষাৎকারটি নেয় ভয়েস অব আমেরিকার বাংলা বিভাগ।
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী রোহিঙ্গা সঙ্কট ছাড়াও বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক ও বাংলাদেশী মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নানা অভিযোগ, মিডিয়ার স্বাধীনতা ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণের পথে সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ, গৃহহীনদের জন্য নেয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ তার সরকারের নেয়া নানা কল্যাণমুখী নীতি ও কর্মসূচি, নারীর ক্ষমতায়ন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে প্রতিবন্ধী, ট্রান্সজেন্ডারদের কল্যাণে নেয়া নানা পদক্ষেপ, জিয়া-এরশাদ আমলের সামরিক শাসন, আগামী নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন।
ভয়েস অব আমেরিকার পক্ষ থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী এই সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শতরূপা বড়–য়া।


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল