২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

গুম হওয়া ব্যক্তিরা কোথায় গেছেন জানি না : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

-

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন বলেছেন, গুম বলে আমাদের দেশে কোনো শব্দ নেই। কিছু কিছু লোক বলেছে, গত ১০ বছরে ৭৬ জন লোক নিখোঁজ হয়েছেন। তাদের দাবি, সরকার নিখোঁজ করেছে। এই ৭৬ জনের মধ্যে ১০ জনকে পাওয়া গেছে, তারা ঘোরাঘুরি করছে। বাকিরা কোথায়, আমরা জানি না। পরিবারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তারা ভয়ে কোনো তথ্য দেয় না।
গতকাল রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় ঢাকা সফররত জাতিসঙ্ঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যাচেলে চার দিনের সফরে সকালে ঢাকা এসে পৌঁছান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। জাতিসঙ্ঘের কোনো মানবাধিকার প্রধানের এটাই প্রথম বাংলাদেশ সফর।
ব্যাচেলে আজ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করবেন এবং উদ্বাস্তু, সরকারি কর্মকর্তা ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর (এনজিও) প্রতিনিধিদের সাথে কথা বলবেন। কক্সবাজার থেকে ফিরে আগামী বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন রাজধানীর ইস্কাটনে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডিসে (বিআইআইএসএস) বক্তব্য রাখবেন। এ ছাড়া তিনি কূটনীতিক, আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ, মানবাধিকারকর্মী ও এনজিওদের সাথে মতবিনিময় করবেন। ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার আগে ব্যাচেলে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়টি ব্যাচেলে উত্থাপন করেনি। আমরা নিজ থেকে বলেছি। বলা হয়ে থাকে, কিছু লোককে আইনবহির্ভূতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে এগুলো ২০০২-০৩ সালের দিককার ঘটনা। এগুলোকে হার্টফেল বলা হতো। এখন এসব ঘটনা ঘটে না। বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে সরকার তা তদন্ত করবে।
আলোচনায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটি এসেছে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ওদের ধারণা বাংলাদেশে টেলিভিশন মিডিয়ার কোনো স্বাধীনতা নেই। কেউ নিজের কথা বলতে পারে না। গণমাধ্যম সেন্সর করে। আমি বলেছি, আমার এমন কিছু জানা নেই। আমি তো দেখি আমাদের মিডিয়া, বিশেষ করে বেসরকারি টেলিভিশনগুলো বেশ শক্তিশালী। ব্যাচেলেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশে অনেকগুলো মিডিয়ার নিবন্ধন রয়েছে। সারা দেশে দুই হাজার ৮০০ পত্রিকা বের হয়। সরকার এগুলোর সেন্সর করে বলে আমার জানা নেই। সরকারের এত ক্ষমতাও নেই।


পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের ধারণা, দেশে নাগরিক সমাজ নেই। কিন্তু আমরা দেখি, নাগরিক সমাজ সব জায়গাতেই আছে। বাংলাদেশে কয়েক হাজার এনজিও রয়েছে। তবে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবক প্রতিষ্ঠান খুব বেশি নেই। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে জাতিসঙ্ঘ খুব উদ্বিগ্ন। এ সমস্যা সমাধানে তারা আমাদের সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখার জন্য আমরা তাদের অনুরোধ জানিয়েছি।
ড. মোমেন বলেন, রোহিঙ্গারা আগেও কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছে, তবে পরে ফেরত গেছে। এবারে সংখ্যায় তারা অনেক বেশি। দুঃখের বিষয় যারা মানবাধিকারের জন্য শান্তি পুরস্কার পেয়েছে, তারা মিয়ানমারের সাথে আগের মতো সম্পর্ক বজায় রাখছে। চুটিয়ে ব্যবসা করছে। মিয়ানমারের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ব্যবসা ১৫ গুণ বেড়েছে, ব্রিটেনের বেড়েছে ১০০ গুণ। গত ৫-৬ বছরে মিয়ানমারে ২৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘ মানবাধিকার প্রধানের কাছে বিদেশ থেকে প্রকাশিত নেত্র নিউজের সম্পাদক ডেভিড বার্কম্যানের লেখা চিঠির প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এ জন্য বার্কম্যানরা খুব অখুশি, তারা মানসিক কষ্টে আছেন। আসলে, কিছু মানুষ তাদের টাকা-পয়সা দেয়। আর বার্কম্যানরা তাদের পক্ষে কাজ করে। ‘দে আর পেইড পারসনস’। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচার চলাকালেও বার্কম্যানের ভূমিকা ছিল বিতর্কিত।
বৈঠকে মানবাধিকার সুরক্ষা ও উন্নয়নে সরকারের নেয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরা হয়েছে বলে জানান ড. মোমেন।
অন্য দিকে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ব্যাচেলে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। এতে প্রয়াত লেখক মোশতাক আহমেদ, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ও সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ হয়েছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার মানবাধিকারকে খুবই গুরুত্ব দেয়। শেখ হাসিনা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যতম ভিকটিম।
আমি ট্রু সেন্সে বেহেশত বলিনি : বেহেশতে থাকা নিয়ে বক্তব্যের জন্য সমালোচনার মুখে পড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমি এটা কথার কথায় বলেছি, ট্রু সেন্সে (প্রকৃত অর্থে) বলিনি। সেটা নিয়ে সাংবাদিকরা আমাকে বিপাকে ফেলেছে। আমি বলেছি, অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা অনেক ভালো আছি। বলতে পারেন বেহেশতে আছি। আর যায় কোথায়! সবাই আমারে একেবারে...। এই হলো বাংলাদেশের মিডিয়ার স্বাধীনতা খর্ব।
ড. মোমেন বলেন, আফটার অল আই অ্যাম আ পাবলিক ফিগার। নিশ্চয়ই আপনারা আমাকে সমালোচনা করতে পারেন। আমি কিছু মনে করব না। আমি খোলামেলা মানুষ। আমি যা মনে করি, তা খোলামেলা বলে ফেলি। তবে আগামীতে সাবধান হতে হবে।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল