১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`
আন্দোলন নিয়ে পাল্টাপাল্টি

প্রতিহত করতে রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ

-

বিএনপির চলমান আন্দোলনে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সরকারবিরোধী আন্দোলন প্রতিহত করতে অচিরেই মাঠে নামবে দলটি। আপাতত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে সংঘটিত দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আগামী ১৭ আগস্ট বুধবার সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীনরা। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অপপ্রচার-গুজবের মাধ্যমে দেশবিরোধী অপশক্তি বিএনপি ও তার দোসরদের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য সৃষ্টির উসকানির প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালিত হবে। সারা দেশের জেলা-মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর ও ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত সব নেতাকর্মীকে ঘোষিত কর্মসূচি পালনের জন্য রাজপথে থাকার কঠোর নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

রাজধানীর ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি বৈঠকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি আমলে সারা দেশে সিরিজ বোমা হামলার প্রতিবাদে আগামী ১৭ আগস্ট বিকেলে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তন চত্বরে সমাবেশ শেষে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। সারা দেশে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যদি আন্দোলনের সাথে সহিংসতার উপাদান যুক্ত করে, আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নামে তাহলে আমরা নীরব হয়ে বসে থাকব, ঘরে বসে থাকব, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কি আঙুল চুষবে, প্রতিরোধ করতে হবে। প্রতিবাদ করতে হবে। রাজপথে মোকাবেলা করা হবে। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ রাজপথ থেকে ক্ষমতায় এসেছে। বিএনপি যেভাবে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, রাজপথ মনে হয় আমরা ভুলে গেছি। আমরাও আছি। অচিরেই রাজপথে দেখতে পাবেন। শোকের মাসে হয়তো আমরা কিছু কিছু প্রোগ্রাম করছি না। এ সময় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, মাঠে খেলা হবে, মোকাবেলা হবে, যার যা ইচ্ছা ফ্রি-স্টাইল বাংলাদেশে হতে দেবো না আমরা। আওয়ামী লীগ রাজপথ ছাড়েনি। আওয়ামী লীগ যখন মাঠে নামবে, বিএনপি কর্পূরের মতো উড়ে যাবে।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, যে সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়ন-অর্জনের রোল মডেল হিসেবে সারা দুনিয়ার কাছে পরিচিত করেছে, যে সরকার করোনা, বন্যায় ভারসাম্যমূলক ব্যবস্থা নিয়ে সারা দুনিয়ার প্রশংসা অর্জন করেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রেখেছে; আজকে সেই সরকাররে বিরুদ্ধে চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। সরকার উৎখাতের চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। তারা সরকারকে উৎখাত করবে। এই সঙ্কটে সহযোগিতা করবে না, এটা তারা জানান দিয়েছে। বিএনপিকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা প্রতিদিনই সরকারের পতন দেখতে পাচ্ছেন। তারা প্রতিদিনই বলে সরকার পালিয়ে যাবে।

কোথায় পালাব, আমাদের দেশ বাংলাদেশ। পালানোর ইতিহাস আমাদের নেই। প্রয়োজনে দেশের মাটিতে জেলে যাবো। আওয়ামী লীগ পালাবার দল নয়। পালাবার দল আপনারা। আপনাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোথায়। তিনি টেমস নদীর তীরে। জরুরি সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে এখান থেকে পালিয়ে গেছেন।

ক্ষমতাসীন জোট নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই জোট তাদের নির্বাচনী অ্যালায়েন্স, কৌশলগত জোট। এখানে আদর্শের কোনো বিষয় নেই। জোটের শরিকদের দলগতভাবে কর্মসূচি দেয়ার অধিকার আছে। তারা করতে চাইলে করবে। এটা তো কোনো কথা না। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে চারবার বিদ্যুতের দাম কমিয়েছে। এমন উদাহরণ আর নেই। বিএনপি বড় বড় কথা বলে। তাদের সময় সময় বিদ্যুৎ ছিল না, ছিল খাম্বা। সকাল নেই, বিকেল নেই ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টা লোডশেডিং। এটা কি মিথ্যা? আজকে কোন মুখে তারা বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলে? বিদ্যুৎ আমরা শতভাগ দিয়েছি। আজকে বিশ্বপরিস্থিতির কারণে এই পরিস্থিতি হয়েছে। যখন স্বাভাবিক সময় আসবে তখন আমরা আমাদের প্রমিজ থেকে পিছিয়ে যাবো না।

জরুরি সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন ও এস এম কামাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement