২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

৫ বছরে এডিবির কাছ থেকে ১৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী

-

এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে আগামী পাঁচ বছরে ১২ থেকে ১৫ বিলিয়ন ঋণ পাওয়ার আশা করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেছেন, এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, বাংলাদেশ-এডিবি কান্ট্রি পার্টনারশিপ স্ট্র্যাটেজি (২০২১-২৫) বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন ও লক্ষ্যগুলোর সাথে সমন্বয় করে তৈরি করা হয়েছে। যা আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশের জন্য ১২-১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণসহায়তার জোগান থাকবে বলে আশা করা যায়।
গতকাল মঙ্গলবার ম্যানিলায় এডিবির সদর দফতরে সংস্থার বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়ার সাথে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে অর্থমন্ত্রী এ সহযোগিতা চেয়েছেন বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়। এর পাশাপাশি তিনি বাজেট সহায়তার সাথে নীতিভিত্তিক ঋণ প্রদানে এডিবিকে অনুরোধ করেছেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এডিবির প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠকে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ গত ১৩ বছরে গড়ে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। কিন্তু কোভিড-১৯ মহামারী এবং বর্তমান ভূরাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে, খাদ্য, জ্বালানি, সার ও আর্থিক সঙ্কট বিশ্বব্যাপী সরবরাহ চেইনকে ব্যাহত করেছে এবং সারাবিশ্বে মূল্যস্ফীতি বাড়িয়েছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা নিশ্চিত করার জন্য এডিবি থেকে বাজেট সহায়তার পাশাপাশি নীতিভিত্তিক ঋণ প্রয়োজন। এ বিষয়ে বাংলাদেশ এডিবি সদর দফতরের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এডিবি এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিশেষ করে বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজন, প্রশমন ও দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসে অসহায় মানুষদের সাহায্য করার জন্য গতিশীল ভূমিকা পালন করতে পারে। এ ছাড়া চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ওপর বিশেষ মনোযোগ দিয়ে এডিবি আইসিটিভিত্তিক উদ্যোক্তা উন্নয়ন, কৃষি বৈচিত্র্যকরণ, স্থিতিস্থাপক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও মানসম্পন্ন অবকাঠামোর কৃষি প্রবর্তনে উদার সহায়তা প্রসারিত করতে পারে।


তিনি বলেন, বাংলাদেশের ৫১ বছরের যাত্রায় কখনোই দেশী-বিদেশী ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়নি। বাংলাদেশ অত্যন্ত সক্ষমতার সাথে নিয়মিত ঋণ পরিশোধ করে চলেছে। জিডিপি অনুপাতে বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম ঋণের দেশের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ, মাত্র ৩৪ শতাংশ। বর্তমানে বাংলাদেশে এডিবির ক্রমবর্ধমান অর্থায়ন দাঁড়িয়েছে ২৭.৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে মোট বকেয়া ১১.৬৯ বিলিয়ন ডলার।
এডিবি প্রেসিডেন্টকে বাংলাদেশ সফর এবং ৫০ বছর পূর্তি উদযাপনের আমন্ত্রণ জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে এডিবির শীর্ষ ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিশেষ করে ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগেরও অনুরোধ জানান।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সক্ষমতার প্রশংসা করে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশের সক্ষমতার একটি প্রতীক। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্যগত ও আর্থসামাজিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ গৃহীত পদক্ষেপ এবং টিকা কার্যক্রম প্রশংসনীয়। বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তা পুনরুদ্ধারে এডিবি শুরু থেকেই বাংলাদেশের পাশে থেকে সহযোগিতা করছে এবং ভবিষ্যতেও বাংলাদেশের পাশে সবসময় এডিবি থাকবে ।
বাংলাদেশ-ফিলিপাইন দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান : বাংলাদেশ ও ফিলিপাইনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরো জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল মঙ্গলবার ম্যানিলায় এডিবির সদর দফতরে সংস্থার বার্ষিক সভার অংশ হিসেবে ফিলিপাইনের অর্থমন্ত্রী ও প্রতিনিধিদলের সাথে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এ আহ্বান জানান বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এবং ফিলিপাইন ২০২২ সালে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্ণ করেছে।
কিন্তু দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের সম্পূর্ণ সম্ভাবনা এখনো পুরোপুরি উন্মোচিত হয়নি। দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ এখন মাত্র ১০৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। দুই দেশের মধ্যে অবিলম্বে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলো হতে পারে- ওষুধ, কৃষি পণ্য, হালকা প্রকৌশল, পাট ও পাটজাত পণ্য ইত্যাদি। উভয়পক্ষ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা, নার্সিং এবং আইটি ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করে লাভবান হতে পারে।

 


আরো সংবাদ



premium cement