১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
লা নিনা ও হিমবাহ গলন

এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বন্যার আশঙ্কা

লা নিনা ও হিমবাহ গলন -

লা নিনা ও হিমালয়ের হিমবাহ গলনে এ বছর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চলতি ২০২২ সালটি লা নিনার বছর। লা নিনার বছরে বাংলাদেশে বন্যা হয়ে থাকে। অতীতে ১৯৮৮, ১৯৯৮ এবং ২০১৬ সালে বড় বন্যাগুলো এই লা নিনা শক্তিশালী থাকার সময়ই হয়েছিল। যদিও ১৯৮৭ সালের বন্যা হয়েছে এন নিনু বছরে। এটাকে অবশ্য ওয়ার্মপুল এল নিনু অথবা সেন্ট্রাল প্যাসিফিক এল নিনু বছর হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। সবচেয়ে শক্তিশালী লা নিনা ১৯৮৮ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ ডিগ্রি ফারেনহাইটের চেয়ে নিচে নেমে আসে। শেষ লা নিনাটি ২০১৬ সালে সংঘটিত হয়েছিল। এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সাসটেইনেবল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বিল্ট এনভায়রনমেন্টের অ্যাডজাঙ্ক প্রফেসর ড. রাশেদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান বছরটি মাঝারি মানের লা নিনার বছর। এই বছর স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত এবং বন্যা হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ওয়ার্ল্ড মেটিওরলজিক্যাল অর্গানাইজেশন বলছে দক্ষিণ এশিয়ায় চলতি বর্ষা মৌসুমে জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে স্বাভাবিক এবং স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশি বৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।


ড. রাশেদ চৌধুরী বলেন, ১৯৮৭, ১৯৮৮, ১৯৯৮, এবং ২০২২ সালের মহাসাগরীয় এবং বায়ুমণ্ডলীয় প্যারামিটারগুলো পরীক্ষা করে দেখা যায় যে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের তাপমাত্রা ছিল অনেকটাই ১৯৮৮ সালের মে থেকে আগস্ট মাসে সাগরের তাপমাত্রার মতো। পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের এই অঞ্চলকে নিনু অঞ্চল বলে এবং এই অঞ্চলের সাগরের তাপমাত্রার পরিবর্তনের কারণে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে অতি বৃষ্টি অথবা কম বৃষ্টি এবং বন্যা অথবা খরা হয়। বাংলাদেশেও বন্যা এবং খরা হওয়ার পেছনে এটা একটা অন্যতম কারণ, তবে এটাই একমাত্র কারণ বলা যাবে না।
তিনি বলেন, এখন যদি আগামী তিন মাস নিনু অঞ্চলের তাপমাত্রা বর্তমান সময়ের মতো বলবৎ থাকে তাহলে বাংলাদেশে বন্যার সম্ভাবনা থেকে যায়। ক্লাইমেট সেন্টারগুলোর পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী তিন মাস নিনু অঞ্চলের তাপমাত্রা এভাবেই বলবৎ থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে । সে ক্ষেত্রে যদি সম্ভাব্যতার স্কেলে বিশ্লেষণ করি তাহলে আমার মনে হয় এবার স্বাভাবিকের চেয়ে বড় বন্যার সম্ভাবনা ৪০ শতাংশ।
গত মে মাসের পুরোটাই লা নিনা সিগন্যাল অব্যাহত ছিল। এনওএএর ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার এবং ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর ক্লাইমেট অ্যান্ড সোসাইটি এবং ইএনএসও অ্যালার্ট সিস্টেম বলছে, এখনো লা নিনা অব্যাহত আছে। লা নিনা একটি স্প্যানিশ শব্দ, এর অর্থ ছোট্ট বালিকা। লা নিনাকে অ্যান্টি এল নিনু বলা হয়।
এল নিনোর বিপরীত অবস্থা হয়ে থাকে লা নিনার সময়। লা নিনার ফলে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল বরাবর দক্ষিণ থেকে উত্তর দিকে স্বাভাবিকের থেকে শীতল সমুদ্র স্রোতের প্রবাহ লক্ষ করা যায়।


রাশেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান ও এশিয়ার অন্যান্য অঞ্চলে বর্তমানে বিরাজমান তাপপ্রবাহের কারণে হিমালয়ের হিমবাহ গলে যেতে পারে এবং হিমবাহ গলনের ফলে স্বাভাবিক বন্যার পরিধি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ড. চৌধুরী বলেন, অতীতে ১৯৯৮ সালের লা নিনা বছরের সাথে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহের কারণে হিমবাহ অঞ্চলের বেশি বরফ গলে নিচে বাংলাদেশের দিকে নেমে আসায় একটি বড় ধরনের বন্যা হয়ে গেছে। তিনি বলেন, ১৯৮৮ সালের বন্যাও হয়েছিল একই কারণে। সে বছরও ছিল মাঝারি ধরনের লা নিনার বছর। এর সাথে তাপপ্রবাহের কারণে হিমালয়ের বরফ গলে গিয়েছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল