২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
দিল্লিতে জেসিসি বৈঠক

বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ত্রাণ কাজে সহায়তা দিতে চায় ভারত

-

বাংলাদেশের বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও ত্রাণকার্যক্রমে সহায়তা দিতে চায় ভারত। দুই দেশের সম্পর্ককে বিবেচনায় নিয়ে এ ক্ষেত্রে যেকোনো কার্যকর পদক্ষেপকে ভারত সমর্থন দেবে।
বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ পরামর্শক কমিশনের (জেসিসি) সপ্তম বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এই আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। জয়শঙ্কর এতে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। আর বাংলাদেশে প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন। দুই মন্ত্রী বৈঠকে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন।
বৈঠকের সূচনায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে অভাবনীয় বন্যা পরিস্থিতিতে আমরা সমর্থন ও সংহতি প্রকাশ করছি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ভারতও একই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করছে। আমরা এখন বাংলাদেশের সাথে বন্যা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত তথ্য অতিরিক্ত সময়ের জন্য বিনিময় করছি। জয়শঙ্কর বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। নদীগুলোর সমন্বিত ব্যবস্থাপনা এবং বিশেষ করে সুন্দরবনসহ পরিবেশ রক্ষার অভিন্ন দায়িত্ব আমরা পালন করতে চাই। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি রক্ষায় আমাদের এসব ক্ষেত্রে একসাথে কাজ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, দুই দেশের দীর্ঘ সীমান্তের আরো ভালো ব্যবস্থাপনা একটি অন্যতম অগ্রাধিকার। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনীগুলো আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপরাধ দমনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সীমান্তকে অপরাধমুক্ত রাখতে আমাদের অবশ্যই একসাথে কাজ করতে হবে।
ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতাকে আমরা স্বাগত জানাই। করোনা মহামারীর কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞ থেকে দ্রুত পুনরুদ্ধার এবং ইউরোপে চলমান সঙ্ঘাতের কারণে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলায় আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ করোনা মহামারীর ক্ষতি থেকে অর্থনীতিকে জোরালোভাবে পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
বৈঠকের পর দেয়া যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অভিন্ন নদী ও পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, তথ্যপ্রযুক্তি ও সাইবার নিরাপত্তা, পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি, কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা, বাণিজ্য, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতা আরো গভীর ও শক্তিশালী করতে দুই মন্ত্রী সম্মত হয়েছেন। করোনা মহামারীর চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দুই দেশ নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, পরস্পরের জন্য লাভজনক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, দ্বিপক্ষীয় ও উপআঞ্চলিক মাল্টিমডেল কানেক্টিভিটি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতা, উন্নয়ন সহযোগিতা, সংস্কৃতি ও জনগণের মাঝে সম্পৃক্ততাসহ সব ক্ষেত্রে আগের যেকোনো সময়ে চেয়ে আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন।
দুই পররাষ্ট্র মন্ত্রী অষ্টম জেসিসি বৈঠকে আগামী বছর বাংলাদেশে আয়োজনের ব্যাপারে সম্মত হন।
সেপা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে : ভারতের সাথে প্রস্তাবিত ‘সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন।
গত শনিবার দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ মন্তব্য করেন। ‘অর্থনৈতিক কূটনীতি’ বিষয়ক এই সেমিনারে দিল্লিতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান, ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীসহ ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আরো অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. মোমেন বলেন, ভারতীয়দের জন্য মংলা ও মীরেরসরাইয়ে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বরাদ্দ করা হয়েছে। বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিয়ে এসব অঞ্চলে বিনিয়োগের জন্য ভারতীয়রা এগিয়ে আসতে পারে।


আরো সংবাদ



premium cement

সকল