১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সিনিয়র সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়ে মির্জা ফখরুল

নিবর্তনমূলক সব আইন বাতিল করবে বিএনপি

জাতীয় প্রেস ক্লাবে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর : নয়া দিগন্ত -

বিএনপি আগামীতে ক্ষমতায় গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করবে বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপি আয়োজিত ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি কথা জানান।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের পরিষ্কার ঘোষণা, আমরা সরকার গঠন করলে মুক্ত গণমাধ্যমের অন্তরায় ‘ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট’সহ সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করব। গণমাধ্যমে প্রকাশিত যেকোনো বিষয় সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা সংস্থা প্রেস কাউন্সিলে ফয়সালা না করে কোনোভাবেই যেন আদালতে মামলা দায়ের করতে না পারে সেটা নিশ্চিত করা হবে। গণমাধ্যমকে স্বাবলম্বী করার জন্য বিএনপি বিজ্ঞাপনের সুষম বণ্টনের ব্যবস্থা করবে। পাশাপাশি সুনির্দিষ্ট সংখ্যক প্রকাশনা, প্রচারণা কিংবা টিআরপির ভিত্তিতে গণমাধ্যমগুলোকে আর্থিক প্রণোদনা দেয়ার চিন্তাও বিএনপির রয়েছে। দেশের ব্যবসা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন বিজ্ঞাপন প্রদানের ক্ষেত্রে দেশীয় গণমাধ্যমগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় সেটি নিশ্চিত করার পরিকল্পনাও বিএনপির রয়েছে। ওয়েজ বোর্ড সব গণমাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে এবং শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানীর সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, দিনকালের সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান, যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম, ডিইউজের সাবেক সভাপতি এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কবি আবদুল হাই শিকদার, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সরদার ফরিদ আহমদ, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ ও মুরসালিন নোমানী, সিনিয়র সাংবাদিক শফিক আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে গোটা জাতি বিপন্ন হয়ে পড়েছে, বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এই জাতি বা রাষ্ট্রকে উদ্ধার করতে হলে একটা ইস্পাত দৃঢ় ঐক্য প্রয়োজন। এ দায়িত্ব আমাদের সবার। সাংবাদিকরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, রাজনীতিবিদরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন- এর মধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা যেন দেশে গণতন্ত্রকে ফের ফিরিয়ে নিয়ে আনতে পারি সেই উদ্যোগটা গ্রহণ করা উচিত।
ক্ষমতার পরিবর্তনে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আমরা খুব আশাবাদী। বাংলাদেশের মানুষ কখনো পরাজিত হয়নি। ট্যানেলের শেষ প্রান্তে আলো দেখছি বলেই ফের আমরা উৎসাহিত বা উৎফুল্ল হচ্ছি তাই নয়। আমরা সব সময়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছি, কাজ করে যাচ্ছি। সরকারে যখন ছিলাম তখনও করেছি, সরকারে নেই এখনো গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের বিজয় অবশ্যই অর্জিত হবে। জেগে উঠতে হবে সবাইকে। নিজেকে রক্ষা করার জন্য, সাংবাদিকদের স্বার্থকে রক্ষা করবার জন্য, মানুষকে রক্ষা করার জন্য। সবাইকে আজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে জেগে উঠতে হবে, পরাজিত করতে হবে এই ভয়াবহ দানবীয় ফ্যাসিবাদী শক্তিকে।
মূল প্রবন্ধে ‘রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার’ প্রকাশিত র্যাংকিংয়ে গত এক বছরে বাংলাদেশ ১০ ধাপ পিছিয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে ১৬২তম হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়, এর পেছনে নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশগুলো দায়ী। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, আইসিটি অ্যাক্ট, দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেগুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্লাটফর্মস-২০১২, ওভার দ্য টপ (ওটিটি) কনটেন্টভিত্তিক পরিষেবা প্রদান ও নীতিমালা-২০২১, অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট প্রভৃতির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এমনভাবে চেপে ধরার ব্যবস্থা করা হয়েছে যে তারা শুধুমাত্র সরকারের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। মামলা ও হয়রানির ভয়ে বেশির ভাগ মিডিয়া সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিজ্ঞাপন বণ্টনের বৈষম্য, বেতন বোর্ড বাস্তবায়নে মালিকপক্ষের অনীহা প্রভৃতি কারণে বেশির ভাগ গণমাধ্যমকর্মীকে চরম আর্থিক কষ্টের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। ফলে সৎ ও মেধাবী সাংবাদিকরা ধীরে ধীরে এই পেশার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
এতে আরো বলা হয়, মামলা এবং হয়রানির ভয়ে বেশির ভাগ মিডিয়া সেলফ সেন্সরশিপ আরোপ করছে। এর পাশাপাশি রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারদলীয় সন্ত্রাসীদের দ্বারা সাংবাদিক নির্যাতন। ২০০৯-২০২২ সময়ে ১৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, ১,১৪০ জন সাংবাদিককে তাদের দায়িত্ব পালনের সময় গুরুতর আহত করা হয়েছে, আইসিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে ১৫২ জনের নামে, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা হয়েছে ২১৪ জনের বিরুদ্ধে এবং মোট ১৩৯ জন সাংবাদিককে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়রানিমূলক মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেলে যেতে হয়েছে।
প্রবন্ধে বলা হয়, বাংলাদেশের ইতিহাসে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সবচেয়ে বেশি ক্ষুণœ হয়েছে আওয়ামী লীগ শাসনামলে। বর্তমানে দেশের গণমাধ্যম এক বিপজ্জনক ও দুঃসহ অবস্থায় রয়েছে। গণমাধ্যমকে কার্যত বেড়ি পরিয়ে রাখা হয়েছে। বিরুদ্ধমতের মিডিয়া হিসেবে পরিচিত দৈনিক আমার দেশ, চ্যানেল ওয়ান, দিগন্ত টেলিভিশন, ইসলামিক টেলিভিশনসহ বেশ কিছু মিডিয়াকে আগেই বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কোনো সাংবাদিকের নিজের ইচ্ছানুযায়ী কোনো ভালো রিপোর্ট করার সুযোগ নেই। প্রতিটি সংবাদ প্রকাশের আগে যাচাই করা হয় সরকার এটাকে কিভাবে নেবে বা দেখবে? গণমাধ্যমের সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানকে একেবারেই ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।
প্রবন্ধে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ মাত্র এক বছরের ব্যবধানে মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে ১০ ধাপ পিছিয়ে গেছে। এর কারণ সম্পর্কে গণমাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গই বলেছেন, এর পেছনে সবচেয়ে নেতিবাচক ভূমিকা রেখেছে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন। এ আইন হেনস্তা, দমন ও গ্রেফতারে ব্যবহৃত হচ্ছে। আইনটির অপপ্রয়োগ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। শুধু সাংবাদিকই নয়, এটি এমন ভয়ঙ্কর আইন, যে কোনো নাগরিককে এ আইনে রাষ্ট্র বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চাইলে ‘দেশদ্রোহী’ বানিয়ে দিতে পারে। এ আইনে ২০টি ধারায় সাজার বিধান করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৪টি ধারাই জামিন অযোগ্য।
বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, আমি প্রায় ৫০ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছি, ৪০ বছর ধরে সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দিচ্ছি। এই সরকার আমাকে প্রথমে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়ে গ্রেফতার করে। পরে দেখে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সেটি মিথ্যা, তখন আমার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনে। এটিও আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। আদালতে প্রমাণিত হয়েছে আমি কোনো রাষ্ট্রদ্রোহের কাজ করিনি। আমাকে সর্বোচ্চ আদালত জামিন দিলেও শুধুমাত্র সরকারের দুর্নীতি ও অপশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কারণেই আমাকে দীর্ঘ ১৭ মাস কারাভোগ করতে হয়েছে। অথচ এই সরকার বলছে, তারা গণমাধ্যম আইনের অপব্যবহার করছে না। আমি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাই, আমাকে কোন অপরাধে দীর্ঘ ১৭ মাস আটক রাখা হলো। আমি জানি এ নিয়ে তাদের কোনো জবাব নেই। তিনি বলেন, এই সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে ব্যবহার করছে। আমরা বিএনপির কাছে আহবান জানাবো, ক্ষমতায় গেলে আপনারা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেবেন।
প্রস্তাবিত গণমাধ্যম আইনকে প্রত্যাখ্যান করে সিনিয়র এ সাংবাদিক নেতা বলেন, এই সরকারের মন্ত্রীরা ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন আইনটি সংশোধন করা হবে। অন্যদিকে আইনমন্ত্রী বলছেন, সংশোধন হবে না। মূলত এরা গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতেই এসব করছেন। যাতে করে যেনতেনভাবে তারা আবারো ক্ষমতায় থাকতে পারে। দেশের মুক্ত গণমাধ্যম, সাংবাদিকদের অধিকার বাস্তবায়ন ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সবাইকে রাজপথে থাকার আহ্বান জানান।
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী বলেন, এই সরকার মুখে যেটি বলে কাজে সেটি করে না। সম্প্রতি সিলেটে ত্রাণ দিতে গিয়ে তারা পানিবন্দী মানুষের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ করেছে। অপরাধ, ত্রাণের আশায় অসহায় মানুষগুলো এসেছিল। তিনি বলেন, সময় এসেছে ধাওয়া দেয়ার। সবাইকে ধাওয়া দেয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
সোহরাব হাসান বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে একটা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে কিছু অঙ্গীকার করা হয়েছে। তাদের অঙ্গীকারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে পারি, আশ্বস্ত হওয়ারও চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু আমাদের অতীত আশ্বস্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নয়, বর্তমান তো নয়ই। স্বাধীনতার পর থেকে কোনো সরকারই সংবাদপত্র বা গণমাধ্যম বান্ধব ছিল না, এখনো নেই।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকতার অবস্থা খুবই মারাত্মক। এর কারণটা হচ্ছে ‘উইপেন অব ল’ অর্থাৎ আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
প্রথম আলোর সোহরাব হোসেনের দেয়া বক্তব্য খণ্ডন করে বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সোহরাব ভাই সঠিক তথ্য দেননি। সাংবাদিক জহুর হোসেন কারাগারে যাননি। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন। একুশে টিভি বিএনপি সরকার বন্ধ করেনি। এটি টেরিস্ট্রিয়াল সম্প্রচারের ইস্যুতে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বন্ধ হয়েছে। এখন রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সাংবাদিক নির্যাতন চলছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের আমলে সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়েরসহ সারা দেশে সাংবাদিকদের নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরেন বিএফইউজের এই শীর্ষনেতা।
কামাল উদ্দিন সবুজ বলেন, দেশ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। এই সরকার দেশের সব অর্জনকে শেষ করে দিয়েছে। দেশে গণতন্ত্র ও গণমাধ্যম এখন খাঁচায় বন্দী পাখির মতো। বাকস্বাধীনতা নেই।
এম এ আজিজ বলেন, যুগে যুগে যারাই ফ্যাসিস্ট তকমা অর্জন করেছে, তারা প্রথমেই গণমাধ্যমকে টার্গেট করেছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারও তাই করছে।
দোষারোপের রাজনীতি থেকে সরে এসে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে কবি আবদুল হাই শিকদার বলেন, দানব সরকারকে সরাতে আসুন ঐক্যবদ্ধ হই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হলেই দেশের গণমাধ্যম মুক্ত হবে।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, গণমাধ্যম আজ মুমূর্ষু অবস্থায় রয়েছে। সত্য বলা ও সত্য লেখার কারণেই অনেকেই আজ দেশান্তরিত। অনেককেই কারাভোগসহ হামলা-মামলার শিকার হতে হয়েছে। বন্ধ হয়েছে বেশ কিছু গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান। এভাবে আর চলতে দেযা যাবে না। সময় এসেছে প্রতিরোধ গড়ে তোলার।
ইলিয়াস খান বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার মাধ্যমে দেশে একটি ভয়ঙ্কর সংস্কৃতি গড়ে তোলা হয়েছে। একের পর এক গণমাধ্যমবিরোধী আইন করা হচ্ছে। কী বলবেন, কী লিখবেন সেটি আজ বলে দেয়া হচ্ছে। এই সরকার প্রবীণ সাংবাদিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদকে টেনেহিঁচড়ে অফিস থেকে বের করেছে। সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপর নির্যাতন হয়েছে। সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে মিথ্যা অভিযোগ ১৭ মাস কারান্তরীণ করে রেখেছে। এই সরকারের রোষানলে পড়ে অনেক সাংবাদিক আজ বেকার। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এলাহী নেওয়াজ খান সাজু বলেন, স্বাধীনতার পর গণমাধ্যমের ওপর যে আঘাত এসেছিল তার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে এই সরকারের আমলেও।
সৈয়দ আবদাল আহমেদ বলেন, এই সরকারের রোষানল থেকে বৈধ সমালোচনাকারী কেউই রক্ষা পায়নি।
শহিদুল ইসলাম বলেন, এই সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ অন্যান্য কালো আইনের ব্যবহার করছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আগে গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে।
মুহাম্মদ বাকের হোসাইন বলেন, আওয়ামী লীগের কাছে কোনো কিছু আশা করে লাভ হবে না। এদের সরাতে পারলেই কেবল সাংবাদিকরা নিরাপদ থাকবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement