২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সিরিজ জয়ে চোখ বাংলাদেশের

-

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথমবার সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে আজ মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সকাল ১০টায় মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে লঙ্কানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট জিতে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেতে মরিয়া বাংলাদেশ। সফরকারী দলের কোচ অবশ্য বলছেন কঠিন সিরিজ হবে। জিততে মরিয়া উভয়দলের চাওয়া পূরণ হতে আবহাওয়ার মতিগতি অনুযায়ী কয়েক দিন তো অপেক্ষা করতেই হবে।
এখন পর্যন্ত শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২৩টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। যেকোনো দেশের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ টেস্ট। ২৩ টেস্টের মধ্যে একটিতে জিতেছে টাইগাররা। ১৭টিতে হেরেছে ও পাঁচটিতে ড্র হয়েছে। ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে প্রথম ১২ ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। তবে ২০১৩ সালের মার্চ থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। দুই দলের সর্বশেষ ১০ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ হারে পাঁচ ম্যাচ। একমাত্র জয়টি আসে ২০১৭ সালে বাংলাদেশ দলের শততম টেস্টে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। আর চারটিতে শ্রীলঙ্কাকে ড্র করতে বাধ্য করেছিল টাইগাররা।
মিরপুরের ভেনুতে এক পেসার নিয়ে খেলার নজির রয়েছে বাংলাদেশের। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অবিস্মরণীয় জয়ের ম্যাচে এক পেসার নিয়ে খেলেছিল টাইগাররা। দুই পরাশক্তির বিপক্ষে জয় পেতে স্পিন উইকেট বানিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু উপমহাদেশের দলগুলোর বিপক্ষে এমন কৌশল কাজে লাগেনি টাইগারদের। ২০১৮ সালে এই ভেনুতে টেস্ট জিতেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে এখানে সর্বশেষ টেস্টে পাকিস্তান ইনিংস ব্যবধানে হারিয়েছিল টাইগারদের। এখানে টেস্ট জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজও।
মিরপুর বাংলাদেশের জন্য পর্যাপ্ত নয় বলেই ইঙ্গিত রয়েছে। তার পরও এখানে স্পিনই মুখ্য হয়ে উঠবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মুমিনুল। তিনি এটাও জানেন এই উইকেটের সুবিধা নিতে শ্রীলঙ্কারও ভালো মানের স্পিনার রয়েছে। তবে চট্টগ্রামের টেস্টে লক্ষ করা গেছে, লঙ্কানদের চেয়ে বড় ব্যবধানেই এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ স্পিনাররা। যা বাংলাদেশকে মানসিকভাবে এগিয়ে রাখবে।
জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করেও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে শেষ পর্যন্ত ড্র নিয়েই সন্তষ্ট থাকতে হয়েছে টাইগারদের। প্রতিপক্ষকে ৩৯৭ রানে আটকে দিয়ে জবাবে প্রথম ইনিংসে ৪৬৫ রান তুলেছিল স্বাগতিকরা। এতে প্রথম ইনিংস থেকে ৬৮ রানের লিড পায়। মন্থর পিচে টেস্টের পঞ্চম দিনে প্রথম সেশনে বাংলাদেশ প্রতিপক্ষের গুরুত্বপূর্ণ দুই উইকেট শিকার করলে ম্যাচে কিছুটা গতি পায়। বিশেষভাবে বাংলাদেশের বাঁ হাতি স্পিনার তাইজুলকে খেলতে সমস্যায় পড়েছিল শ্রীলঙ্কার ব্যাটাররা। দ্বিতীয় সেশনের মাঝামাঝিতে ১৬১ রানে ছয় উইকেট হারায়। এমন অবস্থায় ৯৩ রানে এগিয়ে ছিল সফরকারীরা। এরপর দিনেশ চান্ডিমাল ৩৯ ও নিরোশান ডিকবেলা ৬১ রানের দু’টি অনবদ্য ইনিংস খেলে দলকে রক্ষা করেন।
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক জানিয়েছিলেন, জয় থেকে মাত্র চার উইকেট দূরে ছিলেন তারা। ম্যাচের চিত্র অনুযায়ী যা ছিল বাংলাদেশের জন্য হতাশার। তবে দ্বিতীয় টেস্ট জিতে, হতাশাকে আনন্দে পরিণত করতে দলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এই অধিনায়ক। ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মুমিনুল বলেন, ‘মিরপুরের উইকেটে সবসময় ফলাফল হয়। তাই এই ভেনু থেকে ইতিবাচক ফলাফলের দিকে তাকিয়ে আমরা।’
আঙুলের ইনজুরিতে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। তার জায়গায় খেলতে প্রস্তুত বল হাতে অফ স্পিন করতে পারা ও ব্যাট হাতে ভালো করার সামর্থ্য রাখা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট নেন নাঈম। তার না থাকাটা, দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের লক্ষ্যে বড় ধাক্কা বাংলাদেশের। চোটের কারণে মেহেদী হাসান মিরাজ ছিটকে পড়ায় টেস্ট দলে সুযোগ পেয়েছিলেন নাঈম হাসান। যদিও মোসাদ্দেকের মতো অলরাউন্ডার মিরাজ বা নাঈমের মতো স্পিন বিভাগ সামলাতে পারবেন না, তা দ্বিধাহীনভাবেই বলা যাচ্ছে। তবে মিরাজ বা নাঈমের চেয়ে ব্যাটিং ইউনিটকে বেশি দৃঢ়তা এনে দিতে পারবেন। অধিনায়ক বলেন, ‘বোলিংয়ে মোসাদ্দেককে ‘বুদ্ধিমত্তার সাথে’ ব্যবহার করতে হবে। তাইজুল গত এক-দুই বছর ধরে খুব ভালো বল করছে। সাকিব ভাই তো গত ম্যাচে খুব ভালো করেছেন। মোসাদ্দেক খেললে ওর ভূমিকা হয়তো একটু ভিন্ন হবে।’
ইনজুরির কারণে বাঁ হাতি পেসার শরিফুল ইসলামকেও এ ম্যাচে পাবে না বাংলাদেশ। বাংলাদেশের একমাত্র ইনিংসে আঘাত পাওয়ার পর শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় ইনিংসে বল করতে পারেননি তিনি। তার পরিবর্তে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবাদত হোসেনের। তবে দল তাকে একাদশে রাখে কি না, সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশ দল : মুমিনুল হক (অধিনায়ক), তামিম ইকবাল, মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহীম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, ইয়াসির আলী চৌধুরী, তাইজুল ইসলাম, এবাদত হোসেন চৌধুরী, সৈয়দ খালেদ আহমেদ, কাজী নুরুল হাসান সোহান, রেজাউর রহমান রাজা, শহিদুল ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
শ্রীলঙ্কা দল : দিমুথ করুনারতেœ (অধিনায়ক), কামিল মিশারা, ওশাদা ফার্নান্দো, অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, কামিন্দু মেন্ডিস, নিরোশান ডিকওয়েলা, দীনেশ চান্দিমাল, রমেশ মেন্ডিস, চামিকা করুনারতেœ, সুনিন্দা লক্ষণ, কাসুন রাজিথা, বিশ্ব ফার্নান্দো, আসিথা ফার্নান্দো, দিলশান মাদুশঙ্কা, প্রবীণ জয়াবিক্রমা ও লাসিথ এম্বুলদেনিয়া।


আরো সংবাদ



premium cement