২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সিরিজ খোয়াল বাংলাদেশ

বাংলাদেশ ইনিংস : ৩৬৫ ও ১৬৯ (৫৫.৩ ওভার); শ্রীলঙ্কা ইনিংস : ৫০৬ ও ২১ (৩ ওভার); ফল : শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জয়ী
-

ব্যাটারদের ব্যর্থতায় শ্রীলঙ্কার কাছে ঢাকা টেস্টে ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা পেল বাংলাদেশ। এই ম্যাচ হেরে লঙ্কানদের কাছে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ১-০ ব্যবধানে হারল টাইগাররা। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্ট ড্র করলেও ঢাকা টেস্টে তাদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করে বাংলাদেশ। এ নিয়ে দ্বিতীয়বার শ্রীলঙ্কার কাছে ১০ উইকেটে হারল টাইগাররা।
সিরিজটি ছিল বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। এ পর্যন্ত ৬ ম্যাচে ৩ জয়, ২ হার, ১ ড্রতে ৪০ পয়েন্ট ও শতকরা ৫৫.৫৬ শতাংশ জয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে শ্রীলঙ্কা। আর ৮ ম্যাচে ১ জয়, ৬ হার, ১ ড্রতে ১৬ পয়েন্ট ও শতকরা ১৬.৬৭ শতাংশ জয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে বাংলাদেশ। টেবিলের নবম ও শেষ দল ইংল্যান্ড। শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া। ৮ ম্যাচে ৫ জয়, ৩ ড্রতে ৭২ পয়েন্ট ও শতকরা ৭৫ শতাংশ জয়ে টেবিলে সবার উপরে অসিরা।
হার অথবা ড্র ঢাকা টেস্টের নিয়তি চতুর্থ দিনই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। শেষ অবধি বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছে হার। মাঝে সাকিব আল হাসান ও লিটন দাসের ইনিংস কেবল ম্যাচের দৈর্ঘ্য বাড়িয়ে ইনিংস হারটাই এড়িয়েছে। নিজেদের প্রথম ইনিংসে মুশফিকুর রহীম ও লিটন দাসের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩৬৫ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা তুলে ৫০৬ রান। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৬৯ রানে অলআউট হয় মুমিনুল হকের দল। ২৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয় ছুঁয়ে ফেলে সফরকারী। এ ম্যাচটি জিতে সিরিজও নিজেদের করে নিয়েছে লঙ্কানরা।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষেই হারের শঙ্কায় পড়েছিল বাংলাদেশ। কারণ প্রথম ইনিংসে ১৪১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে চতুর্থ দিন শেষে টাইগারদের সংগ্রহ ছিল ৪ উইকেটে ৩৪ রান। ২৩ রানে ৪ উইকেট পতনের পর হাল ধরেছিলেন মুশফিকুর রহীম-লিটন দাস। দিন শেষে মুশফিক ১৪ ও লিটন ১ রানে অপরাজিত ছিলেন। হার এড়ানোর জন্য ভরসার নাম ছিল মুশফিক-লিটন; কারণ প্রথম ইনিংসে ২৪ রানে ৫ উইকেট পতনের পর ২৭২ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিক-লিটন।


পঞ্চম ও শেষ দিনের পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর পঞ্চম স্পর্শ করে। ষষ্ঠ ওভারের শেষ বলে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান লিটন। রাজিথার বলে লিটনকে ক্যাচ আউট দিয়েছিলেন আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে নিজের উইকেট বাঁচান ৯ রানে থাকা লিটন। তবে দিনের অষ্টম ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রাজিথার বলে বোল্ড হন মুশফিক। অফ স্টাম্পের বাইরের বল ভেতরের দিকে ঢুকলে ব্যাট দিয়ে সেটি রুখতে না পারলে স্টাম্প ভাঙে মুশফিকের। ৩৯ বলে ৪টি চারে ২৩ রান করেন মুশফিক। প্রথম ইনিংসে অপরাজিত ১৭৫ রান করেছিলেন।
দলীয় ৫৩ রানে মুশফিক ফিরলে ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। শুরুতেই মারমুখী হয়ে ওঠেন। রাজিথার ২৫তম ওভারে তিনটি বাউন্ডারি মারেন। লিটনও দু’টি বাউন্ডারি তুলে নিলে ৩০তম ওভারে বাংলাদেশের স্কোর তিন অঙ্কে পৌঁছায়। এরপর সাকিব-লিটন জুটি ৫০ রান পূর্ণ করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশের অষ্টম ব্যাটার হিসেবে টেস্ট ক্রিকেটে দুই হাজার রান ক্লাবে প্রবেশ করেন লিটন। আর মধ্যাহ্ন বিরতির আগ মুর্হূতে লিড নেয় বাংলাদেশ।
আর প্রথম সেশনের শেষ বলে ফ্লিক করে চার মেরে ৬১ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৭তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন সাকিব। প্রথম সেশনের বিরতির আগে সাকিব দ্রুত অর্ধশতক করলেও হাফ সেঞ্চুরি থেকে ২ রান দূরে ছিলেন লিটন। আর বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৫ উইকেটে ১৪৯ রান। বিরতির থেকে ফেরার পর প্রথম ওভারেই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ লিটন। ১৩তম টেস্ট অর্ধশতকের জন্য ১৩০ বল খেলেন লিটন। তবে পরের ওভরেই লিটনের বিদায় ঘণ্টা বাজান আসিথা। অফ স্টাম্প ও মিডল স্টাম্পের ডেলিভারি সোজা ড্রাইভ করতে গিয়ে বাতাসে ভাসিয়ে দেন লিটন। অনেকটাই নিচের দিকে ভাসছিল বলটি। বল ডেলিভারি দেয়ার পর ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে এক হাত দুর্দান্ত ক্যাচে লিটনকে বিদায় দেন আসিথা। ৩টি চারে ১৩৫ বলে ৫২ রান করেন তিনি। প্রথম ইনিংসে ১৪১ রান করেছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে সাকিব-লিটন ১৬৪ বলে ১০৩ রান যোগ করেন।


লিটনকে হারানোর ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই সাকিবের বিদায় দেখে বাংলাদেশ। আসিথার বাউন্সার পুল করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন সাকিব। গ্লাভসে লেগে উইকেটরক্ষক নিরোশান ডিকবেলার হাতে জমা পড়ে। ৭টি চারে ৭২ বলে ৫৮ রান করেন সাকিব। সপ্তম ব্যাটার হিসেবে ১৬৩ রানে সাকিবকে হারায় বাংলাদেশ। এরপর ৬ রানে শেষ ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে শূন্য করা মোসাদ্দেক এবার ১টি চারে ৯ রান করেন। শিকার হন স্পিনার রমেশ মেন্ডিসের। তাইজুলকে ১ রানে শিকার করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন শ্রীলঙ্কার আসিথা। পাঁচ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিলেন তিনি। শেষ ব্যাটার খালেদ আহমেদকে শূন্য হাতে বিদায় দিয়ে ইনিংসে নিজের ষষ্ঠ উইকেট নেন আসিথা। ৫৬তম ওভারের দ্বিতীয় বলে তাইজুল ও তৃতীয় বলে খালেদকে শিকার করেন তিনি। এতে ১৬৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ফলে জয়ের জন্য মাত্র ২৯ রানের টার্গেট পায় সফরকারীরা। আসিথা ৫১ রানে ৬টি, রাজিথা ৪০ রানে ২টি ও রমেশ ১টি উইকেট নেন।
২৯ রানের সহজ টার্গেটে খেলতে নেমে ৩ ওভারেই জয় তুলে নেয় অতিথিরা। তাইজুলের করা প্রথম ওভারেই ১৬ রান করেন ওপেনার ওশাদা ফার্নান্দো। ওই ওভারে ২টি চার ও ১টি ছক্কা মারেন ওশাদা। সাকিবের করা দ্বিতীয় ওভারে ৭ রান নেয়। আর এবাদতের তৃতীয় ওভার থেকে ৬ রান নিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় শ্রীলঙ্কা। ওশাদা অপরাজিত ২১ ও অধিনায়ক দিমুথ করুনারতেœ অপরাজিত ৭ রান করেন। প্রথম ইনিংসে ৪ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন আসিথা। আর সিরিজ সেরা হন শ্রীলঙ্কার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। দু’টি সেঞ্চুরিতে সিরিজে ৩৪৪ রান করেন ম্যাথুজ।
স্কোর কার্ড (টস-বাংলাদেশ) :
বাংলাদেশ ইনিংস : ৩৬৫ ও ১৬৯ (৫৫.৩ ওভার) (জয় ১৫, তামিম ০, শান্ত ২, মুমিনুল ০, মুশফিক ২৩, লিটন ৫২, সাকিব ৫৮, মোসাদ্দেক ৯, তাইজুল ১, খালেদ ০; আসিথা ৬/৫১, রাজিথা ২/৪০, জয়বিক্রমা ০/৪৭, মেন্ডিস ১/২০)।
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস : ৫০৬ ও ২য় ইনিংস : ২১ (৩ ওভার) (ওশাদা ২১*, করুনারতেœ ৭, তাইজুল ০/১৬)।
ফল : শ্রীলঙ্কা ১০ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা : আসিথা ফার্নান্দো (শ্রীলঙ্কা)।
সিরিজ সেরা : অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ (শ্রীলঙ্কা)।
সিরিজ : দুই ম্যাচের সিরিজ ১-০ ব্যবধানে জিতল শ্রীলঙ্কা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গৌরনদীতে সরকারি সম্পত্তি দখল করে দ্বিতল পাকা ভবন কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কে ছোট বড় অসংখ্য খানাখন্দে ভোগান্তি বামনায় অবৈধ গাড়ির দাপটে গ্রামীণ সড়কের বেহাল দশা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য কাচারি ঘর বিলুপ্তির পথে ভাঙা কালভার্টে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কুড়িগ্রামে মানববন্ধন বরিশালে নয়া দিগন্তের বিভাগীয় প্রতিনিধি সম্মেলন আজ লালমোহনের দালাল বাজার-লর্ড হার্ডিঞ্জ সড়কে সেতু নির্মাণকাজ শুরু দাগনভূঞা প্রবাসী ফোরামের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত প্রবাসীর স্ত্রীর মাথা ফাটিয়ে দেয়ার অভিযোগ এক নারী ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে বালিয়াডাঙ্গীতে বিএনপির আলোচনা সভা

সকল