ট্রেনিং সেমিনার ও ওয়ার্কশপে মুদ্রা ছাড়করণে নিষেধাজ্ঞা দিলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক
- বিশেষ সংবাদদাতা
- ২৩ মে ২০২২, ০০:০৯
চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রাব্যয়ে সতর্ক অবস্থান নিয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এরই অংশ হিসেবে গতকাল রোববার ট্রেনিং, সেমিনার ও ওয়ার্কশপ খাতে মুদ্রা ছাড়করণে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা গতকাল ব্যাংকগুলোকে অবহিত করা হয়েছে। একই সাথে ব্যাংকগুলোতে তদারকি জোরদার করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থিরতার পেছনে কোনো ব্যাংকের কারসাজি রয়েছে কি না মাঠপর্যায়ে তা তদারকি জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, গেল সপ্তাহে খোলাবাজারে ডলারের মূল্য যেমন উলম্ফন ছিল, তেমনি ছিল নগদ ডলারের ক্ষেত্রে। ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রা টাকার বড় ধরনের দর হারায়। একপর্যায়ে খোলা বাজারে প্রতি ডলার পেতে ১০২ টাকা এবং ব্যাংক থেকে নগদ ডলার পেতে সর্বোচ্চ ৯৮ টাকা উঠে যায়। এর পর থেকেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক অবস্থান নেয়। ব্যাংকগুলো কৃত্রিমভাবে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার অস্থির করে তুলছে কি না তা তদারকি জোরদার করা হয়। প্রায় অর্ধডজন ব্যাংকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শকদের পাঠানো হয়। এর প্রভাবে ডলারের বাজারের অস্থিরতা কমতে শুরু করেছে। এরপরেও বাস্তবতার নিরীখে সরবরাহ ও চাহিদার মধ্যে ব্যবধানের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়ে কঠোরতা আরোপ করেছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এ বিষয়ে গতকাল ব্যাংকগুলোর জন্য জারি করা এক সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, ট্রেনিং, সেমিনার ও ওয়ার্কশপ খাতে বৈদেশিক মুদ্রা আপাতত ছাড় করা যাবে না। সরকারি পরিপত্রের আলোকে এ বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আর এ নিষেধাজ্ঞা দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তাদের জন্য প্রযোজ্য হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
জানা গেছে, এত দিন দেশের স্বায়ত্তশাসিত/আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ব্যাংকিং প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অনুষদ সদস্য, বাংলাদেশে নিবন্ধিত ও কর্মরত কোম্পানি, ফার্ম, ইনস্টিটিউট, এনজিও এর কর্মকর্তাদের পক্ষে বিদেশে প্রশিক্ষণ, সেমিনার ও ওয়ার্কশপে অংশগ্রহণের জন্য রেজিস্ট্রেশন/অংশগ্রহণ ফি বাবদ বৈদেশিক মুদ্রা ব্যাংকগুলো ছাড় করতে পারে। সরকারি পরিপত্রের আলোকে এখন থেকে ট্রেনিং, সেমিনার ও ওয়ার্কশপ খাতে ফি পাঠানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান।
এ দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের অপর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ব্যাংকগুলোর তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে যেসব ব্যাংক বিধিবহির্ভূতভাবে লেনদেন করেছে, তাদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা হয়েছে। তাদের জবাব সন্তোষজনক না হলে ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ দিকে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার স্থিতিশীল রাখতে সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোর কাছে পর্যাপ্ত ডলার সরবরাহের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। প্রসঙ্গত, ডলারের সরবরাহ ও জোগানের মধ্যে বিস্তর ফারক থাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই ব্যাংকগুলো ডলারের সঙ্কটে ভুগছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিনিয়তই সঙ্কটে পড়া ব্যাংকগুলোকে ডলার সরবরাহ করে আসছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এ সঙ্কট আরো বেড়ে যায়। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে গতকাল পর্যন্ত পাঁচ বিলিয়ন ডলারের ওপরে সরবরাহ করেছে ব্যাংকগুলোকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে সামনে এ সহায়তা অব্যাহত রাখা হবে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা