টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনায় ১৫০০ বসতভিটা
- ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) সংবাদদাতা
- ০৫ জুলাই ২০২২, ০০:০০
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধির কারণে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙছে বসতভিটাসহ চরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি। এতে নিঃস্ব হচ্ছে নদীতীরবর্তী এলাকার হাজারো পরিবার। অভিযোগ রয়েছে, ভাঙনকবলিত এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় ভাঙনরোধ সম্ভব হচ্ছে না। ফলে ভুক্তভোগীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জানা গেছে, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের মধ্যে গোবিন্দাসী, নিকরাইল, অর্জুনা ও গাবসারায় যমুনার করালগ্রাসে একমাসের ব্যবধানে এক হাজার ৫০০ ঘরবাড়িসহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর মধ্যে গোবিন্দাসীতে সাড়ে ৫০০, নিকরাইলে ২৫০, অর্জুনায় ৪০০ এবং গাবসারায় ৩০০ পরিবার রয়েছে।
গতকাল সোমবার সকালে গোবিন্দাসী ইউনিয়নের চিতুলাপাড়া এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পানির তীব্র স্রোতে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়া লোকজন তাদের থাকার ঘরগুলো অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। আবার অনেকের ঘরবাড়ি নিমিষেই বিলীন হচ্ছে। বসতভিটা হারানো মানুষগুলো আহাজারি করছে। ভাঙনের শিকার জহুরা বেগম বলেন, আমাদের গ্রামে হাজারের ওপরে বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। আমরা এখন নিঃস্ব। এখন থাকার মতো কোনো জায়গা-জমি নেই। ঘরে নেই খাবার। এ অবস্থায় সরকারিভাবে কোনো ধরনের সাহায্য পাইনি। এদিকে, অসংখ্য পরিবার বসতভিটা হারিয়ে আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল হোসেন চকদার বলেন, ইউনিয়নের কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ী, চিতুলিয়াপাড়া ও ভালকুটিয়ায় এলাকায় ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাম্মৎ ইশরাত জাহান জানান, ভাঙনের ব্যাপারে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে। টাঙ্গাইলের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: সিরাজুল ইসলাম বলেন, ভূঞাপুরে ভাঙনরোধে ৩০০ মিটারের মধ্যে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকাগুলোতে পর্যায়ক্রমে আরো জিও ব্যাগ ফেলা হবে।
আবারো দুশ্চিন্তায় বগুড়ার পানিবন্দিরা
বগুড়া অফিস জানায়, বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি পুনরায় বাড়তে শুরু করেছে। এতে আবারো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন সারিয়াকান্দি, ধুনট ও সোনাতলা উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ। কয়েক দিন আগে তারা বাড়ীঘরের জিনিসপত্র নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছিলেন। পানি নেমে যাওয়ায় তারা জিনিসপত্র নিয়ে ঘরে ফিরতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু পানি বাড়ার খবরে তারা আবারো দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। এভাবে পানি বাড়তে থাকলে আবারো জিনিসপত্র এবং গবাদিপশু নিয়ে উঁচু কোথাও যেতে হবে। উপজেলার বড় কুতুবপুর পূর্ব পাড়ার মজনু শাহের স্ত্রী সীমা খাতুন বলেন, ‘হামার বাড়ীঘরত পানি উঠে ডুবে গেছিল। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেঁড়িবাঁধত আশ্রয় নিয়েছিলাম। টিউবওয়েল এবং বাথরুম পানিতে তলিয়ে গিয়েছিল। খুব কষ্টে দিনাতিপাত করছি। পানি নেমে যাওয়ায় বাড়িতে উঠেছিলাম। এখন আবারও জিনিসপত্র গরু ছাগল নিয়ে উঁচু জায়গায় যেতে হবে।’ এদিকে সারিয়াকান্দি পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার পরশুরাম জানিয়েছেন, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানির উচ্চতা ছিল ১৬.৫২ মিটার যা বিপদসীমার ২৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
নেত্রকোনায় পানিতে ডুবে ২ শিশুর মৃত্যু
নেত্রকোনা সংবাদদাতা জানান, নেত্রকোনার আটপাড়া ও কলমাকান্দায় বন্যার পানিতে ডুবে আরো দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত রোববার দুপুরে আটপাড়া উপজেলার গোপালশ্রম গ্রামের টিপু মিয়ার দেড় বছরের শিশুপুত্র সুলতান বাড়ির পাশে বন্যার জমে থাকা পানিতে পড়ে মারা যায়। এ ছাড়া শুক্রবার সন্ধ্যায় কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের চিলাহালা গ্রামে নুসরাত নামে তিন বছরের এক শিশু নৌকা থেকে বন্যার পানিতে পড়ে মারা যায়। নুসরাত ওই গ্রামের সোহেল মিয়ার একমাত্র সন্তান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা