১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
পশ্চিমাদের জেলেনস্কি

রাশিয়ার সাথে খেলা বন্ধ করে যুদ্ধ শেষ করুন

-

রাশিয়ার সাথে খেলা বন্ধ করে ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার ভাষায়, রাশিয়ার সাথে খেলা বন্ধ করুন এবং ইউক্রেনে দেশটির ‘অর্থহীন যুদ্ধের’ অবসান ঘটাতে মস্কোর ওপর আরো কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করুন।
তিনি আরো বলেছেন, তার দেশ (ইউক্রেন) স্বাধীন থাকবে। তবে প্রশ্ন হচ্ছে ঠিক কতটা মূল্য দেয়ার পর সেটি হবে। গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে হাজার হাজার রুশ সেনা পূর্ব ইউক্রেনের অন্যতম প্রধান দু’টি শহর সেভিয়েরোদোনেতস্ক ও লিসিচানস্ক দখলে নিতে হামলা ব্যাপক জোরদার করেছে। এ পরিস্থিতিতেও মস্কোর বিরুদ্ধে তেল নিষেধাজ্ঞা আরোপে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সম্ভাব্য পদক্ষেপ বেশ ধীরগতির। আর এ কারণেই সম্প্রতি পশ্চিমের সম্পর্কে জেলেনস্কির সমালোচনা বেড়েছে।
বৃহস্পতিবার মধ্য রাতে দেয়া ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, ‘বিপর্যয়কর ঘটনাগুলো এখনো বন্ধ করা যেতে পারে যদি বিশ্ব ইউক্রেনের পরিস্থিতিকে নিজেদের পরিস্থিতি বলে চিন্তা করতে পারে। একই সাথে বৈশ্বিক শক্তিগুলো রাশিয়ার সাথে না খেলে যুদ্ধ শেষ করার জন্য (মস্কোকে) সত্যিই চাপ দেয় তবে এসব বিপর্যয় এড়ানো যেতে পারে।’
প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের) ষষ্ঠ প্যাকেজে একমত হওয়ার জন্য আর কত সপ্তাহ চেষ্টা করবে? তার অভিযোগ, জ্বালানি সরবরাহের বিনিময়ে ইইউর ২৭টি দেশের কাছ থেকে প্রতিদিন এক বিলিয়ন ইউরো করে পাচ্ছে রাশিয়া।
জেলেনস্কির ভাষায়, ‘রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ আক্ষরিক অর্থে জীবন বাঁচানোর মতো বিষয়। তাই দেশটির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া নিয়ে প্রতিদিন বিলম্ব, দুর্বলতা, প্রস্তাবের বিরোধিতা আগ্রাসী এ দেশকে শান্তি দেবে এবং এর অর্থ হচ্ছে আরো ইউক্রেনীয়দের প্রাণ দিতে হবে।’
পূর্ব ইউক্রেনে গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলের দাবি রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের : ইউক্রেনের রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর লিম্যান দখলের দাবি করেছে। শুক্রবার তারা এ দাবির কথা জানায়। রয়টার্স জানিয়েছে, ইউক্রেনও হার মেনে নিয়েছে বলে দৃশ্যমান হচ্ছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে রুশ সেনারা পূর্বাঞ্চলে অভিযান জোরদার করার পর এমন খবর জানা গেল। খবর রয়টার্সের।


লিম্যান একটি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে কেন্দ্র। উত্তর থেকে রুশ সেনারা আক্রমণ জারি রাখায় এটি গুরুত্বপূর্ণ রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। যে তিনটি দিক থেকে ইউক্রেনের শিল্পাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলে আক্রমণ করছে সেগুলোর মধ্যে উত্তর হলো একটি দিক। রুশপন্থী ডনেস্ক পিপল’স রিপাবলিক বিচ্ছিন্নতাবাদীরা শহরটির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা ইউক্রেনের শীর্ষ ধনীর : ইউক্রেনের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি জানিয়েছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলার পরিকল্পনা করছেন তিনি। তার দাবি মারিউপোলে তার মালিকানাধীন স্টিল কারখানায় রুশ বোমাবর্ষণে এক হাজার সাত শ’ থেকে দুই হাজার কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।
রুশ বোমা ও গুলিবর্ষণে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারিউপোলের আজভস্টল স্টিল কারখানা। দক্ষিণাঞ্চলীয় এই বন্দরনগরীর আরো দুই কারখানা ইল্লিচ স্টিল ও আয়রন ওয়ার্কসও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব কারখানার মালিক রিনাত আখমেতভ।
ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় স্টিল উৎপাদক মেতিনভেস্টের মালিক রিনাত আখমেতভ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করব এবং সব ক্ষতি ও হারানো ব্যবসার জন্য যথাযথ ক্ষতিপূরণ দাবি করব।’ আজভস্টল ও ইল্লিচে রুশ হামলায় মেতিনভেস্টের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে জানতে চাইলে আখমেতভ বলেন, রাশিয়ান আগ্রাসনের কারণে প্রতিস্থাপন খরচ ১৭ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার। রাশিয়ার বিরুদ্ধে মামলায় চূড়ান্ত পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।
‘৫০ বছর পুরনো’ ট্যাংক ইউক্রেন পাঠাচ্ছে রাশিয়া : ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধে রাশিয়া প্রতিনিয়তই বাজে পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে প্রচুর ভারী সামরিক যান হারিয়ে চাপে পড়েছে রুশ বাহিনী। এ নিয়ে একাধিক পশ্চিমা প্রতিরক্ষা প্রধান দাবি করছেন, ইউক্রেনে রাশিয়া প্রায় এক হাজারের মতো অত্যাধুনিক ভারী সামরিক যান হারিয়ে ৫০ বছরের পুরনো ‘টি-৬২’ ট্যাংক পাঠাচ্ছে মস্কো। আর এসব ট্যাংককে অনেকটাই অচল বলছেন তারা। খবর ইভনিং স্ট্যান্ডার্ড এর।
টি-৬২ ট্যাংক ‘ডিপ স্টোরেজ’ থেকে ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলে মোতায়েন করা হচ্ছে। যেসব এলাকা নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া রাশিয়া। কিন্তু এসব বয়স্ক ট্যাংক, ট্যাংকবিধ্বংসী অস্ত্রের কাছে অনেকটাই দুর্বল।
ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাশিয়ার হাতে পর্যাপ্ত আধুনিক যান ও সরঞ্জাম প্রস্তুত না থাকায় বাধ্য হয়েই পুরনো ট্যাংক মোতায়েন করছে। তবে যাই হোক না কেন, পুতিনের বাহিনী ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দনবাসের কিছু ভূখণ্ড এরই মধ্যে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সবশেষ গোয়েন্দা খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়া স্থল বাহিনী সেভোরোডানেটস্ক ও লিসচানস্ককে ঘিরে ফেলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে, সম্প্রতি পোপাসনার উত্তর-পশ্চিমে বেশ কয়েকটি গ্রামও দখল নিয়েছে। রাশিয়া সেভোরোডানেটস্কের প্রবেশদ্বারে চাপ অব্যাহত রেখেছে। যদিও নিজের অঞ্চলের একাধিক সংরক্ষিত সেক্টরের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে ইউক্রেনও। আর রাশিয়া দনবাস পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে তা-ও অস্বীকার করেছে কিয়েভ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় ৩ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত পাবনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হতাহত ২২ বিল দখলের চেষ্টা, জেলা ছাত্রলীগ নেতাকে গণপিটুনি ‘শাহাদাতের তামান্নায় উজ্জীবিত হয়ে কাজ করলে বিজয় অনিবার্য’ কারাগারে নারী হাজতিকে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন, প্রধান কারারক্ষীসহ ৩ জনের বদলি প্যারিসে ইরানি কনস্যুলেটে ঢুকে আত্মঘাতী হামলার হুমকিদাতা গ্রেফতার প্রেম যমুনার ঘাটে বেড়াতে যেয়ে গণধর্ষণের শিকার, গ্রেফতার ৫ ‘ব্যাংকিং খাতের লুটপাটের সাথে সরকারের এমপি-মন্ত্রী-সুবিধাবাদী আমলারা জড়িত’ ইরানের সাথে ‘উঁচু দরের জুয়া খেলছে’ ইসরাইল! অসুস্থ নেতাকর্মীদের পাশে সালাম-মজনু গলাচিপায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশুর মৃত্যু

সকল