২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
পদ্মা সেতু নিয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে অভিনন্দন প্রস্তাব

সংশোধন হচ্ছে পারিবারিক আদালত আইন, বাড়ছে ফি

-

‘পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ-১৯৮৫’ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অধ্যাদেশটির নতুন নামকরণ হতে যাচ্ছে ‘পারিবারিক আদালত আইন-২০২২’। এই আইনের বিধানে বলা হয়েছে পারিবারিক আদালত আইনের অধীনে বিচারিক আদালতে হওয়া মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জেলা জজ মর্যাদার অন্যান্য আদালতেও আপিল করা যাবে। সাথে পারিবারিক আদালতের মামলার কোর্ট ফি ৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
গতকাল রোববার মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রস্তাবিত আইনটিকে লেজিসলেটিভ বিভাগের যাচাই সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বর্তমানে বিচারিক আদালতে হওয়া এ সংক্রান্ত মামলার আপিল শুধু জেলা জজের আদালতে করা যায়। এতে জেলা জজের ওপর ব্যাপক মামলার চাপ পড়েছে। জেলা জজের ওপর থেকে মামলার চাপ কমাতেই আইনের এই সংশোধন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। বৈঠকে আইন ও বিচার বিভাগের উপস্থাপন করা এ আইনের খসড়া অনুমোদন দেয়া হয়। করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে তিন মাস পর গতকাল থেকে আবারো ভার্চুুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠক শুরু হয়েছে। এতে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড আইন-২০২২’-এর নীতিগত অনুমোদন চেয়েছিল মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত এই খসড়া আইনের বিষয়ে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়ে ফেরত পাঠিয়েছে মন্ত্রিসভা।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পারিবারিক আদালত আইনে যে আদালতে রায় হয় সেটার আপিল কর্তৃপক্ষ ছিলেন জেলা জজ। এই জায়গায় সংশোধন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জেলাপর্যায়ে আরো জজ আছেন, নারী-শিশু বা শ্রম আদালত। শুধু জেলা জজের দায়িত্ব থাকায় ওনার ওপর একটু বেশি চাপ পড়ে যায়। সরকার যদি মনে করে কোনো জেলাতে আপিলের জন্য অতিরিক্ত মামলা আছে, সেক্ষেত্রে জেলা জজপর্যায়ের অন্যান্য যে জজরা রয়েছেন, তাদেরকেও আপিল আদালত হিসেবে বিবেচনা করা যাবে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, মামলার ক্ষেত্রে বর্তমানে ৫০ টাকা ফি আছে। সেটি বাড়িয়ে ২০০ টাকা করার প্রস্তাব হয়েছে। তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনটি সামরিক শাসনামলের। ১৯৮৫ সালে একটি ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স হয়। এতে অর্ডিন্যান্সে পারিবারিক বিষয়গুলো দাম্পত্য কলহ, তালাক, বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়, শিশুদের ভরণপোষণ- এ বিষয়গুলো আছে।
পদ্মা নিয়ে অভিনন্দন প্রস্তাব : মন্ত্রিসভার বৈঠকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় অভিনন্দন প্রস্তাব আনা হয়। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রীর বরাত দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, বিশেষ করে জনগণ যেভাবে সহায়তা দিয়েছে এবং উৎসাহ দিয়েছে, সেটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য আমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে সত্যিই কৃতজ্ঞ। তাদের শক্তি (আমার জন্য) সবচেয়ে বড় শক্তি।’ একই সাথে তিনি পদ্মা সেতু প্রকল্পের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
এদিকে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে আসন্ন ঈদের আগে মোটরসাইকেল চালুর সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তবে মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি বলে জানান তিনি। খন্দকার আনোয়ার বলেন, পদ্মা সেতুতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ ক্যামেরা বসবে, স্পিডগানও বসানো হচ্ছে। এগুলো বসলে তারপর ওনারা সুবিধাজনক সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কী করা যায়। আমার মনে হচ্ছে, ঈদের আগে মোটরসাইকেল চালু হওয়া খুবই কঠিন। পদ্মা সেতুর নাট-বল্টু খুলে যাওয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নাট-বল্টু সংক্রান্ত যে রেলিংটি আছে সেটি মূল সেতুর অংশ না। এটি আমাদের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে দুই পাশে যে পর্যন্ত ওয়াল আছে সেটি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড পূরণ করে। কিন্তু আমাদের সড়ক ও জনপথের মানদণ্ড চার ফুট। সেজন্য আরো এক ফুট উঁচু করে রেলিং দেয়া হয়েছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম আরো জানান, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের দিন বিকেলে কোরিয়ান এক্সপ্রেস করপোরেশন দায়িত্ব নিয়েছে। এখন তারা অডিট করবে। প্রত্যেকটা জয়েন্ট আছে, নাট আছে। অডিট করে নিজেরা ঠিক করতে পারে, টাইট করে দেবে। এরা হাইওয়ে ও ব্রিজ ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা বিশ্বের অন্যতম সেরা কোম্পানি।


আরো সংবাদ



premium cement