২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঢাকায় ছড়াচ্ছে ওমিক্রনের উপধরন বিএ.৫

-

ঢাকায় ছড়াচ্ছে করোনার ওমিক্রন ধরনের উপধরন বিএ.৫। গতকাল মঙ্গলবার আইসিডিডিআর,বি এসব তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটিটি বলেছে, গত ১৪ মে থেকে ২৪ জুন এই ছয় সপ্তাহে ৫২টি কোভিড শনাক্ত করেছে তারা। এর মধ্যে ৫১টিই ছিল ওমিক্রন ধরনের উপধরন বিএন.৫। অপর দিকে একটি মাত্র বিএ.২’র উপধরন পাওয়া গেছে। আইসিডিডিআর,বি জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এ তথ্য জানিয়েছে। আইসিডিডিআর,বি বলেছে, কোভিড-২ ভাইরাসটি ধীরে ধীরে একটির পর একটি উপধরনের মাধ্যমে দুর্বল হয়ে আসছে। সর্বশেষ ধরন বা ভ্যারিয়েন্ট ছিল ওমিক্রন, যা প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকায় শনাক্ত হয়েছে।
আইসিডিডিআর,বি বলেছে, করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরনের বিএন.৫ উপধরনের শনাক্ত ৪০ জনের মধ্যে ৩৮ জনই কমপক্ষে এক ডোজ টিকা পেয়েছে। এদের মধ্যে আবার ১৬ জন বুস্টার ডোজও পেয়েছে, ২১ জন দুই ডোজ টিকা পেয়েছে এবং একজন মাত্র এক ডোজ টিকা পেয়েছে।
আইসিডিডিআর,বি বলছে, শনাক্তকৃত করোনা আক্রান্তদের ৩৯ জনের মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের লক্ষণ ছিল এবং একজনের মধ্যে কোনো লক্ষণ ছিল না। এদের মধ্যে শুধু একজনকে এক দিনের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে। আইসিডিডিআর,বি বলেছে, এর মানে এই দাঁড়ায় যে, নতুন উপধরনের তীব্রতা একেবারেই কম।
গবেষকরা তবু সবার প্রতি অনুরোধ করেছেন যে, সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন এবং সবাই যেন প্রয়োজনীয়সংখ্যক টিকা নিয়ে নেন।
ওমিক্রনের উপধরন বিএন.৫’র প্রথম সন্দেহভাজন রোগী শনাক্ত হয় গত ১৯ মে। তবে বাংলাদেশে প্রথম ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায় ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর।
করোনার শনাক্ত ও মৃত্যু দুটোই কমেছে : করোনাভাইরাসে নতুন শনাক্ত ও মৃত্যু কিছুটা কমলেও শতকরা হিসেবে বেড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে করোনা সন্দেহে মোট পরীক্ষা কমেছে প্রায় দুই হাজার। পরীক্ষার সংখ্যা বেড়ে গেলে শতকরা হিসাবে শনাক্তের সংখ্যা কমে যায়। গতকাল উল্লিখিত সময়ে সারা দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৯৯৮ জন। করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। আগের দিন করোনায় মৃত্যু ছিল ১২ জনের শনাক্ত হয় দুই হাজার ২৮৫ দিন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সামনের ঈদের বন্ধের পর কয়েক দিন লাফিয়ে লাফিয়ে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ ঈদের বন্ধের মধ্যে অনেকেই বাড়ি যাবে। গাড়িতে গাদাগাদি করে বাড়ি যেতে বাধ্য হবে। আবার ঈদের নামাজের পর কোরবানি করা এবং ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে আত্মীয়ের বাড়িতে যাবে। মোট কথা ঈদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যথেচ্ছ মেলামেশার কারণে ঈদের মধ্যে এখনকার চেয়ে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা রয়েছে। চিকিৎসকরা বলেছেন, ঈদের মধ্যে মেলামেশা হবেই কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি মেনে করলে সংক্রমণ তেমন বাড়বে না। নিজের স্বার্থেই প্রত্যেকেরই উচিত এখন থেকেই যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গতকাল সকাল ৮টার আগের ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১১ হাজার ৯৩২টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্ত ছিল ১৬.৭৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার কারণে যে ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের সবাই পুরুষ। তাদের মধ্যে ৫ জন ঢাকা বিভাগের। আর বাকি দু’জন রাজশাহী ও ময়মনসিংহর বিভাগের।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে নিয়মিতভাবে রোগী শনাক্ত ও শনাক্তের হার কমেছে। দেশে সংক্রমণ কমে আসায় আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হয়। তুলে নেয়া হয় করোনাকালীন বিধিনিষেধ। গত ২৫ মার্চ থেকে ১২ জুন পর্যন্ত দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১০০’র নিচেই ছিল। এর পর থেকে সংক্রমণ ধীরে ধীরে বেড়ে বর্তমানে দৈনিক দুই হাজারের বেশি মানুষ শনাক্ত হচ্ছে।
সংক্রমণের শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশে ১৯ লাখ ৮২ হাজার ৯৭২ জনের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ লাখ ৯ হাজার ২৭৩ জন। আর মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ১৮১ জনের।


আরো সংবাদ



premium cement